গত বছরও সংখ্যাটা ছিল ৫। কিন্তু এ বছর করোনার কোপে তা মাত্র একে এসে দাঁড়িয়েছে। নদিয়ার কৃষ্ণনগরের (Krishnagar) ঘূর্ণির বিখ্যাত মৃৎশিল্পী জয়ন্ত পালের তৈরি মাত্র একটি দুর্গা মূর্তি পাড়ি দিল ভিনদেশে। কাঠের বাক্সে প্যাকিং করে, স্যানিটাইজেশনের পর ছোট আকারের দুর্গা প্রতিমা রওনা দিয়েছেন মেক্সিকোর (Mexico) উদ্দেশে। বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজোয় মহামারীর প্রভাব যে মারাত্মকভাবেই পড়েছে, তা একযোগে মেনে নিচ্ছেন কৃষ্ণনগরের ঘূর্ণি মৃৎশিল্পীরা।
এখানকার বিখ্যাত মৃৎশিল্পী জয়ন্ত পালের ভাই সুদীপ্ত পালের কথায়, ”প্রতি বছর আমাদের এখানে প্রচুর দুর্গা প্রতিমার (Durga Idol) অর্ডার আসে। কিন্তু এ বছর সংখ্যা খুবই কম। কলকাতা, হাওড়া-সহ আশেপাশের জেলার বিভিন্ন জায়গায় প্রতি বছর আমাদের এখান থেকে একাধিক বড় বড় প্রতিমা যায়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে এবার প্রতিমার অর্ডার তো কমেই গিয়েছে, বাজেট কমানোর জন্য প্রতিমার আকারও হয়ে গিয়েছে অনেক ছোট।” তিনি আরও জানালেন, ভিনদেশ থেকে অর্ডারও এবার অনেক কম এসেছে। গত বছর এখান থেকে মোট পাঁচটি দুর্গা প্রতিমা বিভিন্ন দেশে পাড়ি দিয়েছিল। অথচ এবছর এখনও পর্যন্ত মাত্র একটি প্রতিমা পাঠানো হল মেক্সিকোয়।
মেক্সিকোতে পাড়ি দেওয়া জয়ন্ত পালের তৈরি দুর্গা প্রতিমাটি ফাইবার গ্লাসের তৈরি। মাটির প্রতিমা বানিয়ে তারপরে প্লাস্টার অফ প্যারিসের মণ্ড তৈরি করে কাস্টিংয়ের মাধ্যমে ফাইবার গ্লাসের প্রতিমা তৈরি করেছেন ঘূর্ণির বিখ্যাত মৃৎশিল্পী জয়ন্ত পাল। তাঁকে পূর্ণ সহযোগিতা করেছেন ভাই সুদীপ্ত। পুরো ১ মাস সময় লেগেছে ওই দুর্গা প্রতিমাটি তৈরি করতে। ছোট ছোট থার্মোকলের টুকরো বড় প্লাস্টিকের প্যাকেটের মধ্যে ঢুকিয়ে তার মধ্যে দুর্গা প্রতিমাটি রেখে কাঠের বাক্সে প্যাকিং করে ইতিমধ্যেই মেক্সিকোর উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছে।
যদিও মহামারী আবহেই বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো পালিত হচ্ছে। নিরাপদে পুজোর আনন্দে মাততে বৃহস্পতিবারই বৈঠকের পর নতুন নিয়মাবলি ঘোষণা করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী নিজে। বাংলার বিভিন্ন প্রান্তের উদ্যোক্তারা যেমন ছোট বাজেটের মধ্যে দুর্গাপুজো করার চিন্তাভাবনা করেছেন, তেমনই দুর্গাপুজোর ক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই প্রবাসী বাঙালিরাও। তবে সব ক্ষেত্রেই এবার প্রতিমার আকারে অনেকটাই ছোট হয়ে গিয়েছে।