প্রয়াত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ান

প্রয়াত কেন্দ্রীয় খাদ্য ও গণবণ্টন মন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ান । লোকজনশক্তি পার্টির নেতা রামবিলাস পাসোয়ানের মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৭৪। বেশ কিছুদিন ধরে তিনি অসুস্থ ছিলেন 
। বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর ছেলে চিরাগ পাসওয়ান টুইটারে বাবার মৃত্যু খবর জানান।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই হাসপাতালে চিকিত্সাধীন ছিলেন কেন্দ্রীয় খাদ্য ও গণবণ্টন মন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ান । সম্প্রতি দিল্লির এক হাসপাতালে তাঁর হার্টের অস্ত্রোপচার হয়। তারপর থেকেই তিনি সঙ্কটজনক অবস্থায় ছিলেন। এদিন তাঁর মৃত্যুসংবাদ দিয়েছেন রামবিলাসের ছেলে তথা লোকজনশক্তি পার্টির (এলজেপি) প্রধান চিরাগ পাসোয়ান। তিনি টুইটারে লিখেছেন, …বাবা, তুমি এই পৃথিবীতে আর নেই। তবে আমি জানি তুমি যেখানেই থাক না কেন, সবসময় আমার সঙ্গেই আছে। তোমায় মিস করছি বাবা। 

বিহারের খাগাড়িয়ায় অনগ্রসর শ্রেণির এক পরিবারে পাসোয়ানের জন্ম। পিছিয়ে পড়াদের সামাজিক ক্ষমতায়ণের উদ্দেশেই রাজনীতিতে পা রেখেছিলেন তিনি। ৬৯ সালে সংযুক্ত সোশালিস্ট পার্টির হয়ে প্রথম বার বিহার বিধানসভার সদস্য হন তিনি। পরে জয়প্রকাশ নারায়ণের একান্ত অনুগত হয়ে জরুরি অবস্থার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমে পড়েন তিনি। গোটা জরুরি অবস্থার মেয়াদেই তিনি জেলে বন্দী ছিলেন। পরে প্রথমে লোক দলে যোগ দেন, তার পর মোরাজি দেশাইয়ের সঙ্গে হাত মেলান। শেষমেশ ২০০০ সালে জনতা দল থেকে ভেঙে বেরিয়ে লোক জনশক্তি পার্টি তৈরি করেন রামবিলাস।

বিহার তথা সর্বভারতীয় রাজনীতিতে রামবিলাসকে অনেকেই রাজনীতির হাওয়া মোড়গ বলতেন। ২০০৪ সালে লোকসভা ভোটে যখন সব রকম মতামত সমীক্ষা বাজপেয়ী সরকারকে এগিয়ে রেখেছিল, সেই সময়েই এনডিএ ছেড়েছিলেন রামবিলাস। সনিয়া গান্ধীর বাসভবন দশ নম্বর জনপথের পাশেই থাকতেন রামবিলাস। সে সময়ে সনিয়া বাড়ি থেকে বেরিয়ে হেঁটে রামবিলাসের বাড়ি চলে গেছিলেন জোট নিয়ে আলোচনা করতে। এনডিএ পরাস্ত হয়েছিল। ভোটে জিতে কেন্দ্রে ফের মন্ত্রী হয়েছিলেন রামবিলাস। আবার চোদ্দ সালে লোকসভা ভোটের অনেক আগেই এনডিএ-র সঙ্গে সখ্য শুরু করেন রামবিলাস। তার পর মোদী-অমিত শাহর শরিক হয়ে কেন্দ্রে মন্ত্রী হন।

সব মিলিয়ে লোকসভায় ৮ বার নির্বাচিত হয়েছিলেন রামবিলাস। সংসদীয় রাজনীতিতে কোনও রাজনীতিকের জন্য তা কম গরিমার নয়। বিহারের এ হেন পোড় খাওয়া রাজনীতিকের এ বার রাজ্যের বিধানসভা ভোটটাই দেখা হল না। এমনিতে লোক জনশক্তি পার্টির নীতীশ কুমারের সঙ্গে বনিবনা হচ্ছে না। ছেলে চিরাগ দাপুটে হলেও রাজনীতি অভিজ্ঞতা কম। এই কঠিন সময়ে ছেলেকে ভোটের ময়দানে একা রেখেই চলে গেলেন রামবিলাস পাসোয়ান। রামবিলাসের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে অবসান হল ৫ দশকেরও বেশি দীর্ঘ এক রাজনৈতিক কেরিয়ারের।  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.