নয়া কৃষি বিল (Farm Bill 2020) ইস্যুতে রীতিমতো চাপের মুখে বিজেপি। দলের সবচেয়ে পুরনো সঙ্গীই তাঁদের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করেছে। যা রাজনৈতিকভাবে বিজেপির জন্য বড়সড় ধাক্কা হতে পারে। আর সম্ভবত সেটা অনুধাবন করতে পেরেই এই ইস্যুতে মুখ খুলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। তাঁর দাবি, কৃষকদের ভুল বোঝানো হচ্ছে। এই নয়া বিল কৃষিক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে।
কৃষিক্ষেত্রে ফসল বিক্রি এবং কৃষিপণ্যের বাজারে সরকারি নিয়ন্ত্রণ কমাতে অনেক আগেই তিনটি অর্ডিন্যান্স জারি করেছিল কেন্দ্র। যে অর্ডিন্যান্সে বেসরকারি সংস্থার জন্য সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ফসল কেনার রাস্তা খুলে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে বেসরকারি সংস্থা চাইলে সরকারের অনুমতি ছাড়াই নিজেদের মতো দামে কৃষকদের কাছ থেকে ফসল কিনতে পারবে। তবে, এই বিলের পরও বর্তমানে সরকার যেভাবে ন্যূনতম সমর্থন মুল্য দিয়ে ফসল কেনে, সেই পদ্ধতিতে কোনও বদল আসবে না। বৃহস্পতিবার লোকসভায় এই অর্ডিন্যান্সগুলি বিল আকারে ধ্বনিভোটে পাশ হয়ে যায়। যদিও কৃষকদের ধারণা, এই বিল পাশ হওয়ার ফলে বাজার থেকে সরকারি নিয়ন্ত্রণ সরে যাবে। সরকার ধীরে ধীরে ন্যূনতম সমর্থন মুল্যে ফসল কেনা বন্ধ করে দেবে। ফলে কৃষকদের পুঁজিপতিদের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হবে। ইতিমধ্যেই পাঞ্জাব ও হরিয়ানার কৃষকরা এই বিলের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছেন। আগামী ২৪-২৭ সেপ্টেম্বর পাঞ্জাবে রেল রোকো কর্মসূচি নিয়েছে কৃষকদের একটি সংগঠন। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর ডাকা হয়েছে ভারত বনধ।
প্রথমে এই বিলকে সমর্থন করলেও কৃষকদের প্রতিবাদের বহর দেখে এর বিরোধিতা করছে বিজেপির সবচেয়ে পুরনো জোট শরিক শিরোমণি অকালি দল (SAD)। মোদি মন্ত্রিসভায় অকালিদের একমাত্র মন্ত্রী হরসিমরত কৌর বাদল গতকালই মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেছেন। দলের বর্তমান সুপ্রিমো সুখবীর সিং বাদল সাফ জানিয়েছেন, এভাবে এনডিএতে থাকা তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়। দলের কোর কমিটির মিটিং ডেকে জোট নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চান তাঁরা। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে আসরে নেমেছেন মোদি। বৃহস্পতিবার জোড়া টুইটে তিনি জানিয়েছেন,”কিছু কিছু শক্তি কৃষকদের ভুল বোঝানোর চেষ্টা করছে। আমরা আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই, এই বিল পাশের পরও আগের মতোই সরকার ন্যূনতম সমর্থন মুল্যে ফসল কিনবে। বরং আপনাদের কাছে বিকল্প আরও বাড়বে।” প্রধানমন্ত্রীর দাবি,” এই মুহূর্তে কৃষকদের জন্য এই বিল ঐতিহাসিক। কারণ, এর ফলে দালালচক্র আর ফড়েরাজ বন্ধ হবে। কৃষকরা নিজেদের ফসল বিক্রির জন্য নতুন দিগন্তের সন্ধান পাবেন। এর ফলে কৃষকদের রোজগার অনেক বাড়বে।”