উত্তরকন্যা অভিযানে গিয়ে পুলিশের লাঠির আঘাতে তাঁদের এক কর্মীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ বিজেপির। পুলিশের লাঠির আঘাতে আহত হওয়ার পর উলেন রায় (৫০) নামে ওই বিজেপি কর্মীকে নিয়ে যাওয়া হয় শিলিগুড়ির একটা নার্সিংহোমে। পরে সেখানেই তিনি মারা যান বলে দাবি করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
গজলডোবা এলাকার মিলনপল্লীর বাসিন্দা ছিলেন উলেন রায়। বিজেপির রাজ্য সম্পাদক দীপেন প্রামাণিক অভিযোগ করেন উত্তরকন্যার দিকে এগোনোর সময় বেধড়ক লাঠিচার্জ করে পুলিশ। লাঠির আঘাতে তাঁদের বেশ কয়েকজন ঘায়েল হন। এঁদের মধ্যে মহিলা কর্মীরাও রয়েছেন। গুরুতর জখম উলেন রায়কে নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়ার পর সেখানে মারা যান তিনি।
জানা গেছে, মিছিল আটকাতে একাধিক ব্যারিকেড গড়ে পুলিশ। দফায় দফায় উত্তপ্ত হয় পরিস্থিতি। এর পরেই ফুলবাড়ি এলাকায় জলকামান চালায় পুলিশ। চালায় কাঁদানে গ্যাসও। এর পরেই শুরু হয় লাঠি-পাথর। তখনই কোনও ভাবে আঘাত লাগে উলেন বাবুর। এই ঘটনায় কৈলাস বিজয়বর্গীয় মন্তব্য করেন, বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা উচিত। দিলীপ ঘোষের অভিযোগ, খুনের রাজনীতি করছে তৃণমূল কংগ্রেস।
দিলীপ ঘোষ বলেন, “আমাদের কর্মী উলেন রায়ের মাথায় লাঠির আঘাত লেগেছিল। আঘাত লেগেছিল তাঁর শরীরের অন্য জায়গাতেও। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। পুলিশ একটা গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে রুখতে এত আক্রমণাত্মক হয়ে যাচ্ছে! আরও অনেকে আহত হয়েছেন। অনেকে রাস্তায়, কেউ হাসপাতালে। আগের সরকারও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে গুলি চালিয়েছিল। তারা বিদায় হয়েছে। এই সরকার আবারও করছে এমন।”
এই ঘটনায় পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “বিজেপি কি দাবি করেছে সেটা বলতে পারব না। তবে ফুলবাড়ি এলাকায় যা হয়েছে তা নিন্দনীয়। বাইরে থেকে সমাজবিরোধীদের এনে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নামে বেআইনি সমাবেশ করেছে বিজেপি। গুন্ডামি করেছে। আমরা এর তীবের নিন্দা করি। আমরা শান্তিপূর্ণ ভাষায় জবাব দেব। সমস্ত ফুটেজ মানুষের কাছে আছে।”
গৌতমবাবু আরও জানান, কোনও বিজেপি কর্মীর মৃত্যু হয়েছে বলে খবর নেই তাঁর কাছে। বহু পুলিশ ও সাধারণ মানুষ বরং আহত হয়েছেন। তিনি বলেন, “উত্তরকন্যা হল উত্তরবঙ্গের মানুষের আশা আকাঙ্খার প্রতীক। বিজেপি আজ যে গুন্ডামি করেছে মানুষ তার জবাব দেবে। যেভাবে বিজেপি কর্মীরা অসংযত আচরণ করেছে, আন্দোলনের নামে আক্রমণ চালিয়েছে, তা অতি নিন্দনীয়। সবচেয়ে বড় কথা, বিজেপির নেতৃত্বের সামনে এটা হয়েছে।”
তিনবাত্তি মোড়ে আরও একটি মিছিলের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়। তাঁর গাড়িও ভাঙা হয় বলে অভিযোগ। মিছিলকারীরাও ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যায়। সেখানেও রণক্ষেত্র হয় পরিস্থিতি।