চার সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে সংসার। এমনিতে বেশ স্বচ্ছল অবস্থায ছিল। মোটা মাইনের চাকরি করতেন তিনি। ফলে আর্থিক দিক থেকে কোনও অসুবিধা ছিল না। কিন্তু করোনা সব ওলট-পালট করে দিল। লকডাউনের জেরে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল বিমান পরিষেবা। ফলে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছিল বিমান সংস্থাগুলি। কার্যত বাধ্য হয়েই তাই বহু কর্মীকে ছাঁটাই করে একাধিক সংস্থা। আজরিন মহম্মদ জাব্বিও চাকরি খুইয়ে বেকার হয়ে পড়েন। কিন্তু তিনি আশা ছাড়েননি। বেঁচে থাকার জন্য জীবিকা বদল করে ফেলেছিলেন। পাইলট থেকে তিনি এখন ফুড স্টল-এর মালিক। মোটা মাইনের চাকরি হারিয়ে সাময়িক বিপদে পড়েছিলেন ঠিকই। তবে নিজেকে সামলে নিয়েছেন আজরিন।
সারা বিশ্বে বহু মানুষ করোনা লকডাউনের জেরে চাকরি খুইয়েছেন। আচমকা কাজ হারিয়ে সংসার সামলাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন বহু মানুষ। মালয়েশিয়ার এই পাইলট-এর একই অবস্থা হয়েছিল। কিন্তু তিনি হাল ছাড়েননি। মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুর থেকে কিছুটা দূরে তিনি একটি খাবারের দোকান খুলে বসেন। সেই দোকানের নাম দেন ক্যাপ্টেন কর্নার। মজার ব্যাপার হল, রোজ পাইলটের ইউনিফর্ম পরেই তিনি সেই দোকানে যান। সারাদিন সেই ইউনিফর্ম পরেই লোকজনকে খাবার পরিবেশন করেন। আর তাঁর এই স্টাইল অনেকেরই পছন্দ হয়েছে। খুব কম সময় ক্যাপ্টেন কর্নার বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। প্রথমদিকে সমস্যায় পড়তে হলেও এখন তাঁর ব্যবসা বেশ ভালই চলছে। আগের মতো রোজগার না হলেও এখন হাতে যা আসছে তাতে মোটের ওপর সংসার চলে যায়।
কুড়ি বছরের বেশি সময় ধরে আজরিন পাইলট হিসাবে জীবিকা নির্বাহ করেছেন। ফলে প্রথমে পেশা পরিবর্তনের জন্য তাঁকে অনেক অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়েছিল। কিন্তু তিনি লড়াই করবেন বলে ঠিক করেছিলেন। আজরিন বলেন, ”আর কোনো রাস্তা খোলা ছিল না। বাড়িতে বসে থাকতে পারতাম না। কারণ চার সন্তানের পড়াশোনার খরচ চালাতে হবে। তাই খাবারের ব্যবসা শুরু করলাম। পুরনো পেশাকে ভালবাসি। তাই ভুলতে পারছি না। ঠিক করলাম পাইলটের ইউনিফর্ম পরে খাবার পরিবেশন করব। এমনকী দোকানের নামেও নতুনত্ব রাখব। এখন প্রচুর মানুষ আমার দোকানে আসেন। আমার সঙ্গে ছবি তুলতে চান। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ছবি পোস্ট করেন। বেশ ভালই লাগছে নতুন পেশায়।”