পাহিমাংদেহিমহালক্ষ্মী – পঞ্চম পর্ব

পঞ্চম পর্ব

পৌষ সংক্রান্তির দিন মহিলারা সোদর ব্রত পালন করেন। সেই ব্রতে হাতে মাটি টিপে এক ধরনের ছোট পুতুল তৈরি করা হয় । তাকে #সোদরবুড়ি বলে। অনেকে আবার সোদর বুড়ো এবং বুড়ি উভয়কেই তৈরি করেন। রাঢ় অঞ্চলে একে #পৌষবুড়ি বলা হয়। বাড়ির ছোট ছোট ছেলেপিলেরা এই বুড়ো বুড়িকে বাড়ির বারদুয়ারের মাটি দিয়ে বানায়। মুখে পিঠে পুরে দেয়। অনেকেই একে প্রাচীন অলক্ষ্মী পূজার দৃষ্টান্ত বলেছেন। 


এমন ধরনের পূজার সঙ্গে ঝাড়খন্ড বঙ্গের সীমান্তে , মানে রাঢ় মালভূমি অঞ্চলের ডোম সম্প্রদায়ের এঁটো ঠাকুর পূজার বেশ মিল আছে। উচ্ছিষ্ট , বাসি, আবর্জনা দিয়ে এই ঠাকুরের পূজা হয়।  কোনো কোনো স্থানে এমন ধরনের পূজা পদ্ধতি দুর্গা পূজার শেষে বিজয়া দশমীর সন্ধ্যায় প্রচলিত আছে। সাঁঝবেলায় পূজিতা এই দেবীর নাম উচ্ছিষ্ট চন্ডালিনী। ইনিও দশমহাবিদ্যার এক বিদ্যা। কুলীন নাম দেবী মাতঙ্গী। তিনি চন্ডালদের দ্বারা উপাসিতা এবং কুলদেবী। তবে তন্ত্রমতে এই দেবীর পূজা হয়। এমনি তন্ত্র মতে গাণপত্য সম্প্রদায়ের মধ্যে উচ্ছিষ্ট গনেশের পূজা পদ্ধতিও কিছুটা এক রকম হয়। 

কোজাগরী লক্ষ্মীপূজায় সারারাত জেগে মহালক্ষ্মীর জন্য দীপ জ্বালিয়ে বসে থাকতে হয়। আশ্বিন মাসে পূর্ণিমায় এই পূজা করলে , রাজলক্ষ্মী, যশলক্ষ্মী , ভাগ্যলক্ষ্মী ও কুললক্ষ্মী অচলা থাকেন। এক রাত্রি জেগে রাজা দেখেছিলেন এনারা সকলে রাজগৃহ ও রাজাকে ত্যাগ করে চলে যাচ্ছেন। ধর্মের কথা আরেক কোজাগরী পূর্ণিমার রাত্রি জেগে পূজা করে রাণী পুনরায় তাঁদের গৃহে ফিরিয়ে এনেছিলেন। রাত্রি জাগ্রত হয়ে কৃষি উৎসব এবং অন্নদাত্রী ব্রহ্মময়ী মাকে উপাসনা করা একটি প্রাচীন প্রথা। সেই কোনো প্রাচীন কাল থেকে শুরু করে একসময় সনাতনী এবং সনাতন থেকে সৃষ্ট নানা মার্গের ব্যক্তি – যেমন বৌদ্ধ (বজ্রযান) , জৈন প্রমুখরা একত্রে দেবীর উপাসনা করতেন। 

ঋগ্বেদের শ্রী সূক্ত প্রমাণ করে যে কত সুপ্রাচীন কাল হতে মহাদেবী ব্রহ্মময়ী কত নামে অথচ এক নিরাকার সর্বব্যাপী হয়ে উপাসিতা হতেন। 

ওঁ হিরণ্যবর্ণাং হরিণীং সুবর্ণরজতস্রজাম্ ।

চন্দ্রাং হিরণ্ময়ীং লক্ষ্মীং জাতবেদো ম আবহ ॥ 

তাং ম আবহ জাতবেদো লক্ষ্মীমনপগামিনীম্ ।

য়স্যাং হিরণ্যং বিন্দেয়ং গামশ্বং পুরুষানহম্ ॥

 অশ্বপূর্বাং রথমধ্যাং হস্তিনাদপ্রবোধিনীম্ ।

শ্রিয়ং দেবীমুপহ্বয়ে শ্রীর্মাদেবীর্জুষতাম্ ॥ 

কাং সোস্মিতাং হিরণ্যপ্রাকারামার্দ্রাং জ্বলন্তীং তৃপ্তাং তর্পয়ন্তীম্ ।

পদ্মে স্থিতাং পদ্মবর্ণাং তামিহোপহ্বয়ে শ্রিয়ম্ ॥ 

এই যে দেবীর অন্নদাত্রীর উপাসনা সেতো সুবিশাল ভারত ছাড়িয়ে মেক্সিকো , পেরু , আফ্রিকার মানুষজনও শারদ পূর্ণিমার রাত্রে পালন করেন। সেখানের প্রাচীন মানুষজন দেবী রূপে ভুট্টার ছড়াকে পূজা করেন। নানা খাবার রন্ধন করে তাঁরা শস্যদেবীর কাছে উৎসর্গ করেন। কোনো জায়গায় দেবীর উদ্দেশ্যে আগুন ঘিরে এলো চুলে মেয়েরা সারারাত নৃত্য করেন। ইতিহাস ঘাঁটলে এসব নিয়ে বিতর্ক ওঠে । অনেকে বলেন এসব মানুষজন হাজার হাজার হাজার হাজার বছর পূর্বে ভারতের দক্ষিণ উপকূল থেকে গিয়ে সেথায় বসত বেঁধেছিল। যাক , এখানে না হয় আলোচনা করলাম না সে সব বির্তক। 

দেবী লক্ষ্মী নানা মূর্তি , নানা মুদ্রা ভারাতের নানা স্থানে নানা সভ্যতায় প্রাপ্ত হয়েছে সে কথা পূর্বেই বলেছি। তবে সব থেকে অধিক দেবী লক্ষ্মীর রূপ ব্যবহার হয়েছিল গৌড়দেশে অর্থাৎ বঙ্গে, মহারাজ শশাঙ্কের সময় কালে। তাই অঙ্গ , বঙ্গ , কলিঙ্গে মহামায়া মহাদেবী শারদ পূর্ণিমার রাত্রে উপাসিতা হন। তবে কিনা দেবী লক্ষ্মীর প্রাচীন মূর্তি যেমন কাশ্মীরে প্রাপ্ত হয়েছে তেমন সেই সুদূর পম্পেতেও প্রাপ্ত হয়েছে। সেই মূর্তি পম্পেই লক্ষ্মী নামে বিখ্যাত। ভিসুভিয়াসের লাভায় ঢাকা পড়া পম্পেই ধ্বংসাবশেষ থেকে সেই হাতির দাঁতের তৈরি সেই অপূর্ব লক্ষ্মীমূর্তিটি আবিষ্কৃত হয়েছিল প্রায় অক্ষত ভাবে। প্রথম শতাব্দীতে ভারত ও ইতালির মধ্যে পণ্য ও সংস্থার বাণিজ্যিক ব্যবসায়ের অনুস্মারক এই মূর্তি। বাণিজ্যে বসতে লক্ষ্মী …. তাই ভারতীয় উপকূল থেকে বৃহত্তর ভারত হয়ে সুদূর পেরু , মেক্সিকো এমনকি রোমান  সাম্রাজ্য সর্বত্র তিনি সোনার আঁচল ছড়িয়ে বসেছিলেন। 

শ্রীমন্মন্দকটাক্ষলব্ধ বিভব ব্রহ্মেন্দ্রগঙ্গাধরাং ।

ত্বাং ত্রৈলোক্য কুটুম্বিনীং সরসিজাং বন্দে মুকুন্দপ্রিয়াম্ ॥

সিদ্ধলক্ষ্মীর্মোক্ষলক্ষ্মীর্জয়লক্ষ্মীস্সরস্বতী ।

শ্রীলক্ষ্মীর্বরলক্ষ্মীশ্চ প্রসন্না মম সর্বদা ॥

বরাংকুশৌ পাশমভীতিমুদ্রাং করৈর্বহন্তীং কমলাসনস্থাম্ ।

বালার্ক কোটি প্রতিভাং ত্রিণেত্রাং ভজেহমাদ্যাং জগদীশ্বরীং তাম্ ॥

কার্তিক সংক্রান্তিতে রাঢ় এবং সংলগ্ন অঞ্চলে এক ধরনের পার্বণ হয়। তার নাম #মুঠ_আনা। কার্তিক সংক্রান্তির কুয়াশা মাখা , হিম ভেজা ভোরে কৃষক স্নান করে , নতুন জামা পরে , নিড়ানি নিয়ে মাঠে হাজির হয়। জমির ঈশান কোণের আড়াই আলুই ধান , প্যাঁচ করে কেটে ছালের কাপড় জড়িয়ে মাথায় নিয়ে চুপটি করে সোজা বাড়ি। কার্তিক মাসের যে লক্ষ্মী পূজা হয় , সেখানে মা লক্ষ্মীর আটনের পাশে  কলা বউয়ের মতো রেখে দিয়ে শুরু হয় পূজা। পূর্ব বঙ্গে অবশ্য অন্য নিয়ম পালন হয়। বাতা গাছের পাঁচটা ডগি আর মাঙ্গলিক উপাচার নিয়ে সবাই ধানি জমিতে গিয়ে , বাতার ডগায় সিঁদুর মাখায় । পাঁচটা ধানের ছড়া তাতে বেঁধে নিয়ে লক্ষ্মীর সঙ্গে পূজা আরম্ভ করেন ঘটা করে। #ময়মনসিংহ_গীতিকায় #মলুয়ার_পালায় আছে –
পঞ্চগাছি বাতার ডুগুল হাতেতে লইয়া।

মাঠের মাঝে যায় বিনোদ বারোমাস্যা গাহিয়া।।

অঘ্রাণ মাস পড়তে না পড়তে মাঠের রং বদলাতে শুরু করে ।সবুজ ধান ক্রমশ পাকা সোনায় পরিণত হয়ে লালচে রঙ লাগে। উদ্ধত ঋজু ধান এবার সকল অহংকারে লুপ্ত করে ফলভারে নত। শুরু হয় ধান কাটা।তার আগে শুরু হবে ধান কাটা তার আগেই লঘু ধানে অর্থাৎ নতুন ধান্যে হবে নবান্ন তোমার ভবনে ভবনে….

 এরপরই আমন ধান কাটা শুরু হয়ে যায়।

পৌষ তোদের ডাক দিয়েছে, আয় রে চলে,   আ য় আ য় আয়।
ডালা যে তার ভরেছে আজ পাকা ফসলে,   মরি   হায়   হায়   হায়॥
          হাওয়ার নেশায় উঠল মেতে   দিগ্‌বধূরা ধানের ক্ষেতে–
রোদের সোনা ছড়িয়ে পড়ে মাটির আঁচলে,   মরি   হা য়   হা য়   হায়॥

 এখন অবশ্য পৌষের ডাকের অপেক্ষা আর কেউ করেনা । নবান্নের আগে মাঠ ফাঁকা হয়ে যায় । গরুর গাড়ির বদলে ট্রাক্টর নামক যন্ত্রদানবের গর্জন …..অথচ কয়েক দশক আগেও পৌষ মাস মানে এক আলাদা অনুভূতি ছিল। লক্ষ্মী মাস বলে কথা ।ধীরে-সুস্থে ধান কাটা । তারপর মাঠে মাঠে ধান সাজানোর সহজ ছন্দ। দেখলে চোখ জুড়িয়ে যেতো।  যেন কোনো ছন্দময় কবিতা । রাতে মাঠ পাহাড়ার জন্য কুঁড়ে তৈরি করা। সেই ধান দিয়ে একটা গুহার মত বানানো ।  মশাল গুলো জ্বলন্ত চোখ। চোর প্রতিহত করার জন্য সেই মান্ধাতার আমলের তেল মাখানো গেঁটে লাঠি। সে এক হৈ হৈ রৈ কান্ড। রাত পাহাড়ার হাঁকডাক।  সেই ডাক ক্রমশ কণ্ঠস্বরে মিলিত হয়ে, পৌষের নিকষ কালো রাত পেরিয়ে ছড়িয়ে পড়ত থেকে মাঠে থেকে মাঠে, গ্রাম  থেকে গ্রামান্তরে। 

বাতাসে ধানের শব্দ শুনিয়াছি- ঝরিতেছে ধীরে ধীরে অপরাহ্ন ভ’রে;

সোনালী রোদের রঙ দেখিয়াছি-দেহের প্রথম কোন্‌ প্রেমের মতন

রূপ তার- এলোচুল ছড়ায়ে রেখেছে ঢেকে গুঢ় রূপ-আনারস বন;

ঘাস আমি দেখিয়াছি; দেখেছি সজনে ফুল চুপে-চুপে পড়িতেছে ঝ’রে

মৃদু ঘাসে; শান্তি পায়; দেখেছি হলুদ পাখি বহুক্ষণ থাকে চুপ ক’রে,

ধান কাটা সাড়া হলে এবার গরুর গাড়ি করে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার পালা । মাঠে মাঠে গো গাড়ি চলাচল করার জন্য আল কেটে দিয়ে গোল পড়ে যেত । মানে গোশকট চলাচলের সাময়িক রাস্তা। দুদিকে ধানের পালা সাজিয়ে, মাঝে চাপ  বাঁশ দিয়ে এঁটে, গরুর গাড়ি তখন মৃদুমন্দ ছন্দে বাড়ির দিকে।চাষির হাতে পাঁচন আর মুখে গরম বচন। 

 ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা ধানের শীষ কুড়োবার জন্য ধান গাড়ির পিছনে পিছনে ছুট লাগাতো। ফিরতি পথে ধানের গাদায় বসে থাকার বাড়তি সুখ । কচি ছেলেপুলেদের হাতে তখন কাঁচা পয়সা। এই সমই গ্রামে গ্রামে রাতে বসত অস্থায়ী দোকান । পাউরুটি,  হাতে তৈরি বিস্কুট , লেড়ো , চানাচুর , আচার আর কাঁচের মার্বেল। 

মাঠে মাঠে পড়ে থাকা ধানের শীষ কুড়িয়ে নিয়ে বিক্রি করা সে সময় এক দারুন ব্যাপারে ছিল । ধান কেটে উঠে গেলে ছেলেপুলের দল কোদাল , শাবল নিয়ে মাঠে ইঁদুরের গর্ত খুঁজে বেড়াতো।  মেঠো ইঁদুরের দল প্রচুর ধান কেটে রেখে গর্তে দিত ।

শেষ ধান কাটা এবং বাড়ি নিয়ে যাওয়ার সময় একটি বিশেষ নিয়ম রীতি পালন করা হতো। এখনো হয় বাঙ্গালী গৃহে। মুঠো আনা দিয়ে যে ধান কাটা শুরু হতো…. ফসল কাটার উৎসব সে কথা বলেছি । সেই উৎসব শেষ হতও মুঠো আনা নিয়ম পালন করে।  তবে ঈশান কোণ থেকে নয়, ধান কাটা একেবারে শেষ লগ্নে জমির নৈঋত কোণ থেকে আড়াই আলুই মতো ধান উপড়িয়ে নিয়ে আঁটি বাঁধা শেষ । শেষ যে গো শকট , তাতে করে সেই আঁটিকে পবিত্রভাবে নিয়ে আসার রীতি।

এরপর চাষি গৃহিণী গরুর খুরে তেল জল দিয়ে প্রণাম করেন, ধানের আঁটিকে শঙ্খ বাজিয়ে ,উলু দিয়ে পূজা করে  একটি গাছের ডালে ঝুলিয়ে রাখেন। এরই নাম #দাওনের_আঁটি। সমস্ত ধান ঝাড়াই হলে এই আঁটিকে  তিন শাখা যুক্ত কুলের ডাল থেকে নামিয়ে এনে মাটিতে তিনবার ঝেড়ে নিয়ে , আড়াই মুঠি ধান গোলায় রাখা হয়। এই উপলক্ষে ক্ষেতে খাটা মুনিশ আর রাখালকে নতুন গামছা, ধুতি উপহার দেওয়ার প্রথাও আছে। এইদিন গৃহস্থ ঘরে মা লক্ষ্মীর পূজা দিয়ে খাওয়া দাওয়ার বিশাল আয়োজন করা হয়। 

মুনিশ জব্দ জাওনে

খাইয়ে জব্দ দাওনে।

দাওন অর্থাৎ কৃষিলক্ষ্মীর স্নেহ আশীর্বাদ। দাওন শব্দের উৎপত্তি নিয়ে বেশ বিতর্ক আছে। সে সব নিয়ে বলবখন যেদিন মাঠ পাঁচালি বা পৌষ ,অঘ্রাণ মাসের আরো ব্রত নিয়ে লিখব। এই দাওন পদ্ধতি কিন্তু কেবল বঙ্গে নয় , ভারতের সকল সনাতনী কৃষক পরিবারে প্রচলিত আছে। কেবলমাত্র ভারত কেন প্রাচীন যেকোনো দেশ বা অঞ্চলের অধিবাসীদের মধ্যে এই প্রথা প্রচলিত ছিল । এখনো ইউরোপ, পেরু, ব্রাজিল, মেক্সিকো , আফ্রিকা , বৃহত্তর ভারতের বহু অংশে বেশ কিছু মানুষ এই প্রথা অনুসরণ করেন। 

সুপ্রাচীন কাল হতে সকল  খাদ্যবস্ত্রবাসস্থানের নিমিত্ত কেবলমাত্র প্রকৃতির উপরই নির্ভরশীল। সেই অসীম আদি প্রকৃতির ইচ্ছা হলে তবেই মানব বা জীবকুল বেঁচে থাকে। প্রকৃতি মাতার অভ্যন্তরেই তো নানা রূপে থাকে অমৃত। চাষ আবাদ সবই তাঁর সেই অমৃতের ফসল। সবটাই সেই মহামায়া মহাদেবী মহালক্ষ্মী মহাবিদ্যা ব্রহ্মময়ীর সুপ্রসন্নতার উপর নির্ভর। তাই ফসল ঘরে তোলা একধরনের দাঁও ছাড়া আর কি? তাই তো,  কোজাগরী শারদ পূর্ণিমায় রাত্রি ব্যাপী জাগ্রত থেকে দাঁও নিতে হয়, অর্থাৎ ভাগ্যলক্ষ্মীর কৃপালাভ করতে হয়। ধানকাটার পড়ে ফাঁকা মাঠে মন হুহু করে। কেবল যেন জীবনানন্দ কবিতার ছন্দ …

যে-পাতা সবুজ ছিলো- তবুও হলুদ হ’তে হয়,-
শীতের হাড়ের হাত আজো তারে যায় নাই ছুঁয়ে;-
যে-মুখ যুবার ছিলো- তবু যার হ’য়ে যায় ক্ষয়,
হেমন্ত রাতের আগে ঝ’রে যায়,- প’ড়ে যায় নুয়ে;-
পৃথিবীর এই ব্যথা বিহ্বলতা অন্ধকারে ধুয়ে
পূর্ব সাগরের ঢেউয়ে,- জলে-জলে, পশ্চিম সাগরে
তোমার বিনুনী খুলে,- হেঁট হ’য়ে পা তোমার ধুয়ে,-
তোমার নক্ষত্র জ্বেলে,- তোমার জলের স্বরে-স্বরে

বয়ে যেতে যদি তুমি আকাশের নিচে,- নীল পৃথিবীর ’পরে!

শীতের ঠোঁট ফাটা রুক্ষ শুষ্ক দুপুর। ধান গাড়ির ধীর চলাচল। চিল ডাকা স্তব্ধ দুপুরে পাতা ঝড়ার আওয়াজ। বহুরূপীর আগমন। কচি ছেলেমেয়েরা ধুলো উড়িয়ে মাঠ ভেঙে ছুটে চলে। হাতে কুড়োনো ধানের শীষ। চোখে ।মুখে এক অজানার আনন্দ। প্রান্ত থেকে সীমান্ত হয়ে দিগন্তের পথে অপু দুর্গারা মাঠ ভেঙে ছুটে চলে…..

ক্রমশঃ
©দুর্গেশনন্দিনী
তথ্যঃ ১ .শ্ৰী শ্ৰী চণ্ডী

২. মেয়েদের ব্রত কথা

৩. শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা

8.বাংলার মুখ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.