সাধের ডার্বি হচ্ছে না যুবভারতীতে। মাণ্ডবীর তীরেই বসেছে ঐতিহাসিক ম্যাচের আসর। তাতে কী! কে বলল এতে তিলোত্তমায় ডার্বি নিয়ে উত্তেজনায় ভাটা! হালকা ঠান্ডা পরিবেশে ডার্বির উত্তাপে গা ঘামালেন সমর্থকরা। মুখে মাস্ক পরেই ক্লাবে কিংবা পাড়ার মাঠের জায়ান্ট স্ক্রিনের সামনে বসে একসঙ্গে উপভোগ করলেন মরশুমের প্রথম ডার্বি। মন্ত্রী থেকে আমজনতা- সকলেই গলা ফাটালেন প্রিয় ক্লাবের জন্য। সে শব্দ হয়তো পৌঁছে গিয়েছিল গোয়া পর্যন্তও। তাই তো ম্যাচ শেষে সমর্থকদের ধন্যবাদ জানাতে ভুললেন না রয় কৃষ্ণ।
শুক্র সন্ধেয় আইএসএলের ভিউয়ারশিপ যে নয়া রেকর্ড গড়ল, তা আর আলাদা করে বলে দেওয়ার প্রয়োজন নেই। করোনা আবহে এবার গোয়ায় ম্যাচ। তাই গোটা বাংলা তো বটেই, দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা দুই প্রধানের সমর্থকদের চোখ ছিল টিভি আর ডিজিটাল পর্দায়। আর ৯০ মিনিট লড়াই শেষে চওড়া হাসি সবুজ-মেরুন ভক্তদের মুখেই। সোশ্যাল মিডিয়ায় তৈরি হয়ে গিয়েছে নতুন ছড়াও।
চিত্ত যেথা ২-০, উচ্চ যেথা শির,
একটি দিলেন রয় কৃষ্ণ, একটি মনবীর।
রয় কৃষ্ণ। এই মানুষটিকে ঘিরেই জয়, সাফল্য, ভাল পারফরম্যান্সের স্বপ্নে বুঁদ সবুজ-মেরুন ভক্তরা। কিন্তু তাঁর সাবলীল খেলা দেখে কে বলবে, প্রত্যাশার সামান্যতম চাপটুকুও অনুভব করছে তিনি! বরং প্রতিটা মুহূর্তকে উপভোগ করছেন। আর দলকে এনে দিচ্ছেন কাঙ্খিত তিনটি করে পয়েন্ট। কেরলের বিরুদ্ধে প্রথম গোলটি করে এটিকে মোহনবাগান জার্সিতে আইএসএলের প্রথম গোলের মালিক হওয়ার রেকর্ড গড়েছিলেন ফিজির স্ট্রাইকার। ডার্বিতে গড়লেন আরও একটি রেকর্ড।
আইএসএলের ইতিহাসে এটাই প্রথম এটিকে মোহনবাগান বনাম এসসি ইস্টবেঙ্গল ডার্বি। আর সেখানেও প্রথম গোলদাতা হিসেবে নিজের নামটি স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখলেন রয়। তবে পুরো কৃতিত্ব একা নিতে নারাজ তিনি। ম্যাচ শেষে বলে দিলেন, “নতুন রেকর্ড গড়ে দারুণ লাগছে। কিন্তু সব কৃতিত্ব আমার নয়। আরও একবার আমাদের ডিফেন্সের তারিফ করতেই হবে।” তবে ডার্বি জয়ের আনন্দে গা ভাসানোর যে সময় নেই, সে কথাও শোনা গেল তাঁর মুখে। বললেন, “আগামী সপ্তাহেই ম্যাচ আছে। তাই এই জয় নিয়েই পড়ে থাকলে হবে না। অনেকখানি রাস্তা বাকি। আর সমর্থকদের বলব এভাবেই পাশে থাকুন।” রয় কৃষ্ণর উত্তরেই যেন সমর্থকরা বলে উঠলেন, “ছিলাম, আছি, থাকব।”