আত্মনির্ভর ভারতের সোপান হবে বাংলা থেকেই, পুজোর শুভেচ্ছাবার্তায় বললেন প্রধানমন্ত্রী

জগতজুড়ে উদার সুরে, আনন্দগান বাজে…সুর বেঁধে দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় (Babul Supriyo)। বাবুলের বেঁধে দেওয়া সুরে রীতিমতো উৎসবের মেজাজে ধরা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্রে মোদি (Narendra Modi)।পরনে খাদির পাঞ্জাবি এবং ধুতি। সল্টলেকের ইজেডসিসির পুজো ভারচুয়াল উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী বললেন, “আপনাদের সকলকে জানাই শ্রী শ্রী দুর্গাপুজোর পাশাপাশি কালীপুজো এবং দীপাবলির প্রীতি ও শুভেচ্ছা। দুর্গাপুজোর এই পবিত্র সময়ে আপনাদের কাছে আসতে পেরে আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি। ভক্তির টানে আমার মনে হচ্ছে আমি দিল্লিতে নয়, আপনাদের মধ্যে বাংলাতেই বসে আছি। এই কটা দিন গোটা দেশই যেন বাংলাময় হয়ে যায়। দুর্গাপূজো (Durga Pujo) দেশের একতার পুজো, দেশের সম্পূর্ণতার প্রতীক।”

উৎসব এবং ঐতিহ্যপ্রেমী বাঙালির মন ছুঁয়ে যেতে এদিন বাংলার মহাপুরুষদের সুখ্যাতি করলেন প্রধানমন্ত্রী। স্বামী বিবেকানন্দ, শ্রী চৈতন্যদেব, মা আনন্দময়ী, অনুকুল ঠাকুর, গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, শরতচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, গুরুচাঁদ ঠাকুর, হরিচাঁদ ঠাকুর, পঞ্চানন বর্মা থেকে শুরু করে অনেকের নামই শোনা গেল প্রধানমন্ত্রীর মুখে। সেই সঙ্গে শোনা গেল ক্ষুদিরাম, প্রফুল্ল চাকিদের মতো শহিদদের নামও। বললেন,”আজকের ভারত গঠনে বাংলার এত অবদান, এত মানুষের অবদান, যাদের নাম নিতে নিতে সন্ধে হয়ে যাবে। ভারতমাতার ছবি সবার আগে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর বানিয়েছিলেন। বাংলার মানুষ দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে দিয়েছে, আজও দিচ্ছে, আমার বিশ্বাস ভবিষ্যতেও দেশের নাম এভাবেই উজ্বল করতে থাকবেন।”

তবে উৎসবের মরশুমে সচেতনতার বার্তাও দিয়েছেন মোদি। তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে,”এবার আমরা সকলে করোনার সংকটে দুর্গাপুজো করছি। মা দুর্গার ভক্ত, পুজো উদ্যোক্তারা সকলেই ধৈর্য দেখিয়েছেন। আয়োজন হয়তো সীমিত, সংখ্যা হয়তো কম, কিন্তু পবিত্রতা ভক্তি, আগের মতোই অক্ষয়, এটাই তো বাংলার সংস্কৃতি। বাংলায় দুর্গাকে নিজেদের মেয়ের মতো দেখা হয়। ঘরের মেয়ের মতো স্বাগত জানানো হয়। সন্তান আর মায়ের এই সম্পর্কই তো আমাদের ঘরে ঘরে প্রয়োজন। মা দুর্গা দুঃখ, দারিদ্র, দুর্গতি দূর করেন। সেজন্য কোনও গরিবের দুর্গতি দূর না করলে দুর্গাপূজো সম্পূর্ণ হয় না।” বিজেপির আদর্শ এটাই দেশজুড়ে আজ মহিলাদের শশক্তিকরণের অভিযান একইভাবে চলছে। জনধন, মুদ্রা যোজনা, বেটি বাঁচাও-পড়াও অভিযান, গর্ভাবস্থায় বিনামূল্যে চিকিৎসা, উজ্বলা যোজনা, মাতৃত্বকালীন ছুটি ১২ সপ্তাহ থেকে ৩৬ সপ্তাহ করা, গভীর খাদে, নাইট শিফটে কাজ করার অধিকার, প্রতিটি ক্ষেত্রেই মহিলাদের শশক্তিকরণের কাজ চলছে।

পরিশেষে প্রধানমন্ত্রীর মুখে শোনা যায় আত্মনির্ভর ভারত এবং সোনার বাংলার কথা বলেন, “আত্মনির্ভর ভারতের সংকল্প পূরণ করতে হলে, সোনার বাংলার স্বপ্নপূরণ করতে হবে। এই বাংলা থেকেই আত্মনির্ভর কৃষক, আর আত্মনির্ভর ভুমির আওয়াজ উঠেছে। আত্মনির্ভর ভারতের সোপান বাংলা থেকেই হবে। এখানকার সমৃদ্ধি, সম্পূর্ণতকে আবার শীর্ষে পৌছাতে হবে। পূর্ব ভারতের উন্নয়নের জন্য পূর্বোদয় পরিকল্পনা নিয়েছে কেন্দ্র। আর এই পূর্বোদয়ের জন্য বাংলাকে সবার চেয়ে বেশি উন্নত হতে হবে। পূর্বোদয়ের কেন্দ্র হতে হবে এই বাংলাকে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.