প্রধানমন্ত্র নরেন্দ্র মোদি তৃণমূল দলটাকেই কয়লা মাফিয়া আখ্যা দিয়ে দিল্লি ফিরে গিয়েছেন। ‌পদ্ম শিবিরের প্রধানের এমন অভিযোগে অক্সিজেন দেওয়ার কাজ শুরু করে দিলেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এক বৈদ্যুতিন মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন তৃণমূলের একদা সেকেন্ড ইন কমান্ড।

এদিন মুকুল বলেন, “বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বর্ধমান, আসানসোল বীরভূম এই সমস্ত জেলায় তৃণমূল যে মাফিয়া রাজ কায়েম করছে। তার প্রতিটি কথা জানেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সবকিছু জানা সত্ত্বেও ভাবের ঘরে চুরি করছেন তিনি।”

প্রসঙ্গত এদিনই বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বাকে কয়লা মাফিয়া বলে অভিযুক্ত করেছেন। আর তাতেই বেজায় ক্ষুব্ধ মমতা। জবাবে তিনি বলেছেন, “তৃণমূল কংগ্রেসের যে ৪২ জন প্রার্থী এবারের লোকসভা ভোটে লড়াই করছেন তাদের মধ্যে একজনের যদি কয়লা মাফিয়াদের সঙ্গে যোগাযোগ প্রমাণ করতে পারেন নরেন্দ্র মোদী। তাহলে ৪২ জন তৃণমূল প্রার্থীই তাদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেবেন।” কিন্তু তাতেও জমে যাননি মুকুল রায়। তিনি বলেন, “দলের কারা কারা অবৈধ কয়লা পাচারে যুক্ত। কিভাবে যুক্ত, কেন যুক্ত, তার সবই জানেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর অনুমতি ছাড়া বাংলায় কিছুই হয় না।তাই এই কয়লা মাফিয়াদের দৌরাত্ম্যের দায় তাকে নিতেই হবে।”

প্রসঙ্গত, বুধবার রাতে বিষ্ণুপুর লোকসভা বিজেপি প্রার্থী তথা বর্তমান সাংসদ সৌমিত্র খাঁ সরাসরি অভিযোগ করেছেন বাঁকুড়া, বীরভূম, পুরুলিয়া কয়লা খনি অঞ্চল থেকে মাসে মাসে মোটা টাকা তোলা আদায় করেন মুখ্যমন্ত্রীর সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও সতীর্থের এমন মন্তব্য প্রসঙ্গে কোনও উক্তি করেননি বাংলা রাজনীতির চাণক্য। তার কথায়, সৌমিত্র যে অভিযোগ করেছে তার উত্তর বা প্রমান সেই দেবেন। কিন্তু কয়লা মাফিয়া নিয়ে যে অভিযোগ বর্তমান শাসকদলের বিরুদ্ধে উঠেছে তার সর্বময় নেত্রী হিসেবে দায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এড়িয়ে যেতে পারেন না বলেই মত প্রকাশ করেছেন মুকুল।

জঙ্গলমহলে মাও দমন নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কৃতিত্ব দাবি করাকেও কাঠগড়ায় তুলেছেন মুকুল। তিনি বলেন, “কিষেণজির সমর্থন ছাড়া বাংলায় ক্ষমতায় আসতে পারতেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অথচ বর্তমান শাসক দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এক নেতা জানিয়েছেন ক্ষমতায় আসার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার একটি মাত্র খুন করেছেন। এবং তা হল কিষেণজির।” আসলে এমন কথা বলে মুকুল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বিচারিতার রাজনীতিকে প্রকাশ করে দিতে চেয়েছেন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। সঙ্গে কিষেণজিকে খুন করা হয়েছে এই যে মন্তব্যটি করেছিলেন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি তথা মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সে কথাও এই লোকসভা ভোটের বাজারে আবার ফিরিয়ে আনলেন আলোচনায়।

নীল রায়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.