নয়া সংসদ ভবনে একবিংশ শতাব্দীর ভারতের উচ্চাকাঙ্খা বাস্তবায়িত হবে। নতুন এই সংসদ ভবন ‘আত্মনির্ভর ভারত’ তৈরির সাক্ষী থাকবে। বৃহস্পতিবার নতুন সংসদ ভবনের শিলান্যাস ও ভূমিপূজা অনুষ্ঠানের পর এই মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এদিন দুপুরে গণতন্ত্রের নতুন মন্দির, নতুন সংসদ ভবনের শিলান্যাস ও ভূমিপূজা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পরে বক্তব্য রাখার সময় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “আজ একটি ঐতিহাসিক দিন, নতুন সংসদ ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হল। আমরা ভারতের প্রতিটি নাগরিক একত্রে সংসদের নতুন ভবনের নির্মাণ করব। ১৩০ কোটি ভারতবাসীর কাছে আজ গর্বের দিন। নয়া সংসদ ভবন আসলে নতুন ও পুরাতনের সহাবস্থান। সময় ও প্রয়োজন অনুযায়ী পরিবর্তন আনার একটি প্রচেষ্টা।” প্রধানমন্ত্রী বলেন, “একজন সাংসদ হিসেবে ২০১৪ সালে প্রথমবার সংসদে প্রবেশের সৌভাগ্য হয়েছিল আমার, সেই দিন কখনও ভুলতে পারব না। গণতন্ত্রের মন্দিরে প্রবেশের প্রাক্কালে, মাথা নত করে প্রণাম করেছিলাম গণতন্ত্রের মন্দিরকে।”নয়া সংসদ ভবন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পুরাতন সংসদ ভবন যদি স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ের দেশকে দিশা দেখায়, থাকলে নতুন সংসদ ভবন আত্মনিৰ্ভর ভারত তৈরির সাক্ষী থাকবে। স্বাধীনতার পর দেশকে নতুন দিশা দেখিয়েছে পুরাতন সংসদ ভবন, নতুন সংসদ ভবন আত্মনির্ভর ভারত তৈরির সাক্ষী থাকবে। পুরাতন ভবনে, দেশের প্রয়োজনীয়তা পূরণের কাজ করা হয়েছে। নতুন ভবনে, একবিংশ শতাব্দীর ভারতের উচ্চাকাঙ্খা বাস্তবায়িত হবে।” প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “ভারতে গণতন্ত্র একটি সংস্কৃতি। গণতন্ত্র জীবনমূল্য, জীবনাদর্শ, ভারতবাসীর কাছে জীবনের আত্মা।”বৃহস্পতিবার দুপুর একটায় নতুন সংসদ ভবনের শিলান্যাস ও ভূমিপূজার মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। রীতি মেনে, মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে নতুন সংসদ ভবনের শিলান্যাস ও ভূমিপূজা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ, লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা, টাটা ট্রাস্টের চেয়ারম্যান রতন টাটা, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী, রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ নারায়ণ সিং প্রমুখ। এছাড়াও বিভিন্ন ধর্মের আধ্যাত্মিক ধর্মগুরু উপস্থিত ছিলেন। নতুন সংসদ ভবন প্রকল্পের জন্য কন্ট্রাক্ট দেওয়া হয়েছে টাটা প্রোজেক্টস লিমিটেডকে। ২০২২ সালে স্বাধীনতার ৭৫ তম বর্ষে খুলে যেতে পারে নতুন সংসদ ভবনের দরজা। নতুন সংসদ ভবন তৈরি হয়ে যাওয়ার পর, প্রায় ৫৬০ ফুট ব্যাসের বৃত্তাকার সংসদ ভবন থেকে যাবে পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে। তার পাশেই নতুন ত্রিভুজাকৃতি সংসদ ভবন তৈরি হবে প্রায় ৬৪,৫০০ বর্গমিটার জায়গার উপরে। নতুন সংসদ ভবনে, লোকসভায় ৮৮৮ জনের বসার ব্যবস্থা হবে। রাজ্যসভায় ৩৮৪ জন বসতে পারবেন। এখন লোকসভায় ৫৪৩ জন ও ও রাজ্যসভায় ২৪৫ জন সাংসদ রয়েছেন। জনসংখ্যার অনুপাতে ভবিষ্যতে সাংসদ সংখ্যাও বাড়াতে হবে বলে এই ব্যবস্থা। নতুন ভবনে কনস্টিটিউশন হল থাকবে।
2020-12-10