মুখে যতই শান্তির কথা বলুক চিন, সীমান্তের পরিস্থিতি বেশ উত্তপ্ত। পূর্ব লাদাখে চিনা সেনার চোখে চোখ রেখে দাঁড়িয়ে রয়েছে ভারতীয় সেনা। এই পরিস্থিতিতে কূটনৈতিক পরবর্তী পদক্ষেপ স্থির করতে শুক্রবার অর্থাৎ ১৮ই সেপ্টেম্বর উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বসতে চলেছে কেন্দ্র।
ভারতীয় সেনার উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা যেমন উপস্থিত থাকবেন এই বৈঠকে, তেমনই থাকবেন এই পরিস্থিতির সঙ্গে যুক্ত সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক পদাধিকারীরাও। গোটা দেশের সীমান্ত পরিস্থিতিই এই আলোচনার বিষয়। অর্থাৎ শুধু লাদাখ সীমান্ত নয়, অরুণাচল প্রদেশে চিনা সেনার দখলদারি মনোভাব নিয়েও আলোচনা হবে এদিনের বৈঠকে।
সংবাদসংস্থা এএনআই সরকারি সূত্র উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, ডোকলাম পরিস্থিতিও খতিয়ে দেখা হবে এদিনের বৈঠকে। সীমান্ত জুড়ে চিনা সেনার অবস্থান, নেপাল ও ভুটানের মাটিকে ব্যবহার করে ভারতের বিরোধিতা করার চিনা পরিকল্পনার বিষয়ে এদিন কথা হতে পারে। রাশিয়ায় এসসিও সম্মেলনে কর্পস কমান্ডার স্তরে ভারত চিন বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও, পরে সেই বৈঠকে চিনের অনীহা প্রকাশ নিয়েও কথা হতে পারে এদিন।
উল্লেখ্য সংসদের বাদল অধিবেশন ইতিমধ্যেই সরগরম ভারত চিন সংঘাত ইস্যুতে। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি বেশ জটিল। উত্তাপের গভীরতা খতিয়ে দেখতে জম্মু কাশ্মীর সফরে গিয়েছেন সেনা প্রধান এম এম নারাভানে।
সূত্রের খবর পূর্ব লাদাখের পরিস্থিতিও খতিয়ে দেখার কথা তাঁর। খতিয়ে দেখবেন ভারতীয় সেনার প্রস্তুতি ও অবস্থানের বিষয়টি। এছাড়াও জম্মু কাশ্মীরের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করবেন সেনা প্রধান বলে খবর। সেপ্টেম্বর মাসের শুরুর দিকেও সেনাপ্রধান লাদাখ সফর করেছেন। এরই মধ্যে সীমান্তে সংঘাত মেটাতে পাঁচ বার সামরিক স্তরে বৈঠকে বসেছে ভারত ও চিন। কিন্তু লাভ হয়নি।
ইতিমধ্যেই লাদাখের প্যাংগং লেকের দক্ষিণ প্রান্তের দখল নিয়েছে ভারতীয় সেনা। ১৯৬২ সালের যুদ্ধে যে পার্বত্য এলাকার দখল নিয়েছিল চিন, সেই এলাকাতেও উড়ছে ভারতের জাতীয় পতাকা। এই পার্বত্য এলাকার মধ্যে পড়ছে বেশ কয়েকটি উপত্যকা ও পর্বত।
তবে খারাপ খবরও মিলেছে। রাজ্যসভায় বিবৃতি দিয়েছেন রাজনাথ সিং। তিনি জানিয়েছেন, লাদাখে ভারতীয় ভুখন্ডের ৩৮ হাজার বর্গ কিমি জুড়ে চিন সেনার অবস্থান। এমনটাই জানালেন রাজনাথ সিং।
রাজ্যসভায় তিনি বলেন যে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লাদাখে অন্তত ৩৮,০০০ বর্গ কিমি এলাকা বেআইনি ভাবে দখল করে রেখেছে চিন। এর পাশাপাশি তথাকথিত ১৯৬৩-র Sino-Pakistan Boundary Agreement অনুযায়ী পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ৫১৮০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা পাকিস্তান চিনকে দিয়েছে ফের মনে করিয়ে দিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী।