অন্যান্যবার এই সময় অর্থাৎ মহালয়ার পর অনেক পুজোরই উদ্বোধন হয়ে যায়৷ পুজো পরিক্রমাতেও বেরিয়ে পড়ে বাঙালি৷ কিন্তু এবারের ছবিটা একেবারে অন্যরকম৷ একে করোনার কোপ, তার উপর মহালয়ার পরই মল মাস৷ তাই পুজো শুরু হওয়ার ঢের বাকি৷ কোভিড (COVID-19) পরিস্থিতির জন্য অনেকটাই ফিকে উৎসবের রং৷ অতিমারীর আতঙ্কে পুজো (Durga Puja) নিয়ে মানুষের উন্মাদনাতেও ভাটা পড়েছে৷ কিন্তু এই মারণ ভাইরাস বাংলার ঐতিহ্য, সংস্কৃতিকে কেড়ে নিতে পারেনি৷ তাই তো করোনার রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করেই বিগত বছরগুলির মতো এবারও ‘মায়ের জন্য রক্তদান’ (blood donation) শিবিরের আয়োজন করল ফোরাম ফর দুর্গোৎসব।
পুজোর উত্তাপ বাড়াতে বছর চারেক আগে অভিনব উদ্যোগ নিয়েছিল পুজো কমিটির বটবৃক্ষ বলে পরিচিত ফোরাম ফর দুর্গোৎসব৷ ফোরামের সেই উদ্যোগ, ‘মায়ের জন্য রক্তদান’ এবার চতুর্থ বছরে পা দিল। কোভিডবিধি মেনেও যে রক্তদানের বিরাট আয়োজন সম্ভব, তা বুঝিয়ে দিলেন উদ্যোক্তারা। কলকাতার বুকে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে একছাতার তলায় রক্তদান করলেন পুজো কমিটির সদস্যরা। তবে এবার সাধারণের সুরক্ষার খাতিরেই রক্তদানের জন্য পুজো কমিটির বাইরের কাউকে অনুমতি দেওয়া হয়নি।
উল্লেখ্য, গত বছর চাঁদিফাটা রোদ উপেক্ষা করে রেকর্ড সংখ্যক মানুষ রক্তদান করেছিলেন। ১৮০৬ জন মায়ের জন্য রক্তদানে অংশ নিয়েছিলেন। সেদিক থেকে এবারের সংখ্যাটাও যদিও খুব একটা কম নয়। পুজো কমিটির মোট ১,৩১৭ জন রক্তদান করেন। রবিবার অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। এছাড়াও হাজির ছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম, সাধন পাণ্ডে, শশী পাঁজা, অতীন ঘোষ-সহ রাজ্যের অন্যান্য নেতা-মন্ত্রীরা। তাঁরা প্রত্যেকেই এদিন ফোরাম ফর দু্র্গোৎসবের (Forum For Durgotsav) এই মহৎ প্রয়াসের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।
করোনা আবহে এই বিরাট যজ্ঞের সুষ্ঠুভাবে আয়োজন করতে পেরেই খুশি ফোরামের যুগ্ম সম্পাদক শাশ্বত বসু। বলছিলেন, “দেশের করোনা পরিস্থিতি দেখে প্রথমে ঠিক হয়েছিল, এবারের মতো আর এই আয়োজন করা হবে না। কিন্তু করোনা কালে অনেকবারই রক্তের অভাবের কথা সামনে এসেছে। টাকা দিয়েও রক্ত পাননি বহু মানুষ। সেই করুণ ছবিটাই বারবার চোখের সামনে ভেসে উঠেছে। সেই জন্যই শেষমেশ ঠিক হয়, কোভিডবিধি মেনেই রক্তদানের আয়োজন হবে।”