ক্ষণস্থায়ী সংঘর্ষবিরতি শেষে ফের যুদ্ধ শুরু হয়েছে আজারবাইজান (Azerbaijan) ও আর্মেনিয়ার (Armenia) মধ্যে। রুশ পৌরহিত্যে শুক্রবার হওয়া এই চুক্তি যে টিকবে না তা গোড়াতেই জানিয়েছিলেন বিশ্লেষকরা। কারণ খাতায়-কলমে চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও ময়দানে তা বলবৎ করেনি কোনও দেশ বলেই অভিযোগ।
বিতর্কিত নাগর্নো-কারাবাখ অঞ্চল বা আর্মেনীয় বিদ্রোহীদের স্বঘোষিত ‘রাষ্ট্র’ ‘রিপাবলিক অফ আর্টসাক’-এর প্রেসিডেন্ট আরাইক হারুতুনিয়ানের মুখপাত্র ভাহরাম ফগসিয়ান শনিবার রাতে দাবি করেছেন, সংঘর্ষবিরতি চুক্তি লংঘন করে আর্টসাকের সুশি ও মারতুনি শহরে তুমুল গোলাবর্ষণ করছেন আজারবাইজানের সেনাবাহিনী। এর আগে শনিবার সকালে আর্টসাকের রাজধানী স্তেপানকার্ট শহরে দু’টি মিসাইল হামলা হয় বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। নাগর্নো-কারাবাখ প্রশাসন জানিয়েছে আজারবাইজানের সঙ্গে লড়াইয়ে শুক্রবার পর্যন্ত তাদের ৩৭৬ জন জওয়ান ও ২৭ জন সাধারণ নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন। এদিকে, বিদ্রোহীদের অভিযোগ উড়িয়ে আজারবাইজান দাবি করেছে যে অপরপক্ষই প্রথমে হামলা চালায়। ফলে বাধ্য হয়ে তাদের জবাব দিতে হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার দীর্ঘ রুশ পৌরহিত্যে ১০ ঘণ্টা ধরে বৈঠকের পর নাগর্নো-কারাবাখ এলাকায় যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান। একথা জানান রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ (Sergei Lavrov)। গত ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া ওই যুদ্ধ থামাতে প্রথম থেকে সচেষ্ট ছিল ভ্লাদিমির পুতিনের প্রশাসন। তারই ফলশ্রুতিতে গতকাল রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের উপস্থিতিতে বৈঠকে বসেন আর্মেনিয়ার বিদেশমন্ত্রী জোহরাব মান্টসাকানইয়ান ও আজারবাইজানের বিদেশমন্ত্রী জেহুন বায়রামভ। কিন্তু খাতে কলমে হয় ওই চুক্তির ফলে কোনও লাভ হয়নি।
নাগর্নো-কারাবাখ (Nagorno-Karabakh) অঞ্চল নিয়ে আজ়ারবাইজান ও আর্মেনিয়ার বিবাদ দীর্ঘদিনের। গত ২৭ সেপ্টেম্বর এই অঞ্চলে ফের যুদ্ধ শুরু হয়। এর জেরে এখনও পর্যন্ত ৩০০ মানুষ নিহত হয়েছেন। ঘরবাড়ি হারিয়ে সর্বহারা হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। রাশিয়া ও তুরস্কের মতো দেশ এই লড়াইয়ে ‘জড়িয়ে যাওয়ায়’ পরিস্থিতি রীতিমতো জটিল হয়ে উঠেছে।