বাংলায় পেঁয়াজের দাম এখন কেজি প্রতি ৮০ টাকা। পড়শি দেশ বাংলাদেশে পেঁয়াজের আকাল চলছে। বাংলাতেও সেই পরিস্থিতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছেন অনেকেই। এই অবস্থায় বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ বজায় রাখতে আদেশ জারি করল নবান্ন। তাতে স্পষ্ট করে বলা হল, কোনও পাইকারি বিক্রেতা ২৫ মেট্রিক টনের বেশি পেঁয়াজ মজুত করতে পারবেন না। কোনও খুচরো বিক্রেতা সর্বাধিক ২ মেট্রিক টন পেঁয়াজ মজুত করতে পারবেন। তার বেশি নয়। এর অন্যথা দেখলে সরকার ব্যবস্থা নেবে।
আলু, পেঁয়াজের দাম বাড়া নিয়ে এদিন দুপুরে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মুখোপাধ্যায়। প্রশাসনিক বৈঠকে বলেছিলেন, কেন্দ্রের আইনের জন্যই এরকম হচ্ছে। তিনি এও জানিয়েছিলেন, এ ব্যাপারে কেন্দ্রকে চিঠি পাঠাতে চলেছেন তিনি। হয় কেন্দ্র নিজে দাম নিয়ন্ত্রণ করুক, কিংবা রাজ্যকে সেই অধিকার দিক।
সম্প্রতি কেন্দ্র যে কৃষি নীতি প্রনয়ণ করেছে তাতে আলু, পেঁয়াজকে অত্যবশ্যকীয় পণ্যের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তবে ওই আইনেই বলা হয়েছে, পরিস্থিতি যদি বেগতিক হয় তবে রাজ্য সরকারের অধিকার থাকবে মজুত রুখতে পদক্ষেপ করার।
এর আগে গত বছরই পশ্চিমবঙ্গে এক সময়ে পেঁয়াজের দাম কেজি প্রতি ১০০ টাকায় পৌঁছে গেছিল। তখন অবশ্য কেন্দ্রের আইন ছিল না। সেই সময়ে মজুত বন্ধে রাজ্য সরকারও কোনও আদেশ জারি করেনি।
তবে এ বছর হল ভোটের বছর। পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, ভোট বছরে আলু, পেঁয়াজের দাম লাগামছাড়া ভাবে বাড়লে রাজ্যের ঘাড়েই দায় চাপার আশঙ্কা রয়েছে। বা এটাও হতে পারে, এই আদেশ জারি করে তৃণমূল সরকার দেখাতে চাইল, কেন্দ্রের জনবিরোধী নীতির কারণেই দাম বাড়ছিল। রাজ্য সরকার তা নিয়ন্ত্রণ করল। তবে সে ক্ষেত্রে অবশ্যই প্রশ্ন উঠতে পারে, আগে যখন দাম ১০০ টাকা ছাড়িয়েছিল তখন কেন এই ধরনের পদক্ষেপ করেনি রাজ্য।
এদিনের নির্দেশে বলা হয়েছে, কোথাও বেআইনি ভাবে পেঁয়াজ মজুতের খবর পেলে সেখানে বিনা নোটিশে তল্লাশি চালানোর অধিকার রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনের হাতে থাকবে। সেই মজুত পেঁয়াজ তখনই বাজেয়াপ্ত করা হবে। তা ছাড়া সরকারের এই নির্দেশ অমান্য করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে ওই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে।