রেলে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা করে বাড়িতেই গা ঢাকা দিয়েছিল প্রতারক। অথচ সৌমেন বসুর নামে মিসিং ডায়েরি করে রেখেছিলেন পরিবারের লোকেরা। যাতে তার হদিশ কেউ না পায়। বাড়ির চারদিকে লাগানো তিনটি সিসিটিভি ক্যামেরা। দূর থেকে অচেনা কাউকে দেখলেই পিছনের দরজা দিয়ে পালাত সে। তাই পুলিশ তার নাগাল পাচ্ছিল না। শেষ পর্যন্ত বড়বাজার থানার পুলিশ অফিসার সন্দীপ পাল ও তাঁর টিমের সদস্যরা সাফাইকর্মীর ছদ্মবেশে গ্রেপ্তার করলেন ওই প্রতারণার অভিযুক্তকে।
পুলিশ জানিয়েছে, গত বছর শেষের দিকে হাওড়া সালকিয়া বাগানের বাসিন্দা সৌমেন রেলে চাকরি দেওয়ার নাম করে বেশ কয়েকজন যুবককে ফাঁদে ফেলে। ব্যাংক কর্মী এক মহিলা বড়বাজার থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর কাছ থেকে সে আড়াই লক্ষ টাকা প্রতারণা করেছে বলে অভিযোগ। গত ডিসেম্বর মাসে চাকরি দেওয়ার নাম করে এই টাকা নেয় সৌমেন। এরপর অভিযোগকারীর ছেলে ও আরও কয়েকজনকে হাওড়ার একটি কারশেডে নিয়ে গিয়ে বলে, এখানেই তাদের মেডিক্যাল পরীক্ষা ও প্রশিক্ষণ হবে।
তার আচরণে কিছু অসংগতি থাকায় কয়েকজনের সন্দেহ হয়। তাঁরা টাকা ফেরত চান। তারপর থেকেই উধাও হয়ে যায় সে। তদন্ত শুরু করে পুলিশ সৌমেনের ঠিকানা জোগাড় করে। কিন্তু তাকে ধরাই ছিল সমস্যা। সিসিটিভির ফুটেজে সারাক্ষণ নজর রাখত সে। পুলিশ এসেছে বুঝতে পারলেই পিছনের গেট দিয়ে পাঁচিল টপকে পালিয়ে যেত। এভাবে দু’বার পালিয়ে যায় সে। তাই শেষমেশ ছদ্মবেশ ধরার পরিকল্পনা করে পুলিশ। বুধবার পুলিশ সাফাইকর্মী সেজে অভিযুক্তের বাড়িতে হানা দেয়। সিসিটিভির ফুটেজ দেখে পুলিশকে চিনতে পারেনি সে। বাড়ি পরিষ্কার করার নাম করে সৌমেনের স্ত্রীকে তালা খুলতে বলে পুলিশ। কিন্তু স্ত্রী রাজি হয়নি। তারপর অবশ্য বাড়ির ভিতরে থাকা সৌমেনের সন্দেহ হয়। সে পালানোর চেষ্টা করে।
এর মধ্যেই পুলিশ অফিসারদেরও সন্দেহ হয় যে অভিযুক্ত হয়তো পালাবে। তাঁরা দ্রুত নিচে চলে আসেন। দেখেন, পাঁচিল টপকে পালিয়ে রাস্তায় নেমে পড়েছে সে। কিন্তু সেখানেও সাফাইকর্মীর ছদ্মবেশেই অপেক্ষা করছিলেন অন্য পুলিশকর্মীরা। তাই আর পালাবার পথ পায়নি। পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যায়। তাকে জেরা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।