কেন্দ্রের কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে দেশের প্রায় ৫০০ কৃষক সংগঠন। তাঁদের আন্দোলনের জেরে দিল্লি কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে গিয়েছে। এবার আরও বড় আন্দোলনের রাস্তায় যাচ্ছেন তাঁরা। আগামী মঙ্গলবার, ৮ ডিসেম্বর সারা ভারত বন্ধের ডাক দিয়েছেন তাঁরা। সেদিন দিল্লিগামী সব রাস্তা অবরোধ করারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা। এমনকি দেশের সব টোল গেটে গিয়ে সেদিন সরকারকে টোল নিতে তাঁরা দেবেন না, এমনটাই হুঁশিয়ারি দিয়েছে কৃষক সংগঠনগুলি।
এদিন এক কৃষক সংগঠনের নেতা হরিন্দর সিং লাখোয়াল সংবাদমাধ্যমকে জানান, “আগামী মঙ্গলবার আমরা ভারত বন্ধের ডাক দিয়েছি। দিল্লিগামী সব রাস্তা সেদিন বন্ধ করে দেওয়া হবে। এছাড়া দেশের সব টোল গেট অবরুদ্ধ করব আমরা। সেদিন সরকারকে কোথাও টোল নিতে আমরা দেব না। এই আন্দোলনের সঙ্গে আরও অনেক মানুষ যোগ দেবেন।”
এই প্রসঙ্গে পাঞ্জাবের জামহুরি কিষাণ সভার প্রধান সতনাম সিং আজলা জানিয়েছেন, “আমরা দেখছি সরকার আমাদের কিছু দাবি যেমন ন্যূনতম সহায়ক মূল্য, বিদ্যুৎ ও খড়কুটো পোড়ানোর জন্য জরিমানার দাবি মেনে নিয়েছে। কিন্তু যতদিন না তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহার হচ্ছে ততদিন আমাদের আন্দোলন চলবে।”
গত বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় সরকার ও কৃষক সংগঠনগুলির মধ্যে চতুর্থবারের জন্য বৈঠক হয়। কিন্তু সাত ঘণ্টার বৈঠকের পরেও কোনও সমাধান পাওয়া যায়নি। তারপরেই কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর বলেন, “সাত ঘণ্টা ধরে বৈঠক হয়েছে। কৃষকরা যে দাবি করেছেন তা মন দিয়ে শোনা হয়েছে। ৫ তারিখ ফের আমরা বৈঠকে বসব।”
অল ইন্ডিয়া কিষাণ সংঘর্ষ কো-অর্ডিনেশন কমিটির এক নেত্রী কবিতা কুরুগান্টি জানিয়েছেন, “সরকার কৃষি আইনে কিছু সংশোধনীর প্রস্তাব দিয়েছে। কিন্তু কৃষক সংগঠনগুলি চায় এই আইন প্রত্যাহার করা হোক। যতদিন না তা হচ্ছে, ততদিন আন্দোলন চলবে।”
গত সপ্তাহ থেকেই শুরু হয়েছে কৃষক আন্দোলন। পাঞ্জাব ও হরিয়ানা থেকে দিল্লি আসার পথে বারবার বাধা পেতে হয়েছে কৃষকদের। অনেক জায়গায় ব্যারিকেড করে আটকানো হয়েছে তাঁদের। কোথাও লাঠিচার্জ, কোথাও জলকামানের সামনে পড়তে হয়েছে তাঁদের। কিন্তু তাতেও থামেনি মিছিল। ট্রাকে করে, পায়ে হেঁটে কয়েক লাখ কৃষক জড়ো হয়েছেন দিল্লি সীমান্তে। সেখানেই অবস্থান করছেন তাঁরা।
কৃষকদের দাবিদাওয়া নিয়ে এর মধ্যেই কয়েকবার বৈঠক হয়েছে কেন্দ্রের সঙ্গে। তাঁদের দাবি, কিছুদিন আগে কেন্দ্রের পাশ করা তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহার করতে হবে। যতদিন না সেটা হচ্ছে ততদিন নিজেদের আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তাঁরা। কেন্দ্রের কোনও প্রস্তাবেই সম্মত হচ্ছেন না তাঁরা। ইতিমধ্যেই এই আন্দোলনে কংগ্রেস, তৃণমূল, বাম দলগুলির সমর্থন পেয়েছে তারা। আর এবার আরও বৃহত্তর আন্দোলনের জন্য ভারত বন্ধের ডাক দিলেন কৃষকরা।