সত্য.. সত্য.. সত্য, শুধু মাত্র সত্য | সত্যের জন্য সব কিছু ত্যাগ করা যায় কিন্তু কোনো কিছুর জন্য সত্যকে ত্যাগ করা ঠিক নয় | সারা পৃথিবীতে যে পেশায় মানুষ সবচেয়ে বেশি সাহসের সঙ্গে এই উদ্ধৃতিটি অনুসরণ করেন ,তা অবশ্যই সাংবাদিকতা | সাংবাদিকতা বা সংবাদ মাধ্যম হলো গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ | স্বাধীন সংবাদমাধ্যম গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করে। সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতাকে সমর্থন করে সংবাদমাধ্যম এবং মতামত প্রকাশের স্বাধীনতাকে দৃঢ় করা দরকার।
সাংবাদিকতার ভূমিকা ও কর্তব্য বলতে গিয়ে মহাত্মা গান্ধী তাঁর হিন্দ স্বরাজ পত্রিকায় লিখেছিলেন যে – ‘ মানুষের ভাবনা সঠিক ভাবে জেনে সেটাকে সর্বসমক্ষে জানানোর ব্যবস্থা আর কোনো ব্যক্তির মধ্যে কিছু দোষ ত্রূটি দেখলে যেকোনো মূল্যে নির্ভয়ে জনসমক্ষে জানানো |’
আজকের পৃথিবীতে সংবাদমাধ্যম এক অপ্রতিরোধ্য শক্তি | কোনো জাতি বা দেশের উন্নতি হয় সেই দেশের সংস্কৃতি ঐতিহ্যে চিরন্তন ধারা ধরে | আজকের দিন এই পরম্পরা উল্লেখের দিন | দেবর্ষি নারদ জ্যৈষ্ঠ কৃষ্ণ প্রতিপদ তিথিতে আবির্ভাব বলে স্বীকৃত| একান্ত হরিভক্ত দেবর্ষি নারদ নিজের ইচ্ছায় যত্রতত্র গমন করতে পারতেন এবং সকল জায়গায়ই তাঁর অবাধ যাতায়াত ছিল। এছাড়াও প্রয়োজন মনে করলে তিনি সকল ব্যাপারেই হস্তক্ষেপ করতেন |
রত্নাকর দস্যুবৃত্তি করে পরিবার চালাত ।নারদকে একদিন আক্রমণ করলে নারদের কথায় দস্যু জীবনের কটূ সত্যতা উপলব্ধি করে ক্ষমা ভিক্ষা চায়। দেবর্ষি নারদের প্রচেষ্টায় তার দস্যুবৃত্তি ছেড়ে রামনাম সাধনা করে কবিত্বশক্তি প্রাপ্ত, তাঁর নামকরণ হয় বাল্মীকি।
মানুষ যত এগিয়েছে, সভ্য হয়েছে, তাঁর মধ্যে তত বেশি করে জাঁকিয়ে বসেছে অবিশ্বাস নামক রোগ। নারদ অন্তত এই পৃথিবীকে শিখিয়ে গিয়েছিলেন, যাঁকে আপনি মানেন, তাঁকে ঠিক কতটা বিশ্বাস করতে হয়। তাঁর যপ মন্ত্র ছিল ‘নারায়ণ-নারায়ণ’। তিনি নারায়ণ বা বিষ্ণুকে মানতেন, তাঁকে বিশ্বাস করতেন। এই বিশ্বাসে কোনও ঘাটতি ছিল না। গোটা জগত্ অন্য কিছু বললেও তিনি জানতেন, তাঁর জন্য অন্তত নারায়ণ আছেন।
বিশ্বের আদি সংবাদবাহক বা সংবাদদাতা হিসেবে দেবর্ষি নারদের জীবনদর্শন আজও সমান অপরিহার্য| দেবর্ষি নারদের চরিত্র জীবনাদর্শ আধুনিক সংবাদ জগতে এবং আগামী ভবিষ্যতেও অনুসরণযোগ্য আদর্শ হয়ে থাকবে|
দেবর্ষি নারদ জয়ন্তী উপলক্ষে সাংবাদিক বন্ধু ও সংবাদ মাধ্যম কে জানাই শুভেচ্ছা ও আন্তরিক অভিনন্দন |