শুক্রবার প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর বেশ কয়েকটি জায়গায় আচমকা গোলাগুলি চালায় পাকিস্তান। তাতে অন্তত ন’জন মারা যান। শনিবার পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে তার তীব্র প্রতিবাদ জানাল ভারত। এদিন বিদেশ মন্ত্রক থেকে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়, পাকিস্তানের দূতকে বলা হয়েছে, যেভাবে নিরীহ মানুষের বাসস্থান লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়েছে, তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। বেছে বেছে উৎসবের মরসুমে এলওসি-র কয়েকটি জায়গায় গোলাবর্ষণ করেছে পাকিস্তানের সেনা। জম্মু-কাশ্মীরে শান্তিভঙ্গ করার জন্যই তারা ওই কাজ করেছে।
শুক্রবারের গোলাবর্ষণে ভারতের পাঁচজন সৈনিকের মৃত্যু হয়। বিদেশমন্ত্রক বলেছে, “ভারতে সন্ত্রাসবাদীদের ঢুকিয়ে দেওয়ার জন্যই পাকিস্তানের সেনা গোলাবর্ষণ করেছিল। ভারত এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে। পাকিস্তানকে মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে, তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, জঙ্গিদের মদত দেবে না। কেউ যাতে পাকিস্তানের মাটিতে ঘাঁটি বানিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে হামলা না করতে পারে, সেদিকে নজর রাখবে।”
শুক্রবার নাম্বলা সেক্টরে পাকিস্তানের গোলাবর্ষণে নিহত হন দুই সেনা জওয়ান। হাজি পির সেক্টরে পাকিস্তানের গোলায় নিহত হন সীমান্তরক্ষী বাহিনীর এক সাব ইনস্পেকটর। আহত হন এক জওয়ান। বারামুলা জেলার উরি অঞ্চলে কামালকোটে সেক্টরে নিহত হন দু’জন স্থানীয় মানুষ।
ভারতের সেনার গোলাবর্ষণে এদিন ছ’-সাতজন পাকিস্তানি সেনা মারা গিয়েছে। আহত হয়েছে ১০-১২ জন। নিহত সৈনিকদের মধ্যে কয়েকজন ছিল পাকিস্তানের স্পেশাল সার্ভিস গ্রুপের কম্যান্ডো। এছাড়া ভারতের গোলায় গুঁড়িয়ে গিয়েছে পাকিস্তানের কয়েকটি সেনা বাঙ্কার ও জ্বালানি মজুত রাখার গুদাম। এদিন সেনাবাহিনীর তরফে কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ দেখানো হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, পাকিস্তানের অভ্যন্তরে সেনাবাহিনীর কয়েকটি ঘাঁটি গোলায় বিধ্বস্ত হয়ে গিয়েছে।
সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র বলেন, উরি সেক্টর বাদে গুরেজ সেক্টরের ইজমার্গ, কেরান সেক্টরে গোলাবর্ষণ করেছে। পাকিস্তানি সেনা অনুপ্রবেশকারীদের ভারতে ঢুকতে সাহায্য করতে চেয়েছিল। কিন্তু তাদের উদ্দেশ্য সফল হয়নি।
সেনাবাহিনীর কর্নেল রাজেশ কালিয়া বলেন, “কুপওয়ারা জেলার কেরান সেক্টরে আমাদের সৈনিকরা সন্দেহভাজন কয়েকজনকে দেখতে পায়। তারা গোপনে পাকিস্তান থেকে ভারতে ঢোকার চেষ্টা করছিল। সেনাবাহিনীর তৎপরতায় তারা ব্যর্থ হয়।”
শুক্রবার জওয়ানদের অভিনন্দন জানিয়ে টুইট করেন কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধী। তিনি বলেন, সেনা কো হর জওয়ান কো মেরা সালাম।