রাষ্ট্রপতি শাসন নয়, বিকল্প হিসেবে ‘প্ল্যান-বি’ তৈরি রেখেছেন অমিত শাহ (Amit Shah)। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ সফরে এসেছেন প্রাক্তন বিজেপি সভাপতি। বাঁকুড়া ও কলকাতায় সংগঠনের বিভিন্ন অংশের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি কথা হয়েছে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়ের সঙ্গে। একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে ৩৫৬ ধারা জারি নিয়ে কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও মুকুল রায়ের (Mukul Roy) সঙ্গে কথা বলেছেন অমিত শাহ। তাঁদের বুঝিয়েছেন, কেন পশ্চিমবঙ্গে ৩৫৬ ধারা জারি করে ভোট করা উচিত হবে না। বরং পশ্চিমবঙ্গে দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব মিটিয়ে সাংগঠনিক ভাবেই তৃণমূলের মোকাবিলা করুক বিজেপি, এমনটাই চান অমিত শাহ। বিজেপি (BJP) নেতারা মনে করছেন, রাজ্যে ৩৫৬ ধারা জারি হলে পশ্চিমবঙ্গের মানুষের সহানুভূতি পেয়ে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের চক্রান্তের শিকার, এই বলে ভোট চেয়ে লাভবান হতে পারেন মমতা। তৃণমূল সুপ্রিমোকে এরকম সুযোগ দিতে নারাজ অমিত শাহ। তাই আপাতত ৩৫৬ ধারার দাবি থেকে সরে আসতে বলেছেন কৈলাস-মুকুলদের।
সংগঠনের নির্ভরতার পাশাপাশি আরও একটি পরিকল্পনা রয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর। সেই পরিকল্পনামাফিক, আগামী কয়েক মাসের তৃণমূল নেতৃত্বের ব্যাপক ভাঙন ধরাতে চায় গেরুয়া শিবির। আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে যাতে রাজ্যের মানুষের কাছে বার্তা যায় তৃণমূল একটি ক্ষয়িষ্ণু রাজনৈতিক দল। যা বিজেপির সঙ্গে লড়াই করতে অসমর্থ। ফলস্বরূপ একদিকে যেমন তৃণমূলকে অভ্যন্তরীণভাবে দুর্বল করা যাবে। তেমনি রাজ্যের মানুষের কাছে বার্তা দেওয়া যাবে তৃণমূলের (TMC) আগামী ভবিষ্যৎ নিয়ে। কার্যত ‘এক ঢিলে দুই পাখি’ মেরে পশ্চিমবঙ্গ দখলে কথা ভাবছেন অমিত শাহ।
তাই মুকুল রায় ও কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে (Kailash Vijayvargiya) অমিত শাহ বলেছেন ৩৫৬ ধারা দাবি ছেড়ে একক ভাবে বিধানসভা নির্বাচনে লড়াইয়ের বিষয়ে মনোনিবেশ করুন তারা। যাতে কোনও সাংগঠনিক ত্রুটির কারণে বিধানসভা নির্বাচনে দলকে ভুগতে না হয়। সম্প্রতি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও বিজেপি রাজ্য যুব মোর্চার সভাপতি সৌমিত্র খাঁর মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছিল। বর্তমানে যদিও সেই দ্বন্দ্ব মিটে গিয়েছে, কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনের আগে এমন ঘটনা প্রকাশ্যে আসুক চায় না বিজেপির দিল্লির নেতারা। তাই তৃণমূলের ভাঙন ধরানোর পাশাপাশি, দলের ত্রুটি-বিচ্যুতি ঠিক করতেও রাজ্য বিজেপি নেতাদের কড়া নির্দেশ দিচ্ছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।