রাইস এটিএম (Rice ATM)। নিরন্ন মানুষের কাছে এ যেন এক স্বপ্নের নাম। হায়দরাবাদের (Hyderabad) এলবি নগরে অবস্থিত এই এটিএম থেকে বিনামূল্যে চাল পেতে পারেন যে কোনও খেতে না পাওয়া দরিদ্র মানুষ। গত মার্চের লকডাউনের (Lockdown) সময় থেকে এখনও পর্যন্ত ১২ হাজারেরও বেশি মানুষ এই এটিএম-এর সাহায্যে নিজেদের খিদে মেটাতে পেরেছেন।
মৃত্যুমুখ থেকে ফিরে আসা এক যুবক এই স্বপ্নের কারিগর। রামু দোসাপাতি নামের এমবিএ পাশ এই যুবক মনে করেন, ‘‘আমি চাই ক্ষুধার্ত অবস্থায় কেউ যেন ঘুমিয়ে না পড়ে। আর সেই কারণেই আমি এই প্রচেষ্টা শুরু করেছি। এই এটিএমে যে কেউ এসে তাঁর প্রয়োজনমতো চাল নিয়ে যেতে পারেন।’’
২০০৬ সালে দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত হয়েছিলেন রামু। সেই সময়ই তিনি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছিলেন, যদি সে যাত্রা তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন তাহলে নিজের জীবনকে দরিদ্র মানুষদের কাজে লাগাবেন। কথা রেখেছেন তিনি। সুস্থ হওয়ার পর গরিব, না খেতে পাওয়া মানুষের দিকে বাড়িয়ে দিয়েছেন সাহায্যের হাত। নিজের সামর্থে যতটুকু হয়, তা দিয়েই রামু পাশে দাঁড়িয়েছেন অভাবী মানুষের।
ক্রমে নিজের ব্যক্তিগত সঞ্চয় থেকে ৪ লক্ষ টাকা খরচ করে এই ‘রাইস এটিএম’ খুলেছেন তিনি। এমন মহৎ উদ্যোগের পাশে দাঁড়িয়েছেন অনেকেই। বাড়িয়ে দিয়েছেন সাহায্যের হাত। ফলে তাঁর স্বপ্নের প্রকল্প এগিয়ে চলেছে তরতর করে।
ঘরে চাল ‘বাড়ন্ত’। এই অবস্থায় এই এটিএমে এলে মিলবে চাল। যে পরিমাণ চাল দেওয়া হয়, তাতে অন্তত পাঁচদিন ভালো করে চলে যাবে। কোভিড-১৯ অতিমারীর সময় দরিদ্র মানুষদের কাছে বিরাট আশীর্বাদ হয়ে এসেছে এই রাইস এটিএম। বহু মানুষ কাজ হারিয়েছেন। অনেকের বেতন কেটে ছোট করে দেওয়া হয়েছে। এই অবস্থায় তাদের কাছে স্বস্তির বার্তা বয়ে আনছে রামুর স্বপ্নের প্রকল্প।