‘দল আর দিদির হাতে নেই’, ফের বিস্ফোরক মিহির গোস্বামী

তৃণমূলের লাগাম আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে নেই বলে ফেসবুকে বিস্ফোরক পোস্ট করলেন কোচবিহার দক্ষিণের বিধায়ক। যার থেকে ফের তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে।

মঙ্গলবার মিহিরবাবু তাঁর ফেসবুক প্রোফাইলে লিখেছেন, “এ দল এখন আর আমার দিদি-র দল নয়, দিদি এখানে নিস্পৃহ। তাই ‘দিদির লোক’ এখানে অপ্রয়োজনীয় ও গুরুত্বহীন। অন্যায্য সবকিছু মেনে নিয়ে ‘যো হুজুর’ করে টিকে থাকতে পারলে থাকো, নয়ত তফাৎ যাও।”

মিহির গোস্বামী আরও বলেছেন, অনেক অপমান সহ্য করেও তিনি টিকেছিলেন তার একমাত্র কারণ দিদি। তাঁর কথায়, “আমার দল আর আমার নেত্রীর হাতে নেই, অর্থাৎ এই দল আর আমার নয়, হতে পারে না। শ্যামা মায়ের আরাধনা লগ্নে আমার এই অনুমান আরও দৃঢ় হয়েছে। তাই এই দলের সঙ্গে সমস্ত রকমের সম্পর্ক ছিন্ন করাটাই কি স্বাভাবিক নয়?”

এখনেই থামেননি কোচবিহার দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক। তিনি ওই পোস্টে দাবি করেছেন, দলের অভিধান থেকে সম্মান শব্দটাই বেমালুম উবে গেছে। তবে কার যো হুজুর হয়ে থাকার কথা মিহিরবাবু বলেছেন তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। যদিও তৃণমূলের অনেকে বলছেন, মিহির গোস্বামী যা বলতে চেয়েছেন তা বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে না।

মাস দেড়েক আগে সংগঠনের সমস্ত পদ থেকে ইস্তফা দেন মিহিরবাবু। তারপর গত সপ্তাহে বলেন, তৃণমূলে আর ফিরছি না। কিন্তু তারপর নেত্রী তাঁকে ফোন করেননি বলে অভিমানও প্রকাশ পেয়েছে তাঁর পোস্টে। লিখেছেন, “সংগঠন থেকে আমার অব্যাহতি নেওয়ার কথা ঘোষণা করার পর ছয় সপ্তাহ কেটে গেছে। এই বিয়াল্লিশ দিনে আমি সব দলের কাছ থেকে এক বা একাধিক ফোন কল পেয়েছি, কথা বলেছি। বহু পুরনো রাজনৈতিক বন্ধুর ফোন পেয়েছি রাজ্যের বাইরে থেকেও। কেউ অফার দিয়েছেন, কেউ পরামর্শ দিয়েছেন, কেউ শুধু ভালবাসা দিয়েছেন। সতীর্থ থেকে শুরু করে অনেক সহকর্মী নেতার ফোন এসেছে বাংলার নানা প্রান্ত থেকে, কলকাতা থেকে, সবার ফোন ধরা হয়ত সম্ভব হয়নি। কিন্তু গত ছয় সপ্তাহে খোদ নেত্রীর কাছ থেকে কোনও ফোন আসেনি। কোনও বরখাস্তনামা কিংবা বহিষ্কারের নির্দেশও আসেনি তাঁর কাছ থেকে।

তৃণমূলের নেতারা বলেন দিদিই সব। তিনিই ৪২টি লোকসভা, ২৯৪টি বিধানসভায় প্রার্থী। পর্যবেক্ষকদের মতে, সেই দলের বিধায়ক যদি এখন বলেন দলের নিয়ন্ত্রণ সর্বোচ্চ নেতৃত্বের হাতে নেই তাহলে তো সামগ্রিক ভাবে শাসকদলের পক্ষেই চিন্তার কারণ!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.