কোয়েস ইস্টবেঙ্গল কত টাকার দেনা ঘাড়ে রেখে গিয়েছে, সে সম্পর্কে ইস্টবেঙ্গল ক্লাব (East Bengal FC) থেকে পুরোপুরি তথ্য না পাওয়ায় শেষ পর্যন্ত ফের ‘শ্রী সিমেন্ট ইস্টবেঙ্গল ফাউন্ডেশন’ নামক কোম্পানি থেকে আইএসএল খেলার জন্য আবেদন করা হল। সোমবার অনলাইনে বিড জমা দেওয়ার শেষ দিন থাকায় লাইসেন্সিং সমস্যা এড়ানোর জন্য রবিবার রাতে শ্রী সিমেন্ট, এফএসডিএল এবং ফেডারেশনের মধ্যে আলোচনায় ঠিক হয়, ক্লাবের যে নামে লাইসেন্স রয়েছে, সেই ‘ইস্টবেঙ্গল ফুটবল ক্লাব প্রাইভেট লিমিটেডে’র নামেই আইএসএল খেলার জন্য বিড পেপার জমা দেওয়া হবে। তাতে লাইসেন্সিং সমস্যা এড়ানো গেলেও অন্য আরেক সমস্যা এসে দেখা দেয়।
শ্রী সিমেন্ট কর্তৃপক্ষ এখনও জানেই না, কোয়েস ইস্টবেঙ্গল থেকে ঠিক কত টাকার দেনা ইস্টবেঙ্গলের ঘাড়ে এসে চেপেছে। বিভিন্ন জায়গা মারফত শ্রী সিমেন্ট জানতে পেরেছে, ইস্টবেঙ্গল ফুটবল ক্লাব প্রাইভেট লিমিটেডের নামে বিড জমা দেওয়া হলে সেক্ষেত্রে কোয়েসের সাত কোটি টাকার দেনা তাদের ঘাড়ে চলে আসবে। তাই কোয়েসের ঠিকঠাক দেনার পরিমাণ জানার জন্য ক্লাবের কাছে তথ্য চাওয়া হয়। যার কাগজপত্র এদিন দিতে পারেনি ক্লাব। এর সঙ্গে লাইসেন্সিংয়ের আরও একটি নিয়ম রীতিমতো ভাবিয়ে তোলে শ্রী সিমেন্টকে। যা এদিনই চোখে পড়ে শ্রী সিমেন্ট কর্তাদের। লাইসেন্সিংয়ের নিয়মে বলা রয়েছে, ডিরেক্টরদের বোর্ডে ইনভেস্টরের থেকে ক্লাবের প্রতিনিধি বেশি রাখতে হবে। নাহলে প্রতিনিধির সংখ্যা সমান হবে। যে নিয়মের জন্য কোয়েস ইস্টবেঙ্গল এফসির সময় ইনভেস্টর হিসেবে কোয়েস টাকা দিলেও, বোর্ডে আটজন সদস্যের মধ্যে কোয়েসের পক্ষে ছিলেন চারজন। ইস্টবেঙ্গলের পক্ষে চারজন। এই নিয়ম জানার পর এদিন শ্রী সিমেন্ট কর্তারা বেঁকে বসেন। কারণ, ক্লাবের পুরনো কোম্পানি ‘ইস্টবেঙ্গল ফুটবল ক্লাব প্রাইভেট লিমিটেড’ নামে আইএসএলে লাইসেন্স থাকলে, ডিরেক্টর বোর্ডে ক্লাব থেকেও সমান সংখ্যক প্রতিনিধি রাখতে হবে। যা শ্রী সিমেন্ট (Shree Cement) কর্তৃপক্ষ একদমই চাইছে না। একে তো দেনার পরিমাণ জানা যায়নি। তার উপর বোর্ডে ইস্টবেঙ্গল প্রতিনিধিদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে যাবে। ফলে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ঠিক হয়, ‘শ্রী সিমেন্ট ইস্টবেঙ্গল ফাউন্ডেশন’ নামেই আইএসএল (East Bengal in ISL) খেলার জন্য আবেদন করবে নতুন কোম্পানি।
তারপরেই সোমবার ঠিক সময়ের মধ্যেই ‘শ্রী সিমেন্ট ইস্টবেঙ্গল ফাউন্ডশেনে’র নামে বিড পেপার জমা দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবারের মধ্যে জমা হবে হার্ড কপি। যেহেতু লাইসেন্সিং আইন কানুন নিয়ে পুরো ব্যাপারটি জটিল হয়ে গিয়েছে, তাই সরকারি ভাবে এই মুহূর্তে এফএসডিএল থেকে সরকারিভাবে কিছুই জানানো হচ্ছে না। বরং ফেডারেশনের সঙ্গে আলোচনায় শ্রী সিমেন্ট ইস্টবেঙ্গল ফাউন্ডেশনকে কীভাবে লাইসেন্স দেওয়া যায়, তা নিয়েই আলোচনা চলছে। শ্রী সিমেন্ট ইস্টবেঙ্গল ফাউন্ডেশনকে আইএসএল খেলানোর জন্য এই মুহূর্তে এগিয়ে এসেছে ফেডারেশনও। তাই আশা করা হচ্ছে, লাইসেন্সিং নিয়ে খুব একটা সমস্যা হবে না। আসলে ক্লাবের খেলাধুলোর পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে রাখতে চাইছে শ্রী সিমেন্ট। কিছুদিনের মধ্যেই বাইরে থেকে নতুন সিইও চলে আসার পর তিনিই সব কিছু চালাবেন। শ্রী সিমেন্টর প্রাথমিক লক্ষ্য হল, ফুটবল দলের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি নেওয়া। তারপর ধীরে ধীরে ক্রিকেট, হকি, অ্যাথলেটিক সব কিছু নিজেদের মত করে সাজাবে।
তবে এই পুরো ব্যাপারটা এই মুহূর্তে শ্রী সিমেন্ট, এফএসডিএল (FSDL) এবং ফেডারেশনের মধ্যেই হচ্ছে। এর পাশাপাশি নিজেদের প্রস্তুত রাখার জন্য বিদেশি কোচের বায়োডাটা সংগ্রহ করছে শ্রী সিমেন্ট কর্তৃপক্ষ। যেই
মুহূর্তে আইএসএল খেলার কথা ঘোষণা হবে, সেই মুহূর্তে যাতে নতুন কোচের নাম ঘোষণা করা যেতে পারে।