ভারতের কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠকে ভ্যাকসিন প্রসঙ্গে কেন্দ্রের অবস্থান স্পষ্ট করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বললেন, খুব তাড়াতাড়ি ভারতে কোভিড ভ্যাকসিন চলে আসবে। প্রথমে কাদের এই ভ্যাকসিন দেওয়া হবে সেই নিয়েও কেন্দ্রের রূপরেখা তৈরি হয়ে গিয়েছে। এই মুহূর্তে ভ্যাকসিনের দাম নিয়ে রাজ্যগুলির সঙ্গে কেন্দ্রের আলোচনা চলছে বলেই জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন তৈরি করার ক্ষেত্রে সাফল্যের বিষয়ে আমাদের বিজ্ঞানীরা আশাবাদী। খুব শিগগির ভ্যাকসিন চলে আসবে। গোটা দুনিয়া সবথেকে কম দামের ও সবথেকে সুরক্ষিত ভ্যাকসিনের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। তাই ওরা ভারতের দিকে তাকিয়ে। করোনা যোদ্ধা, বয়স্ক মানুষ এবং যাঁরা কঠিন অসুখে ভুগছেন তাঁদের সবার আগে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।”
ভারতের করোনা পরিস্থিতি ও ভ্যাকসিন নিয়ে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, “এই মুহূর্তে ভ্যাকসিনের দাম নিয়ে সব রাজ্যের সঙ্গে কথা বলছে কেন্দ্র। কারণ দেশবাসীর স্বাস্থ্য সরকারের কাছে সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।”
গত সপ্তাহে ভারতের তিনটি ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক সংস্থায় যান মোদী। সেখানে গিয়ে ভ্যাকসিন তৈরির প্রক্রিয়া ও তা কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছে তা খতিয়ে দেখেন তিনি। সেই বিষয়ে এদিন সর্বদলীয় বৈঠক থেকেই দেশবাসীকে আশ্বস্ত করেন মোদী। তিনি বলেন, “ভ্যাকসিন বন্টনের দায়িত্ব বিশেষজ্ঞ কমিটির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়া হবে। বেশি সংখ্যায় যাতে ভ্যাকসিন তৈরি করা যায় সেই সুবিধা ভারতে রয়েছে। সত্যি কথা বলতে আমাদের প্রস্তুতি অনেক দেশের থেকে ভাল।”
এদিনের বৈঠকে দেশের প্রায় ১২টি রাজনৈতিক দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। কংগ্রেসের তরফে গুলাম নবি আজাদ, তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, এনসিপির তরফে শরদ পাওয়ার ছিলেন বৈঠকে। লোকসভায় বিরোধী দলনেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরীও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ছাড়াও এদিনের বৈঠকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডক্টর হর্ষ বর্ধন উপস্থিত ছিলেন। গত দু’সপ্তাহে ভ্যাকসিন তৈরি ও বন্টন নিয়ে অন্তত চারটি বৈঠক করেছে প্রধানমন্ত্রী।
এই মুহূর্তে বিশ্বে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যায় ভারত দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। তবে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ভারতে সংক্রমণের ছবিটা অনেকটাই ভাল। গত কয়েক দিন ধরে ৪০ হাজারের নীচে রয়েছে দৈনিক সংক্রমণ। দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যাও ৫০০-র আশেপাশেই থাকছে। সেইসঙ্গে দৈনিক সুস্থতার সংখ্যাও বাড়ছে। ফলে কমছে অ্যাকটিভ কোভিড রোগীর সংখ্যা। এই পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞরা অপেক্ষা করছেন ভ্যাকসিনের। জোর কদমে চলছে তার প্রস্তুতি। সেই বিষয়েই এদিন বৈঠকে অন্য রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে আলোচনা সারলেন মোদী।