রাহুল তেওটিয়া। শারজার মাঠে এক ওভারে শেলডন কট্রেলকে ৫ ছক্কা মেরে শিরোনামে এসেছিলেন তিনি। কিন্তু সেটা যা খালি এক ম্যাচের জন্য নয়, ফের একবার তা দেখিয়ে দিলেন তিনি। হারের কিনারা থেকে রাজস্থানকে টেনে আনলেন রাহুল। সঙ্গে যোগ্য সঙ্গত দিলেন তরুণ রিয়ান পরাগ। আর এই দুই তরুণের ব্যাটে ফের একবার টুর্নামেন্টে ফিরল রাজস্থান রয়্যালস। রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ জিতল তারা।
চলতি আইপিএলের শুরু থেকেই একটা ট্রেন্ড দেখা যাচ্ছে। প্রথমে ব্যাট করে বড় রান তুলে তারপর বিপক্ষ দলকে চাপে ফেলে দিয়ে ম্যাচ জিতে যাও। আর তাই টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বেশিরভাগ দল। আর সানরাইজার্স হায়দরাবাদের শক্তিই তাদের বোলিং ব্রিগেড। আর সেটাকেই ফের কাজে লাগাতে গিয়েছিলেন ডেভিড ওয়ার্নার। অনেকটা সফলও হয়ে গিয়েছিল। রান তাড়া করতে নেমে টপ অর্ডার খুইয়ে ধুঁকছিল রাজস্থান রয়্যালস। কিন্তু জ্বলে উঠলেন দুই তরুণ রিয়ান পরাগ ও রাহুল তেওটিয়া। আর তাঁদের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে হারতে থাকা ম্যাচ নিজেদের পকেটে পুড়ল রাজস্থান রয়্যালস।
এবারের রাজস্থান দলের মূল সমস্যা হল ব্যাটিং। প্রথম দুই ম্যাচে শারজায় ঠিক যতটা ভাল ব্যাট করতে দেখা গিয়েছিল বাটলার, স্মিথ, সঞ্জু স্যামসনদের, ততটাই খারাপ অবস্থা দুবাই ও আবু ধাবিতে এসে। শারজার ছন্দে যে বাকি দুই মাঠে খেলা সহজ নয়, সেটা যত সহজে সঞ্জুরা বুঝতে পারবেন ততই মঙ্গল। নইলে একই ছবি দেখা যাবে প্রতি ম্যাচে। সব ম্যাচে কিন্তু রিয়ান পরাগ, রাহুল তেওটিয়ারা ম্যাচ বের করতে পারবেন না।
এদিন ফের টসে জিতে ব্যাট নেন ওয়ার্নার। শুরুতে বেয়ারস্টর উইকেট হারালেও পার্টনারশিপ গড়েন মণীশ পাণ্ডে ও অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার। বেশ কয়েকটি ম্যাচ পরে আগের ছন্দে দেখা গেল মণীশকে। দায়িত্ব নিয়ে খেললেন তিনি। জোফ্রা আর্চারের বলে ৪৮ রানের মাথায় ওয়ার্নার বোল্ড হলেও হাফসেঞ্চুরি করেন মণীশ। ৫৪ রান করে আউট হন তিনি। শেষদিকে কেন উইলিয়ামসন ও প্রিয়ম গর্গের ক্যামিওতে ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৫৮ রান করে হায়দরাবাদ।
জবাবে ওপেনে জস বাটলারের সঙ্গে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা বেন স্টোকসকে নামিয়ে চমক দেয় রাজস্থান শিবির। যদিও সেই বদল কাজে আসেনি। ৫ রানে খলিলের বলে বোল্ড হন তিনি। ৫ রানের মাথায় অযথা ঝুঁকি নিয়ে দু’রান নিতে গিয়ে রান আউট হন অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ। কয়েকটা ভাল শট খেললেও সেই খলিলের বলেই ফেরেন বাটলারও।
ইনিংস কিছুটা ধরার চেষ্টা করেন সঞ্জু স্যামসন ও রবিন উথাপ্পা। কিন্তু ফের ব্রেক থ্রু দেন সেই রশিদ খান। উথাপ্পাকে আউট করেন তিনি। রশিদের বলেই আউট হন স্যামসন। ৭৮ রানে ৫ উইকেট পড়ে যায় রাজস্থানের। দেখে মনে হচ্ছিল ফের একটা হার অপেক্ষা করছে রাজস্থানের সামনে।
কিন্তু তখনই জ্বলে উঠলেন তেওটিয়া। শারজার ফর্ম ফের একবার দেখালেন তিনি। আর এবার তাঁর সঙ্গে যোগ দিলেন তরুণ রিয়ান পরাগ। প্রথমে হাত সেট করে তারপর শেষ ৫ ওভারে বড় শট খেলা শুরু করেন তাঁরা। রশিদ খানের এক ওভারে ১৩ রান নেন তেওটিয়া। উনিশ তম ওভারে ১৪ রান নেন তাঁরা। শেষ ওভারে জয়ের জন্য দরকার ছিল ৮ রান। এক বল বাকি থাকতেই ছক্কা মেরে ম্যাচ জিতিয়ে দিলেন রিয়ান পরাগ।
রাহুল তেওটিয়া ২৮ বলে ৪৫ ও রিয়ান পরাগ ২৬ বলে ৪২ করে নটআউট থাকেন। দু’জনে মিলে ৮৫ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। আর তাতেই বাজিমাত রাজস্থানের। দুই তরুণের হাতেই ফের টুর্নামেন্টে ফিরল রাজস্থান।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ১৫৮/৪। ওয়ার্নার ৪৮, মণীশ পাণ্ডে ৫৪। আর্চার ২৫/১। রাজস্থান রয়্যালস ১৬৩/৫। রিয়ান পরাগ ৪২, রাহুল তেওটিয়া ৪৫। রশিদ খান ২৫/২, খলিল আহমেদ ৩৭/২। রাজস্থান রয়্যালস ৫ উইকেটে জয়ী।