গত সপ্তাহ থেকে দিল্লিতে আন্দোলন করছেন কৃষকরা। মঙ্গলবার সকালেই শোনা গিয়েছিল, সরকার এদিনই তাঁদের সঙ্গে কথা বলবে। এদিন দুপুর নাগাদ জানা গেল সরকারের প্রতিনিধি হিসাবে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলবেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। তার আগে এদিন সকালে তিনি বিজেপির সভাপতি জে পি নাড্ডার বাড়িতে আলোচনায় বসেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র তোমর।
একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, সরকার কৃষকদের আশ্বাস দেবে, নতুন কৃষি আইনে তাঁদের ক্ষতি হবে না। চাষিরা ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য পাবেন না বলে যে কথা শোনা যাচ্ছে, তা নিতান্তই গুজব। আন্দোলনরত কৃষকদের অন্যতম নেতা হান্নান মোল্লা বলেছেন, আমাদের দাবি একটাই। নতুন কৃষি আইন বাতিল করতে হবে। ওই দাবির ভিত্তিতে আমরা আলোচনায় বসতে চাই। সরকার উল্টোপাল্টা বলে সবার মনোযোগ অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিতে চাইছে।
কৃষিমন্ত্রী জানিয়েছেন, গত ১৩ নভেম্বর আমরা ঘোষণা করেছিলাম, ৩ ডিসেম্বর কৃষকদের সঙ্গে আলোচনায় বসব। কিন্তু তাঁরা বিক্ষোভ দেখিয়েই চলেছেন। শীত ও করোনা সংক্রমণের কথা চিন্তা করে তাঁদের ১ ডিসেম্বর বৈঠকে ডাকা হয়েছে। রাজধানীর বিজ্ঞান ভবনে দুপুর তিনটেয় বৈঠক হবে।
সোমবার রাতে হৃদরোগে দিল্লিতে এক আন্দোলনকারী মারা গিয়েছেন। তাঁর নাম গজ্জন সিং। তিনি পাঞ্জাবের লুধিয়ানা জেলার খাট্টরা গ্রামে থাকতেন। দিল্লি সীমান্তে টিকরি অঞ্চলে কৃষকদের জমায়েতের মধ্যে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। গত ৭১ বছরের মধ্যে এবারই নভেম্বরে সবচেয়ে বেশি ঠান্ডা পড়েছে। ঠান্ডাতেই গজ্জন সিং অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। গত সপ্তাহে কৃষকদের ‘দিল্লি চলো’ অভিযান শুরুর পরে এই নিয়ে দু’জনের মৃত্যু হল।
সোমবার সন্ধ্যায় দিল্লি পুলিশ টুইট করে জানায়, দিল্লি সীমান্তে সিংঘু সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। টিকরি সীমান্ত দিয়েও যান চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না। দিল্লি-উত্তরপ্রদেশ সীমান্তে গাজিপুরে রাস্তা আটকানো হয়নি। দিল্লির বুরারিতে যে কৃষকরা গিয়েছিলেন, তাঁরা এদিন ‘রোড মার্চ’ করেছেন। সেখানে কেন্দ্রীয় সরকার ও কৃষি আইনের বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়া হয়েছে।
হরিয়ানার প্রতিটি খাপ কৃষকদের আন্দোলন সমর্থন করেছে। তাঁরা মঙ্গলবারই জমায়েত করবে দিল্লিতে। হরিয়ানার খাপ প্রধান সোমবীর সাঙ্গোয়ান বলেন, “আমরা কেন্দ্রীয় সরকারকে অনুরোধ করছি, তারা কৃষি আইনগুলি নিয়ে একবার বিবেচনা করুক। প্রতিবাদ করার অধিকার সকলেরই আছে।”