ভারতে করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পরে যখনই কেন্দ্রের কাছে প্রশ্ন করা হয়েছে, দেশে গোষ্ঠী সংক্রমণ বা কমিউনিটি ট্রান্সমিশন শুরু হয়েছে কিনা, বারবার উত্তর এসেছে, না। কখনও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক, কখনও বা ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ বা আইসিএমআরের তরফে জানানো হয়েছে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে সংক্রমণের ছবিটা আলাদা। তাই বলা যাবে না দেশে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন শুরু হয়েছে। অবশেষে সেই দাবি থেকে সরে এল কেন্দ্র। স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডক্টর হর্ষ বর্ধন নিজেই জানালেন, ভারতে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন শুরু হয়েছে।
রবিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের সাপ্তাহিক অনুষ্ঠানে ডক্টর হর্ষ বর্ধন বলেন, “ভারতে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন শুরু হয়েছে। কিন্তু কিছু রাজ্য ও জেলাতেই সেগুলি সীমাবদ্ধ। বিভিন্ন রাজ্যের কিছু নির্দিষ্ট এলাকাতেই কমিউনিটি ট্রান্সমিশন দেখা গিয়েছে। তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের কিছু জনঘনত্ব পূর্ণ এলাকায় তা দেখা যাচ্ছে। কিন্তু গোটা দেশে তা নয়। কিছু নির্দিষ্ট রাজ্যের নির্দিষ্ট জেলাতেই তা দেখা যাচ্ছে।”
পশ্চিমবঙ্গে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন যে শুরু হয়েছে সেই কথা অবশ্য আগেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছেন। তার পরে একই কথা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর মুখেও শোনা গেল।
হর্ষ বর্ধন আরও জানিয়েছেন, দেশে করোনাভাইরাসের মিউটেশন দেখা যাচ্ছে না। অর্থাৎ ভাইরাস নিজের চরিত্রে তেমন বদল ঘটাচ্ছে না। তার ফলে ভ্যাকসিন ভালভাবে কাজ করতে পারে বলেই জানিয়েছেন তিনি। স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, খবরের কাগজের মাধ্যমে সংক্রমণ ছড়ানোর কোনও প্রমাণ এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তাই এখনও খবরের কাগজ ব্যবহারে কোনও সমস্যা নেই।
অবশ্য সামনের উৎসবের মরসুম নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, কেরলে অগস্ট মাসের শেষে ওনাম উৎসব পালন হয়েছিল। তার পরেই সংক্রমণ ক্রমাগত বাড়ছে। উৎসবের খেসারত দিতে হচ্ছে কেরলকে। সামনে উৎসবের মরসুম। গোটা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তা পালন করা হবে। কিন্তু এই সময় স্বাস্থ্যবিধি না মানলে তার ফলে খারাপ হতে পারে। সংক্রমণের একবার দ্বিতীয় ঢেউ দেখা দিতে পারে বলেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।
এই মুহূর্তে ভারতের ৩৩ টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে কোভিড ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু হয়েছে বলেই জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এই ট্রায়ালের জন্য কেন্দ্রের তরফে ১৩৫২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে বলেই জানিয়েছেন তিনি। অগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে এই টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।