১৫ বছরের শাসনকাল। বেকারত্ব, করোনা পরিস্থিতি, আর্থিক দুরবস্থা। বিহার ভোটের আগে অনেকগুলি ফ্যাক্টর কাজ করছিল শাসক এনডিএ জোটের বিরুদ্ধে। বলা ভাল নীতীশ কুমারের বিরুদ্ধে। কিন্তু সেসব সত্বেও দুটি ফ্যাক্টর শেষপর্যন্ত লড়াইয়ে এনডিএ (NDA)। যার প্রথম এবং প্রধান অবশ্যই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। এবং দ্বিতীয় ফ্যাক্টর মহিলা ভোটার।
২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের পর অন্যান্য রাজ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জনপ্রিয়তা সামান্য কমলেও, বিহারে এখনও অটুট মোদি ম্যাজিক। বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল আরও একবার তা প্রমাণ করে দিল। বিহারে নীতীশ কুমারের (Nitish Kumar) বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা যে ছিল সেটা ভোটের আগে থেকেই বোঝা যাচ্ছিল। মুখ্যমন্ত্রীর জনসভায় ভিড় আগের তুলনায় কম হচ্ছিল। নীতীশের সভায় পিঁয়াজ ছোঁড়া, লালুপ্রসাদ জিন্দাবাদের মতো স্লোগান দিতেও শোনা গিয়েছে জনতাকে। কিন্তু ভোটের ফলে দেখা যাচ্ছে, এসব কিছুকে ছাপিয়ে গিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জনপ্রিয়তা। বিহারে দ্বিতীয় বৃহত্তম দল হিসেবে উঠে এসেছে বিজেপি। জোটসঙ্গী জেডিইউয়ের থেকেও অনেক বেশি আসন পেয়েছে গেরুয়া শিবির।
এখনও অবধি ভোটের ফল বলছে বিজেপি (BJP) একাই পাচ্ছে ৭৪টি আসনের আশেপাশে। অন্যদিকে জোটসঙ্গী জেডিইউ এগিয়ে ৪৩টির কাছাকাছি আসনে। মহাজোটের মধ্যে আরজেডি (RJD) এগিয়ে ৭৫টির কাছাকাছি আসনে। অর্থাৎ এত প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার মধ্যেও আরজেডিকে সমানে সমানে টক্কর দিয়েছে বিজেপি। শুধু তাই নয়, বিজেপির স্ট্রাইক রেট প্রায় ৬২ শতাংশ। আরজেডির সঙ্গে সরাসরি লড়াইয়ে বিজেপির প্রার্থীরা প্রায় ৭৪টি আসনে এগিয়ে। আর এসবই সম্ভব হয়েছে শুধু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জনপ্রিয়তার জেরে। এখানে দু’নম্বর ফ্যাক্টরটাও জরুরি। এবারে বিহারে পুরুষদের থেকে ৫ শতাংশ বেশি মহিলা ভোট দিয়েছিলেন। আর উজ্বলা যোজনা, মহিলাদের জনধন অ্যাকাউন্টে টাকা দেওয়া, এবং তিন তালাক আইন মহিলাদের মধ্যে নরেন্দ্র মোদির জনপ্রিয়তা অন্য মাত্রায় নিয়ে গিয়েছে। সেই সঙ্গে নীতীশও মদ বন্ধের পর থেকে মহিলাদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন।যা তাঁর পক্ষে গিয়েছে। তবে, প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার এই নির্বাচনে তাঁকে বাঁচিয়ে দিল নরেন্দ্র মোদির জনপ্রিয়তা।