করোনা পরিস্থিতিতে উৎসবের মরশুমে ভিড় নিয়ে চিন্তিত কলকাতা হাইকোর্ট। পুজো বন্ধ মামলার শুনানিতে সোমবারও আশঙ্কা প্রকাশ করল বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। তবে মামলায় শেষ পর্যন্ত কী রায় হয়, সেদিকেই তাকিয়ে সকলে।
পর্যবেক্ষণে হাইকোর্ট জানিয়েছে, পুজোর সঙ্গে বাঙালির আবেগ জড়িত রয়েছে। তাই পুজোয় মণ্ডপে দর্শনার্থীদের প্রবেশাধিকার থাকলে সেখানে জড়ো হবেনই বাঙালি। এছাড়া ইতিমধ্যে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত এবং প্রচারিত ছবি দেখেই ভিড় কতটা হতে পারে, সে সম্পর্কে সম্যক ধারণা করা যাচ্ছে। রাজ্য সরকারের তরফে পুজোয় ভিড় সামাল দেওয়ার জন্য ৩০ হাজার পুলিশের কথা বলা হয়েছে। তবে তা ভিড় সামাল দেওয়ার জন্য যথেষ্ট নয়। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে আদালতের মত, সেক্ষেত্রে পুজো মণ্ডপগুলিকে কনটেইনমেন্ট জোন (Containment Zone) করে দেওয়া হোক। এছাড়াও মণ্ডপে দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হোক। ওই মণ্ডপগুলিতে শুধুমাত্র পুজো উদ্যোক্তাদের ঢোকার বন্দোবস্ত থাক। তবে সেক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের কাছে সংশ্লিষ্ট ক্লাব কর্তৃপক্ষকে তাঁদের সদস্যদের তালিকা জমা দিতে হবে।
করোনা পরিস্থিতিতে মাসের পর মাস বন্ধ স্কুল, কলেজ। বহু মানুষ হারিয়েছেন প্রাণ। এই পরিস্থিতিতে পুজো হোক কিন্তু উৎসব নয়। এই দাবি জানিয়েই কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেন বিদ্যুৎ দপ্তরের প্রাক্তন কর্মী অজয়কুমার দে। হাওড়ার বাসিন্দা ওই ব্যক্তির মামলারই শুনানি চলছে দিনকয়েক ধরেই।
সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব এবং মুখ্যসচিবকে ভিড় নিয়ন্ত্রণের ব্লু প্রিন্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। তবে সোমবার প্রথম পর্যায়ের শুনানি পর্যন্ত রাজ্যের তরফে কোনও ব্লু প্রিন্ট জমা দেওয়া হয়নি। সেক্ষেত্রে দ্বিতীয় পর্যায়ে রাজ্যের তরফে ভিড় নিয়ন্ত্রণের ব্লু প্রিন্ট জমা দেওয়া হয় কিনা, সেদিকে নজর রয়েছে সকলেরই।
পুজোয় সতর্ক না হলে সংক্রমণ আরও বাড়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। সে কথা মাথায় রেখেই ভিড় সামাল দিতে কলকাতা হাইকোর্ট পুজো সংক্রান্ত মামলায় কী সিদ্ধান্ত নেয় সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছেন আপামর রাজ্যবাসী।