বিষ্যুদবার বাংলায় সভা করতে আসার আগেই সকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা করেছিলেন, কলকাতায় ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের পঞ্চধাতুর একটি মূর্তি নির্মাণ করা হবে।
ইঙ্গিতটা তাতেই ছিল। বোঝা গেছিল, এ দিন প্রচারে এসে সে ব্যাপারে নির্ঘাত তিনি কিছু বলবেন। হলোও তাই। বিকেলে মথুরাপুরে দলের সভা থেকে প্রধানমন্ত্রী এ দিন অভিযোগ করেন, “দিদি আর তাঁর ভাইপো বাংলাকে তাঁদের জমিদারি ভেবে বসেছে। দিদির গুণ্ডারা হিংসা ছড়াচ্ছে। আমি দাবি করছি, বিদ্যাসাগর কলেজের ভিতর যে সিসিটিভি ছিল, তার ফুটেজ প্রকাশ করা হোক।”
এখানেই না থেমে মোদী আরও বলেন, “কিন্তু এখন অন্য কথাও কানে আসছে। শুনতে পাচ্ছি, যে ভাবে ওরা সারদা কাণ্ডে তথ্য প্রমাণ লোপাট করেছিল, সে ভাবেই বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজও লোপাটের চেষ্টায় রয়েছে।”
প্রধানমন্ত্রীর আগেই বিজেপি অভিযোগ করেছে, তৃণমূলই বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙেছে। এমনকী বুধবার ফটো ও ভিডিয়ো ফুটেজ প্রকাশ করে বিজেপি দাবি করেছে, যে ছেলেদের দেখা গিয়েছিল ভাঙচুর চালাতে, তাদেরই পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দেখা যায়। তা শুনে এ দিন দিদি আবার বলেছেন, বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙায় তৃণমূলের হাত ছিল প্রমাণ করতে পারলে তিনি রাজনীতি ছেড়ে দেবেন। বরং এ ঘটনার দায় বিজেপি-র উপর চাপিয়ে তাদের বাংলার সংস্কৃতির বিরোধী বলে প্রতিপন্ন করতে মরিয়া মমতা।
দিদি-র রাজনৈতিক কৌশল বিজেপি যে আঁচ করতে পারছে না তা নয়। সম্ভবত সেই কারণেই প্রধানমন্ত্রী এ দিন দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেন, “বিদ্যাসাগরের মূর্তি যারা ভেঙেছে, তারা ঘোর পাপ করেছে। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। তাদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে।”
বুধবারের মতই এ দিনও বারবার নাম না করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণের নিশানা করেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে বক্তৃতার মাঝে বার বার বলেন, দিদি-কে গুণ্ডে এই করেছে, দিদিকে গুণ্ডে ওই করেছে।
মোদী আরও বলেন, আজ সকালেই শুনেছি দিদি বলেছেন, আমাকে জেলে পাঠাবেন। বিজেপি পার্টি অফিস দখল করে নেবেন। ব্যাপার হল, সব গায়ের জোরে দখল করে নেওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়েছে বুয়া-ভাতিজার। সে জন্য বিজেপি পার্টি অফিসও দখল করে নিতে চাইছে। কিন্তু এ বারের ভোটে ওঁদের লোটা কম্বল গুছিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেবে মানুষ।