কথায় আছে, মেয়েদের বয়স আর ছেলেদের রোজগার কখনও ফাঁস করতে নেই। কিন্তু এবার ছেলেদের রোজগারের সেই গোপন কথাটি আর গোপনে থাকার উপায় নেই। ফাঁস করতেই হবে। স্ত্রী চাইলেই স্বামীর আসল রোজগার জানতে পারবেন। স্বামী যদি সরাসরি তাঁকে নিজের বেতন সম্পর্কে তথ্য দিতে নাও চায়, তাহলে তথ্যের অধিকার আইনে তিনি সব জানতে পারবেন। সম্প্রতি এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় তথ্য কমিশন (Central Information Commission)। সুতরাং, এরপর থেকে অন্তত স্ত্রীর কাছে আর নিজের রোজগার লুকিয়ে রাখতে পারবেন না পুরুষেরা।
সম্প্রতি, রহমত বানু নামের যোধপুরের এক মহিলা আয়কর দপ্তরের কাছে নিজের স্বামীর রোজগার জানতে চান RTI-এর মাধ্যমে। কিন্তু আয়কর দপ্তর তার সেই আবেদন খারিজ করে দেয়। তাদের যুক্তি ছিল, স্বামীর রোজগারের সঙ্গে যেহেতু তৃতীয় একটি সংস্থা জড়িত আছে, তাই সেই তথ্য এভাবে দেওয়া যাবে না। অতএব, হতাশ হতে হয় রহমত বানুকে। কিন্তু তিনি ছেড়ে দেওয়ার পাত্রী নন। স্বামীর রোজগার তিনি জেনেই ছাড়বেন। তাই এবার দ্বারস্থ হন, জাতীয় তথ্য কমিশনের। আর জাতীয় তথ্য কমিশন রায় দেয় বানুর পক্ষেই। যোধপুরের আয়কর দপ্তরকে নির্দেশ দেওয়া হয়, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ওই মহিলার স্বামীর রোজগারের যাবতীয় তথ্য তাঁর হাতে তুলে দিতে হবে। আয়কর দপ্তর যে তৃতীয় পক্ষের যুক্তি দিচ্ছিল, সেটাও খারিজ করে দিয়েছে জাতীয় তথ্য কমিশন। তাদের সাফ কথা, স্বামীর রোজগার কত, জানার অধিকার স্ত্রীর আছে।
জাতীয় তথ্য কমিশনের এই রায়ের অর্থ হল, কোনও বেসরকারি সংস্থার কর্মীও এখন থেকে নিজের স্ত্রীকে নিজের রোজগারের হিসেব দিতে বাধ্য থাকবেন। এর আগে ২০১৪ সালের এই নিয়ম চালু হয়েছিল সরকারি চাকুরেদের ক্ষেত্রে। যার অর্থ, পুরুষেরা সরকারি, বেসরকারি যে সংস্থাতেই কর্মরত হোক না কেন, স্ত্রীর কাছে নিজের যাবতীয় আয়-ব্যয়ের হিসেব তাঁকে দিতেই হবে। গোপন করে নিজের জন্য আলাদা করে সঞ্চয় বা খরচ করার কোনও উপায় নেই। তথ্য কমিশনের এই নির্দেশে নিঃসন্দেহে গৃহিণীদের মুখে হাসি ফোটাবে।