ফের বিদ্রোহ তৃণমূলের অন্দরে। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিধানসভায় গিয়ে স্পিকারের হাতে পদত্যাগপত্র তুলে দিলেন হরিপালের বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী বেচারাম মান্না। আগামিকাল শুক্রবার বেচারামের অনুগামীরাও সিঙ্গুরে গণ-পদত্যাগ করবেন বলে তাঁর ঘনিষ্ঠরা জানাচ্ছেন। হঠাত বেচারামের পদত্যাগে প্রবল চাপের মুখে তৃণমূল।
জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে বিধানসভায় এসে অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে পদত্যাগপত্র তুলে দিয়েছেন বেচারাম মান্না। যদিও তিনি জানিয়েছেন, কেউ পদত্যাগ করেননি।
অন্যদিকে জানা যাচ্ছে যে, পদত্যাগপত্র দেওয়ার পরই তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি ফোন করেন বেচারাম মান্নাকে। দ্রুত তাঁকে তৃণমূল ভবনে ডেকে পাঠানো হয়। সেখানে যান বেচারাম মান্না।
তার পর সুব্রত বক্সির সঙ্গে মুখোমুখি বৈঠকে বসে যাবতীয় সমস্যা মিটে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে কোনও বিবৃতি তৃণমূল বা বেচারাম মান্নার কাছ থেকে দেওয়া হয়নি।
প্রসঙ্গত, বেচারাম মান্নার ঘনিষ্ট মহল সূত্রে আরও খবর, সিঙ্গুর ব্লক সভাপতি থেকে সরিয়ে দেওয়া মহাদেব দাসকে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কয়েকদিন আগে মহাদেব দাসকে ব্লক সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় হুগলি জেলা কমিটি। একইসঙ্গে বেচারাম মান্না বিরোধী আরো একজন নেতাকে হরিপালে ফিরিয়ে নিয়ে আসার বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
সূত্রের খবর এই দুই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হরিপাল বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক তথা সিঙ্গুর কৃষি জমি রক্ষা কমিটি আন্দোলনের নেতা বেচারাম মান্না। বেচারামের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাতে এই নিয়ে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা হয় বেচারামের। এর পরেই বৃহস্পতিবার বিধানসভায় স্পিকারের হাতে পদত্যাগপত্র তুলে দিয়ে এসেছেন বেচারাম। সিঙ্গুরের আর বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের সঙ্গে বেচারামের কোন্দল দীর্ঘদিনের।
তবে দু-দিন আগেই ব্লক সভাপতিকে সরিয়ে দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। তিনি বলেছিলেন, “এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না করলে দল বদলে ভিন্ন দলে যাওয়ার ভাবনাচিন্তা করতে হবে। আমার ক্ষোভের কারণ, দুর্নীতিতে যুক্তরা আজ দল পরিচালনার দায়িত্বে, আর আমরা যাঁরা দুর্নীতিতে নেই তাঁদের অপমান, অবহেলা, বঞ্চনা করে তাড়িয়ে দেওয়া হলো!
আমার এখানকার সভাপতিকে সরানো মানছি না। দল আমাকে টিকিট দিলেও আমাকে বাধা দেওয়া হবে, ব্যর্থ প্রমাণ করে হারানোর চক্রান্ত হবে, অপমান করা হবে। যা অতীতেও হয়েছে। তাই প্রয়োজনে দল পরিবর্তন করতে হলে তা-ই করব।”