দেশের সব জেল, সিবিআই-এনআইএ-ইডির জিজ্ঞাসাবাদ কক্ষে সিসিটিভি বাধ্যতামূলক: সুপ্রিম কোর্টের

পুলিশ লকআপে কী ঘটনা ঘটছে তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ থাকবে। জেলবন্দি আসামীর প্রতিটি পদক্ষেপের দিকেও থাকবে সতর্ক নজর। জেশের সমস্ত জেল-হাজত, জেরা রুমে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর নির্দেশ দিল শীর্ষ আদালত। এই সিসিটিভিতে থাকতে হবে নাইট ভিশনের প্রযুক্তি। পাশাপাশি, অডিও রেকর্ডিংসেও সুবিধাও থাকতে হবে। জেল শুধু নয়, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা (সিবিআই), জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ), এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি), নারকোটিক্স কন্ট্রোল বুরো (এনসিবি)-সহ দেশের সমস্ত তদন্তকারী সংস্থার ক্ষেত্রেও এই রায় প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, দেশের প্রতিটি নাগরিকের মৌলিক অধিকার রক্ষার জন্যই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে আগামী ৬ সপ্তাহের মধ্যে এই নির্দেশ বলবৎ করতে বলা হয়েছে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ২৭ জানুয়ারি।

কী কী নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট?

দেশের সমস্ত থানার হাজত ও জেরা করার জন্য নির্দিষ্ট ঘরে থাকতে হবে সিসিটিভি যাতে নাইট ভিশন ও অডিও রেকর্ডিংসের প্রযুক্তি থাকবে।

জেলের শৌচাগারের বাইরে থাকবে সিসিটিভি। জেলের ঢোকার প্রবেশ পথ ও বেরনোর পথে, করিডরে, লবিতে, রিসেপশনেও থাকবে সিসি ক্যামেরা। এমনকি ইনস্পেকটর ও সাব-ইনস্পেকটরের ঘর ও শৌচাগারের বাইরেও বসাতে হবে সিসিটিভি।

সিবিআই, এনবিআই, এনসিবি, ইডি সহ সমস্ত তদন্তকারী সংস্থাগুলির অফিস, জেরা করার ঘরে থাকবে সিসিটিভি, একই রকম নাইট ভিশন ও অডিও রেকর্ডিংসের সুবিধা যুক্ত। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, এতদিন তদন্তকারী সংস্থাগুলির অফিসে সিসিটিভি থাকত, কিন্তু এবার থেকে যে ঘরে জিজ্ঞাসবাদ করা হয় সেখানেও উচ্চ প্রযুক্তির সিসি ক্যামেরা বসাতে হবে।

সিসি ক্যামেরায় ১৮ মাসের ঘটনার রেকর্ডিংস থাকবে। দেখাশোনার দায়িত্বে থাকবে একটি প্যানেল।

তামিলনাড়ুর জেলে দু’জন বিচারাধীন বন্দির মৃত্যুর ঘটনার পরেই দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। পুলিশ লকআপে অভিযুক্তদের উপর কী ধরনের নির্যাতন করা হচ্ছে সে নিয়ে সরব হন অনেকেই। লকডাউনের বিধি ভাঙার অভিযোগে বাবা ও ছেলেকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। কয়েকদিন বাদেই খবর মেলে জেলেই মৃত্যু হয়েছে জয়রাজ ও তার ছেলে বেনিকসের। পরিবার অভিযোগ করে, থানায় দু’জনের উপরেই নির্মম অত্যাচার করে পুলিশ, বেধড়ক মারধর করা হয়। যে কারণেই মৃত্যু হয় দু’জনের। ঘটনার পরে চারটি শহরের পুলিশ প্রধানকে সরিয়ে দেওয়া হয়, সাসপেন্ড করা হয় এক কনস্টেবলকে। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, এ ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে সে কারণেই এই নির্দেশ মানতে হবে দেশের সমস্ত থানাগুলিকে। প্রতি দিনের ঘটনাবলীর রেকর্ড রাখা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.