ঠিকঠাক চললে নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে পদ্ম শিবিরে যোগ দিতে পারেন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। বিজেপি (BJP) সূত্রে এমনটাই খবর মিলেছে। যে কারণে, সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত সহ পর্যবেক্ষক অমিত মালব্য সোমবার রাতেই কলকাতায় এসে পড়েছেন। মঙ্গলবার কলকাতায় আসছেন বিজেপির সর্বভারতীয় নেতা তথা সাধারন সম্পাদক (সংগঠন) বি এল সন্তোষ। এই দুই নেতা রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে নতুন সদস্যকে দলে স্বাগত জানানো তথা কর্মপরিধি দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করবেন বলেই জানা গিয়েছে। শুভেন্দুর যোগদান পথে কোনও অন্তরায় যেন না হয়, সেই কারণে বুধবার কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি জেপি নাড্ডা দিল্লিতে ডেকে পাঠিয়েছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষকে। আরও একটি সূত্র জানাচ্ছে, বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়কে দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের এই দুই গুরুত্বপূর্ণ নেতার সঙ্গে বৈঠক করে শুভেন্দুর যোগদানের বিষয় চূড়ান্ত করবেন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি।
চলতি বছর ২৩ জুলাই তৃণমূলের নতুন কমিটি ঘোষণার পর থেকেই দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়ে নিয়েছেন পরিবহন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। সাংগঠনিক বৈঠক তো বটেই, রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকেও ধারাবাহিক ভাবে অনুপস্থিত থেকেছেন তিনি। গত কয়েক মাস ধরে একক ভাবে নিজের অনুগামীদের নিয়ে জেলায় জেলায় প্রকাশ্য সমাবেশ করে বেড়াচ্ছেন শুভেন্দু অধিকারী। কখনও বিজয়া সম্মেলনী, কখনও পুজোর উদ্বোধনে অনুগামীদের নিয়ে হাজির হয়ে উৎকণ্ঠা বাড়িয়ে দিচ্ছেন তৃণমূল (TMC) শীর্ষ নেতৃত্বের। ১০ নভেম্বর আবার নন্দীগ্রামের বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠানে শিশির অধিকারীর মেজো ছেলে নাম না করে তোপ দেগেছেন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। ওইদিনই নন্দীগ্রামে পাল্টা সমাবেশ করে জবাব দিয়েছেন ফিরহাদ হাকিম। কালীপুজোর ঠিক একদিন আগে নন্দীগ্রামের বিধায়কের কাঁথির বাড়িতে গিয়ে মধ্যস্থতা করার চেষ্টা করেছেন ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোর। যদিও শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে দেখা না হলে পিতার শিশির অধিকারীর সঙ্গেই ঘন্টা তিনেকের বৈঠক করে ফিরে এসেছেন পিকে স্যার। এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ভবানীপুর ও হাজরা মোড় জুড়ে শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামীদের পোস্টার অস্বস্তিতে ফেলেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর সাংসদ ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
এমন ঘটনাক্রমের পর শুভেন্দু অধিকারীর যোগদান কেবলমাত্র সময়ের অপেক্ষা বলেই ধরছে কালীঘাট। পাল্টা বিজেপিও অধিকারীকে দলে পেতে তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছে। সেই ঘটনাক্রমেই খবর মিলেছে নভেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহেই বিজেপি-তে যোগ দিতে পারেন শুভেন্দু। তারপরেই তৃণমূলে ভাঙন তীব্র থেকে তীব্রতর হবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।