জেতা ম্যাচ। আর সেই জেতা ম্যাচই মাঠে ফেলে এলেন কেএল রাহুলরা (KL Rahul)। ১৮ বলে যেখানে দরকার ছিল মাত্র ২২ রানের। সেই সহজ কাজটাই করতে পারলেন না তাঁরা। আর কলকাতার কাছে ২ রানে হেরে কার্যত টুর্নামেন্ট থেকে বিদায়ঘণ্টাও বেজে গেল প্রীতি জিন্টার দলের। কলকাতার ১৬৫ রানের লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে নেমে ১৬২ রানেই থামল কিংসের ইনিংস।
এদিন টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন কলকাতা নাইট রাইডার্স (Kolkata Knight Riders) অধিনায়ক দীনেশ কার্তিক। কিন্তু গত ম্যাচের নায়ক রাহুল ত্রিপাঠিকে মাত্র ৪ রানেই বোল্ড করেন মহম্মদ শামি। এরপর শুভমন গিলের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে ২ রানেই ফিরে যান নীতীশ রানা। এরপর মর্গ্যান–গিল জুটি ইনিংসের হাল ধরেন। কিন্তু কেকেআরের ৬৩ রানের মাথায় আউট হন মর্গ্যান (২৪)। এরপরই ক্রিজে আসেন অফফর্মে থাকা KKR অধিনায়ক। কিন্তু আজ যেন রান করবেন এমন পণ নিয়েই এসেছিলেন। একদিকে গিল যেমন ক্রিজ আঁকড়ে পড়েছিলেন, অন্যদিকে শুরু থেকেই মারমুখী মেজাজে ছিলেন কার্তিক। করলেন মাত্র ২৯ বলে ৫৮ রান। মারেন ৮টি চার এবং ২টি ছয়। অপরদিকে, গিলও অর্ধশতরান করেন। তাঁর সংগ্রহ ৪৭ বলে ৫৭ রান। মূলত এই দু’জনের ব্যাটে ভর করেই নির্ধারিত ২০ ওভারে ছ’উইকেটে ১৬৪ রান তোলে কেকেআর।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই দুরন্ত ফর্মে ব্যাটিং করতে থাকেন পাঞ্জাবের দুই ওপেনার মায়াঙ্ক আগরওয়াল এবং কেএল রাহুল। এর মধ্যে মায়াঙ্ক একবার ক্যাচ দিলেও তা ধরতে পারেননি আন্দ্রে রাসেল। উলটে ক্যাচ ধরতে গিয়ে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়তে হয় ক্যারিবিয়ান তারকাকে। অন্যদিকে, এরপর আর কেকেআর বোলারদের কোনও সুযোগ দেননি রাহুলরা। মায়াঙ্ক ৫৬ রান করে ফিরে গেলেও অপরদিকে দুরন্ত ফর্মে ব্যাট করতে থাকেন কেএল রাহুল। শেষ ওভার পর্যন্ত ম্যাচ গড়ালেও একবারের জন্যও বুঝতে দেননি কোনওভাবে ম্যাচটি হারতে পারে পাঞ্জাব (Kings Xi Punjab)।
কিন্তু ডেথ ওভারে আচমকাই ম্যাচ ঘুরতে শুরু করে। ঠিক চেন্নাই ম্যাচের মতোই এদিনও হঠাৎ করে ম্যাচে ফিরে আসেন কেকেআর বোলাররা। শেষ তিন ওভারেও জয়ের জন্য দরকার ছিল ২২ রানের। কিন্তু নারিনের ১৭ তম ওভারে আসে মাত্র ২ রান। এরপর প্রসিদ্ধ কৃষ্ণার বলে পরের ওভারে আউট হন কেএল রাহুল। ৫৮ বলে ৭৪ রান করলেও দলকে জয়ের গণ্ডি পার করাতে পারলেন না। এরপর শেষওভারে জয়ের জন্য ১৪ রানের প্রয়োজন ছিল। ম্যাক্সওয়েল চেষ্টাও করেছিলেন। কিন্তু শেষবলে যেখানে জয়ের জন্য সাত রান এবং টাই করতে ছ’রান দরকার ছিল, অল্পের জন্য অজি তারকার মারা শট চার রান হয়। ফলে ২ রানেই অতি নাটকীয় ম্যাচটি জিতে নেয় কেকেআর। শেষপর্যন্ত ২০ ওভারে পাঁচ উইকেটে ১৬২ রানে থেমে যায় পাঞ্জাবের ইনিংস। কেকেআর বোলারদের মধ্যে প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা তিনটি এবং নারিন দু’টি উইকেট নিয়েছেন।
এই নিয়ে নিজেদের সাতটির ম্যাচের মধ্যে ছ’টিতেই হারল পাঞ্জাব। এর মধ্যে টানা পাঁচ ম্যাচে হারের লজ্জাও রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শেষ সাতটি ম্যাচের প্রত্যেকটিতে জিতলেও সুপার ফোরে যেতে অন্য ম্যাচের ফলাফলের দিকেও তাকিয়ে থাকতে হবে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবকে।