তাহলে দেখা গেল মোদিই ঠিক, মমতা নয়। তাহলে দেখা গেল ঝাড়গ্রামের সভায় নরেন্দ্র মোদি যা বলেছিলেন তা সত্যি। মমতাই ঠিক বলেননি। সবচেয়ে বড় কথা মমতার কথাতেই সে কথা বেরিয়ে এল। বিষ্ণুপুরের জনসভায় মমতা এবার নিজেই জানালেন, রাজ্যের ফণী বিধ্বস্ত পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠক করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু নির্বাচনী প্রচারে ব্যস্ত মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকের কথায় আমল দেননি। সোমবার বিষ্ণুপুরের জনসভা থেকে সে ব্যাপারে সাফাইও দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। বলেন, “এক্স প্রাইম মিনিস্টারের সঙ্গে আমি কোনও কথা বলব না। বলতে হলে নতুন প্রধানমন্ত্রীকে বলব।” অজুহাতের সুরে মমতা আরও বলেন, “নবীন পট্টনায়েকের ভোট হয়ে গিয়েছে। তাই আপনার সঙ্গে ঘুরেছেন। আমার ভোট হয়ে গেলে আমিও যেতাম। কিন্তু ভোটের সময় আপনার সঙ্গে আমি কোনও কিছু শেয়ার করব না। এটা ভাল করে মাথায় ঢুকিয়ে নিন।”
প্রসঙ্গত ফণী বিধ্বস্ত এলাকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়কের সঙ্গে ওড়িশায় বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। অতিরিক্ত অনুদান মঞ্জুর করেন। নরেন্দ্র মোদি চেয়েছিলেন কলাইকুন্ডাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করে রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে। এবং সেই মতো সাহায্য করতে। কিন্তু নির্বাচনী ব্যস্ততার কারণ দেখিয়ে বৈঠক করতে সম্মত হননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিকে নবান্ন সূত্রে জানানো হয়, বৈঠক সংক্রান্ত কোনও খবর কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ ঠেকে রাজ্য প্রশাসনের কাছে জানানো হয়নি। তাই বৈঠকের কোনও প্রশ্নই আসে না। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকে যোগদান না করা নিয়ে সাফাই দেওয়ায় পরিস্কার হয়ে গেল প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান তিনি পেয়েছিলেন! তাহলে? রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা যদি রাজ্য প্রশাসনের কাছে প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় থেকে কোন যোগাযোগই না করা হবে, তাহলে নির্বাচনী জনসভার মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী সাফাই দিচ্ছেন কেন?
তাহলে জলের মতো স্পষ্ট হয়ে গেল, প্রধানমন্ত্রী যে দাবি করেছিলেন ঝাড়গ্রামের জনসভায়। তিনি যে বার বার ফোন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রীকে। মুখ্যমন্ত্রী যে তার ফোনের ধরেননি বা জবাব দেননি। তা বাস্তব, তা সত্যি। তাহলে মমতা প্রথমে স্বীকার করলেন না কেন? পরে তো সেই ঢোক গিলতে হল!