কৃষি আইনের প্রতিবাদে দেশজুড়ে চলছে কৃষকদের আন্দোলন ও বিক্ষোভ। কৃষকদের বিক্ষোভের মধ্যেই ফের কৃষি বিলের পক্ষে সওয়াল করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। একইসঙ্গে কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের তীব্র ভর্ৎসনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর কথায়, কৃষকদের স্বাধীনতা সহ্য করতে পারছেন না অনেকেই। খোলা মার্কেটে কৃষকরা নিজেদের পণ্য বিক্রি করুক সেটা তাঁরা চাইছেই না, তাঁরা চাইছে মধ্যস্থতাকারীদের মুনাফা অর্জন হোক। তাঁরা কৃষকদের স্বাধীনতার বিরোধিতা করছে। মঙ্গলবার বেলা এগারোটা নাগাদ ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে ‘নমামী গঙ্গে মিশন’-এর অন্তর্গত দেবভূমি উত্তরাখণ্ডে ছ’টি মেগা প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ভার্চুয়ালি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত। উত্তরাখণ্ডে ছ’টি মেগা প্রকল্পের উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘বিগত দশকে, গঙ্গা নদীকে স্বচ্ছ করার জন্য বহু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, সেই সমস্ত উদ্যোগে হয়তো জনসাধারণের অংশগ্রহণ ছিল না অথবা দূরদৃষ্টির অভাব ছিল। তাই গঙ্গা নদীর জল কখনই পরিষ্কার ও স্বচ্ছ হয়নি।’
কৃষি আইন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এদিন বলেন, সদ্য সমাপ্ত সংসদের অধিবেশনে কৃষক, শ্রমিক এবং স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বহু সংস্কার আনা হয়েছে। ওই সমস্ত সংস্কারের ফলে শ্রমজীবী মানুষ, যুবসম্প্রদায়, মহিলা, এবং দেশের কৃষকরা শক্তিশালী হবেন। কিন্তু, কিছু মানুষ শুধুমাত্র নিজেদের স্বার্থে বিরোধিতা করছে, দেশবাসী সমস্ত কিছু দেখছে। কৃষকরা এখন নিজেদের পণ্য যে কোনও প্রান্তে, যে কোনও স্থানে বিক্রি করতে পারবেন। কেন্দ্র যখন কৃষকদের অধিকার প্রদান করছে, তখন এই সমস্ত মানুষ বিরোধিতা করছে। খোলা মার্কেটে কৃষকরা নিজেদের পণ্য বিক্রি করুক সেটা তাঁরা চাইছেই না, তাঁরা চাইছে মধ্যস্থতাকারীদের মুনাফা অর্জন হোক। তাঁরা কৃষকদের স্বাধীনতার বিরোধিতা করছে।কৃষক আন্দোলনের আঁচ ছড়িয়ে পড়েছে রাজধানী দিল্লিতেও। সোমবার সকালেই ইন্ডিয়া গেটের সামনে ট্র্যাক্টরে আগুন ধরিয়ে দেন যুব কংগ্রেসের কর্মীরা। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মেশিন ও সরঞ্জাম কৃষকদের পূজিত, কিন্তু মেশিনে আগুন লাগিয়ে কৃষকদের অপমান করা হচ্ছে। কয়েক বছর ধরে তাঁরা বলেছিল এমএসপি (নূন্যতম সহায়ক মূল্য) বাস্তবায়ন করবে, কিন্তু তাঁরা তা করেনি। স্বামীনাথন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী আমাদের সরকারই তা করেছে। এমএসপি নিয়ে এখন কৃষকদের বিভ্রান্ত করছে বিরোধীরা। শুধুমাত্র এমএসপি নয়, কৃষকদের নিজেদের ইচ্ছে মতো যে কোনও স্থানে নিজেদের পণ্যসামগ্রী বিক্রি করতে পারবেন। কৃষকদের এই স্বাধীনতা অনেকেই সহ্য করতে পারছে না। কালো টাকা উপার্জনের তাঁদের আরও একটি মাধ্যমের সমাপ্তি হল।বিরোধীদের তীব্র আক্রমণ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এদিন আরও বলেন, বছরের পর বছর ধরে সুরক্ষা বাহিনীকে শক্তিশালী করার জন্য এঁরা কিছুই করেনি। বায়ুসেনা রাফালের জন্য বলতে থাকে, কিন্তু তাঁরা কখনই বায়ুসেনার কথা শোনেনি। রাফাল এয়ারক্রাফট নিয়ে আমাদের সরকার যেই মাত্র ফ্রান্স সরকারের সঙ্গে চুক্তি সই করল, সেই মাত্র তাঁদের সমস্যা শুরু হয়ে গেল। চার বছর আগে, এই সময়েই দেশের সাহসী বাহিনী সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করেছিল এবং সন্ত্রাসবাদীদের ঘাঁটি ধ্বংস করেছিল। তখন এই সমস্ত মানুষই সার্জিকাল স্ট্রাইকের প্রমান চাইছিল। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ভারতের উদ্যোগে গোটা বিশ্ব যখন আন্তর্জাতিক যোগ দিবস পালন করছিল, তখন ভারতে যোগাভ্যাসের বিরোধিতা করেছিল এঁরাই। যখন সর্দার বল্লবভাই প্যাটেলের স্ট্যাচু অফ ইউনিটি উন্মোচিত হয়েছিল, তখনও বিরোধিতা করেছিল।