জল্পনা-কল্পনা চলছিলই। অবশেষে প্রতীক্ষার অবসান হল। ভারতীয় নৌবাহিনীর অন্তর্ভুক্ত হল করভেট গোত্রের অ্যান্টি-সাবমেরিন যুদ্ধজাহাজ আইএনএস কাভারাত্তি।
বিশাখাপত্তনমের ডকে আইএনএস কাভারাত্তিকে সরকারিভাবে নৌবাহিনীর অন্তর্ভুক্ত করা হল। হাজিল ছিলেন সেনাপ্রধান মনোজ মুকুন্দ নারাভানে। গালওয়ান সংঘাতের পরে দক্ষিণ চিন সাগরে আরও আগ্রাসী চিনের নৌবহর। ভারতও ইতিমধ্যেই সেখানে নিজেদের রণতরী পাঠিয়েছে। চিনের হাতে এখন আছে ৫০টি সাবমেরিন। যুদ্ধজাহাজের সংখ্যা তিনশোরও বেশি। আগামী দশ বছরের মধ্যে সেই সংখ্যা পাঁচশোতে গিয়ে ঠেকবে। তাই চিনের মোকাবিলায় ভারতের সামরিক ভাণ্ডারকে আরও শক্তিশালী করে তোলাই লক্ষ্য। বিশেষত সমুদ্রপথে চিনের একাধিপত্য কায়েমের চেষ্টা রুখে দিতে করভেট গোত্রের স্টিলথ যুদ্ধজাহাজের প্রয়োজন নৌবাহিনীর।
ভারতে প্রথম ডুবোজাহাজ বিধ্বংসী স্টিলথ করভেট হল আইএনএস কামোর্তো (পি-২৮)। তাছাড়াও করভেট গোত্রের আইএনএস কদমত (পি-২৯) ও আইএনএস কিলতান (পি-৩০) রয়েছে ভারতের হাতে। আইএনএস কাভারাত্তি (পি-৩১) নৌসেনায় যোগ দেওয়ার পরে করভেট গোত্রের যুদ্ধজাহাজের সংখ্যা বেড়ে হল পাঁচটি।
প্রজেক্ট-২৮ এ এই যুদ্ধজাহাজ তৈরি করেছে কলকাতার গার্ডেন রিচের শিপবিল্ডার অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার। এটি হল কামোর্তো ক্লাস করভেট। ২০১৫ সালে এই যুদ্ধজাহাজ তৈরি হয়। লক্ষদ্বীপের রাজধানীর নামে এই যুদ্ধজাহাজের নাম রাখা হয়েছে। সমুদ্রপথে শত্রুপক্ষের ডুবোজাহাজ গোপনে হানা দিলে তাকে রুখে দিতে পারে আইএনএস কাভারাত্তি।
এই যুদ্ধজাহাজের ডিজাইন তৈরি করেছে ডিরেক্টরেট অব ন্যাভাল ডিজাইন। ৯০ শতাংশ ভারতীয় প্রযুক্তিতে তৈরি। পরমাণু যুদ্ধ, জৈব ও রাসায়নিক যুদ্ধেও অংশ নিতে পারে এই যুদ্ধজাহাজ।
ভারতীয় নৌবাহিনীর ক্ষেত্রে বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ ছাড়াও রয়েছে ১৬টি ডুবোজাহাজ, ১৪ ডেস্ট্রয়ার, ১৩টি ফ্রিগেট, ১০৬টি নজরদারি ও উপকূল এলাকায় যুদ্ধ করতে সক্ষম সশস্ত্র জাহাজ, ৭৫টি যুদ্ধ জাহাজ, রয়েছে ৬৭ হাজার সেনাও। ভারতে বিমানবাহী রণতরী আইএনএস বিক্রমাদিত্য। ২০১৪ সালে রাশিয়ার থেকে এই এয়ারক্র্যাফ্ট ক্যারিয়ারটি কেনে নৌসেনা। এই যুদ্ধজাহাজে ৩০ টি মিগ যুদ্ধবিমান ও ছ’টি হেলিকপ্টার রাখা যেতে পারে। ২৮৪ মিটার লম্বা ও ৬০ মিটার উচ্চতার এই যুদ্ধজাহাজ ২০ তলা বাড়ির সমান উঁচু, ওজন ৪০০০০ টন। পৃথিবীতে খুব কম দেশের কাছেই আছে বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ বা এয়ারক্র্যাফ্ট ক্যারিয়ার।