‘চিনের সম্প্রসারণবাদ বিকৃত মানসিকতার পরিচয় দেয়’, জয়সলমীরে দাঁড়িয়ে কটাক্ষ প্রধানমন্ত্রীর

দীপাবলীতে জয়সলমীরে লোঙ্গেওয়ালা বর্ডার চেকপোস্টে সেনবাহিনীর জওয়ানদের সঙ্গে দীপাবলী উদযাপন করতে গিয়ে নিজের বক্তব্যে পাকিস্তান ও চিনকে একহাত নিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি দেওয়ার পাশাপাশি চিনের সম্প্রসারণবাদী মানদিকতার নিন্দা করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, চিনের এই মনোভাব অষ্টাদশ শতকের বিকৃত মানসিকতার পরিচয় দেয়। সেইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন ভারতের ধৈর্য ও সহনশীলতার পরীক্ষা নেওয়ার চেষ্টা করলে সীমান্তে যোগ্য জবাব দেওয়া হবে।

জয়সলমীরে লোঙ্গেওয়ালা পোস্টে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যারা অন্যের এলাকা দখল করার চেষ্টা করে তারা বিকৃত মানসিকতার। সম্প্রসারণবাদ আগে ছিল। বর্তমানে যারা এই কাজ করছে তারা অষ্টাদশ শতকের বিকৃত মানসিকতার পরিচয় দিচ্ছে। ভারত এই কাজ কখনওই বরদাস্ত করবে না।”

তিনি আরও বলেন, “ভারত আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের নীতিতে বিশ্বাসী। কিন্তু কেউ যদি আমাদের সহনশীলতার পরীক্ষা নেওয়ার চেষ্টা করে তাহলে দেশ তাকে যোগ্য জবাব দেবে। বিশ্বের কোনও শক্তি আমাদের সেনাবাহিনীকে দেশের সীমান্ত রক্ষা করা থেকে আটকাতে পারবে না। তাই যারা আমাদের চ্যালেঞ্জ করবে তাদের জবাব দেওয়ার ক্ষমতা যে ভারতের রয়েছে তা আগেও সবাই দেখেছে। বিশ্ব জানে ভারত এখন নিজের সুরক্ষার ক্ষেত্রে এক ইঞ্চিও সমঝোতা করবে না।”

এর আগে গত সপ্তাহে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের বৈঠকে নরেন্দ্র মোদী বলেন, প্রত্যেক দেশের উচিত অন্য দেশের সার্বভৌম্যত্ব ও অখণ্ডতাকে সম্মান করা। তার আগে জুলাই মাসে আরও একবার সম্প্রসারণবাদের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। লাদাখে গিয়ে সেনা জওয়ানদের সামনে তিনি বলেন, “সম্প্রসারণবাদের যুগ শেষ। ইতিহাস সাক্ষী রয়েছে যারা অন্যের জমি দখল করার চেষ্টা করেছে তারা হয় হেরে গিয়েছে নয়তো পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।”

এদিন লোঙ্গেওয়ালার ভারত-পাক যুদ্ধের কথাও তুলে আনেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “অনেক দেশের সঙ্গে ভারতের দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। কিন্তু যদি একটা বর্ডার পোস্টের নাম সব ভারতীয় জানেন, সেটা হল লোঙ্গেওয়ালা। লোঙ্গেওয়ালার যুদ্ধের কথা প্রত্যেক ভারতীয় জানেন এবং যখনই আমরা এই যুদ্ধের কথা ভাবি, আমাদের মাথায় আসে ‘জো বোলে সো নিহাল, সত শ্রী আকাল’ ধ্বনি।”

সেনার সামনে দাঁড়িয়ে সেনা জওয়ানদের ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “কিছু মানুষ ভাবতে পারেন প্রতি বছর দীপাবলীতে সেনা জওয়ানদের সঙ্গে কেন মোদীজি দেখা করতে যান। কিন্তু আমাকে একটা কথা বলুন। দীপাবলী আমরা পরিবারের লোক ও কাছের লোকেদের সঙ্গে পালন করে থাকি। তাই প্রতেক বছর আমি আপনাদের সঙ্গে দীপাবলী পালন করি। কারণ আপনারা প্রত্যেকে আমার পরিবারের সদস্য। আমি আপনাদের সবার জন্য মিষ্টি এনেছি। কিন্তু এটা শুধু আমার তরফে নয়, এটা ১৩০ কোটি ভারতীয়র তরফে।”

শুক্রবার জম্মু-কাশ্মীরে সংঘর্ষবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে গুলি চালিয়েছে পাক সেনা। সেই গুলিতে শহিদ হয়েছেন অন্তত ৫ জওয়ান। এছাড়া ৬ জন সাধারণ মানুষেরও মৃত্যু হয়েছে। জবাব দিয়েছে ভারতও। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে পাক সেনার বাঙ্কার। অন্তত ৭ থেকে ৮ জন পাক সেনা নিহত হয়েছে বলে খবর। এই আবহে পাকিস্তান ও চিনের উদ্দেশে মোদীর এই হুঁশিয়ারি যথেষ্ট বার্তাবহ বলেই মনে করছে কূটনৈতিক মহল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.