দীর্ঘদিন পর টেট (TET) উত্তীর্ণদের নিয়োগ প্রক্রিয়া ঘোষণায় স্বাভাবিকভাবে আশার আলোর জেগেছিল। ফলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সকলে। তবে এখনও নানাবিদ প্রশ্নের কাঁটায় বিদ্ধ দীর্ঘসময় চাকরির অপেক্ষায় থাকা প্রার্থীরা। এই ধোঁয়াশার কথা দিনভর উঠে এল সোশ্যাল মিডিয়ায়। এবিষয়ে সরকারের শিক্ষাদপ্তর থেকে স্পষ্ট কোনও নির্দেশিকা না পাওয়ায় ধন্দ কাটছে না, তাই বিকাশ ভবনে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে একটি সংগঠন। কিন্তু উত্তর মিলছে না কোন প্রশ্নের? ধোঁয়াশা কোথায়?
পশ্চিমবঙ্গ আপার প্রাইমারি চাকরিপ্রার্থী মঞ্চের সহ-সভাপতি সুশান্ত ঘোষ বলেছেন, “প্রাইমারি না আপার প্রাইমারি, কোথায় নিয়োগ হবে তা এখনও স্পষ্ট নয়। ফলে বিভ্রান্তি বাড়ছে প্রার্থীদের মধ্যে। তৈরি হচ্ছে অনিশ্চয়তা।” এই সংগঠনের দাবী, “অতি দ্রুত গেজেট বিধি মেনে অনুপাতের ভিত্তিতে শূন্যপদে উচ্চ প্রাথমিক নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সাত বছর ধরে চলতে থাকা নিয়োগ বঞ্চনার মুক্তি দেওয়া হোক।” আপার প্রাইমারি না প্রাইমারিতে নিয়োগ? এই প্রশ্নে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে ২০১৫ সালে টেট পাস ঐক্য মঞ্চও। এই সংগঠনের সদস্য স্বদেশ ঘোষের বক্তব্য, “দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চনার শিকার আমরা। কাদের নিয়োগ করা হচ্ছে, সেই নিয়োগ তালিকায় আমাদের নাম রয়েছে কিনা, তা জানতে বিকাশভবনে যাবে মঞ্চের প্রতিনিধি দল। বিষয়টির দ্রুত নিষ্পত্তির দাবি জানাচ্ছি।”
রায়গঞ্জের বীরসাই অঞ্চল কমিটির তৃণমূল সদস্য মহম্মদ রফি নিজেই একজন চাকরিপ্রার্থী। তিনি মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণাকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেছেন, “এই ঘোষণার পর প্রাণের সঞ্চার ঘটল। দ্রুত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার দাবি জানাচ্ছি।” এর সঙ্গে তাঁর প্রশ্ন, “যদিও কাদের নিয়োগ করা হবে তা নিয়ে ওঠা প্রশ্নের উত্তর এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি।” সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে টেট সংক্রান্ত বিষয়ে প্রায় দুই হাজারের উপর মামলা রয়েছে আদালতে। এখনও রায় ঘোষণা বাকি। যদিও চলতি মাসে রায় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, এই অন্তর্বর্তীকালীন পরিস্থিতিতে নিয়োগ ঘিরে একাধিক প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। এরই সঙ্গে আপার প্রাইমারির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ঠিক এক বছর আগে সংশ্লিষ্ট বিভাগের পক্ষ থেকে খালি পদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ হয়। তাতে প্রায় সাড়ে ১৪ হাজারের মত পদ দেখানো হয়েছে। যদিও এর থেকে বেশি সংখ্যক প্রার্থীর ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া পর্যন্ত শেষ হয়ে গিয়েছে। এদিকে ঘোষণা হয়েছে সাড়ে ১৬ হাজার নিয়োগ। সংখ্যার এই তারতম্য নিয়েও ধন্দ থাকছে। তাহলে কি পুনরায় ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া শুরু হবে? সব পর্যায়ে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের ক্ষেত্রেই বা কি হবে? এই ধরনের একাধিক প্রশ্নের উত্তর এখনও পর্যন্ত না মেলায় ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে প্রার্থীমহলে। এই চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত বাম নেতা ইন্দ্রজিৎ ঘোষের বক্তব্য, “নিয়োগ নিয়ে সংশয় কাটছে না। নির্বাচনের আগে এটা একটা ঘোষণা বই অন্য কিছু না।”