দেশে বেসরকারি সংস্থা ট্রেন চালালে তারা নিজেদের ইচ্ছামতো ভাড়া নির্ধারণ করতে পারবে। শুক্রবার একথা জানাল খোদ রেল বোর্ড। রেল (Indian Railways) বোর্ডের চেয়ারম্যান ভিকে যাদব বলেছেন, ‘‘বেসরকারি সংস্থাগুলিকে ট্রেনের ভাড়া স্থির করার স্বাধীন অধিকার দেওয়া হবে। তবে একই রুটে এয়ার কন্ডিশনড বাস ও প্লেনও চলবে। ভাড়া নির্ধারণের সময় বেসরকারি সংস্থাগুলিকে সেকথা মাথায় রাখতে হবে।’’
রেলভাড়া (Train Fare) ভারতে একটি স্পর্শকাতর বিষয়। ভারতে প্রতিদিন ট্রেনে রোজ যত যাত্রী যাত্রা করেন, সেই সংখ্যা অস্ট্রেলিয়ার জনসংখ্যার সমান। দেশের দরিদ্র মানুষের গরিষ্ঠ অংশ আজও যাতায়াতের জন্য ট্রেনের উপরেই নির্ভর করেন। গত কয়েক দশকে অবহেলা ও অযোগ্য আমলাতন্ত্রের ফাঁসে সমস্যায় পড়তে হয়েছে ভারতীয় রেলকে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রশাসন ট্রেন চালানো থেকে স্টেশনের আধুনিকীকরণ, সব বিষয়েই বিনিয়োগে বেসরকারি সংস্থাগুলিকে আহ্বান করেছে।
অ্যালস্টম এসএ, বম্বার্ডিয়ার ইনকর্পোরেটেড, জিএমআর ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড এবং আদানি এন্টারপ্রাইসেস লিমিটেডের মতো বেসরকারি সংস্থাগুলি ইতিমধ্যেই উৎসাহ দেখিয়েছে রেলে বিনিয়োগের বিষয়ে। ভিকে যাদব একথা জানিয়েছেন। রেলমন্ত্রকের হিসেবে, এর ফলে রেলে ৭৫০ কোটি ডলারেরও বেশি বিনিয়োগ হতে পারে। রেলের আধুনিকীকরণ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। কেননা তিনি জাপানের থেকে কম সুদে ঋণ নিয়ে ২০২৩ সালের মধ্যে দেশে বুলেট ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা করেছেন। পাশাপাশি যাত্রীবাহী লোকাল ট্রেনের গতি বাড়ানোর ব্যাপারেও পদক্ষেপ করেছে সরকার।
গত জুলাইয়ে ১০৯টি রুটে ১৫১টি ট্রেন চালানোর ব্যাপারে বেসরকারি সংস্থাগুলির দৃষ্টি আকর্ষণ করে সরকার। চাওয়া হয়েছিল দরপত্র। ৩৫ বছরের লিজে এই পরিচালন ভার নিতে পারবে বেসরকারি সংস্থাগুলি। পাশাপাশি নয়াদিল্লি ও মুম্বইয়ের মতো বহু রেল স্টেশনের আধুনিকীকরণের দায়িত্বও বেসরকারি সংস্থাকে দেওয়ার ইচ্ছাও সেই সময় প্রকাশ করেছিল সরকার।
প্রসঙ্গত, সেসময় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী টুইট করে সরকারের এমন সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, এই সিদ্ধান্তের জন্য দেশের জনতা কখনও সরকারকে ক্ষমা করবে না। তারা এর জবাব দেবে।