অনেকেই ভাবছেন করোনা ভ্যাক্সিন এলেই স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়া যাবে। কিন্তু সেটা কী আদৌ সত্যি? সেই বিষয়েই এবার মুখ খুললেন ‘হু’ প্রধান।
তিনি জানিয়েছেন, ‘আমাদের এখনও যে উপায়গুলি আছে, সেগুলির আরও পরিপূরক হয়ে উঠবে টিকা। তবে সেই উপায়গুলিকে একেবারে পালটে দেবে না।’ একইসঙ্গে তিনি আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে স্বাস্থ্যকর্মী, প্রবীণ মানুষ এবং ঝুঁকিপূর্ণ মানুষকে করোনা টিকা প্রদান করা হবে। টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। তার ফলে মৃতের সংখ্যাও কমবে এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে আরও কিছুটা মজবুত করা হবে।
টিকা আবিষ্কার হলেও সতর্কতায় কোনও ফাঁক রাখা যাবে না বলে সতর্ক করেছেন তিনি। ভ্যাক্সিন আসার পরও সংক্রমণের যথেষ্ট সুযোগ থাকবে বলে দাবি করেন তিনি। তাই নজরদারি চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেনতে হবে। মানুষকে তারপরও পরীক্ষা করতে হবে, নিভৃতবাসে থাকতে হবে, চিকিৎসা করতে হবে, (করোনা আক্রান্তের সংস্পর্শে আসা মানুষদেরও) খুঁজে বের করতে হবে। মানুষের দেখভাল করতে হবে।’
ওয়ার্ল্ডওমিটারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সোমবার রাত ন’টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত বিশ্বে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৫৫,০১৭,০৬১। মৃত্যু হয়েছে মোট ১,৩৭,৩৩৪ জনের। সেরে উঠেছেন ৩৮,২৭৪,০৭০ জন। মোট আক্রান্তের নিরিখে বিশ্বে আপাতত দ্বিতীয় স্থানে আছে ভারত। সবার প্রথমে আছে আমেরিকা।
তারই মধ্যে তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের প্রাথমিক তথ্য থেকে মর্ডানা দাবি করেছে, ‘ভ্যাকসিন ক্যান্ডিডেট’ মর্ডানার সম্ভাব্য করোনা টিকা ৯৪.৫ শতাংশ কার্যকরী হয়েছে। মার্কিন সংস্থার সিইও স্টিফেন ব্যানসেল বলেন, ‘এই তৃতীয় পর্যাযের গবেষণার ইতিবাচক মূল্যায়ন প্রথমবার তার বৈধতা দিয়েছে যে আমাদের টিকা যে কোভিড-১৯ রোগকে রুখতে পারবে।’ তাঁর থেকেও বেশি আত্মবিশ্বাসী শোনায় মর্ডানার প্রেসিডেন্ট স্টিফেন হগেকে। সংবাদসংস্থা রয়টার্সকে সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমরা একটা টিকা পেতে চলেছি। যা কোভিড-১৯-কে রুখতে পারে।’
অন্যদিকে, BioNTech সংস্থার কর্ণধার প্রফেসর উগুর সাহিন মুখ খুলেছেন এই বিষয়ে। ভ্যাক্সিন উৎপাদনকারী সংস্থা Pfizer-এর সঙ্গে যৌথভাবে ভ্যাক্সিন তৈরি করছে ওই সংস্থা।
ড. সাহিন জানিয়েছেন, এবছরের শীতটা খুব সতর্ক হয়ে কাটাতে হবে। পররে বছরের মাঝামাঝি সময়ে সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে। ততদিন পর্যন্ত সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা, মাস্ক পরার মত বিষয়গুলি মেনে চলতে বলেছেন তিনি।
তাঁর দাবি, ভ্যাক্সিন এনে সংক্রমণ একধাক্কায় অর্ধেক হয়ে যাবে। তার ফলে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কমবে অনেকটাই।
ফাইজার নিয়ে ট্রায়ালের তৃতীয় পর্যায়ে সাফল্যের কথা সম্প্রতি এসেছে সামনে। ৯০ শতাংশ সদর্থক মনোভাব নিয়ে এই ভ্যাকসিনকে ঘিরে আশা দেখছে বিশ্ব। এমন এক পরিস্থিতিতে এসেছে আমেরিকার পরিকল্পনার বার্তা। জানা যাচ্ছে ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে আমেরিকা পিফাইজার ভ্য়াকসিন প্রয়োগ করতে শুরু করবে। মার্কিন স্বাস্থ্য সচিব এ বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়েছেন।