গোটা বিশ্বের থেকে তারা যে আলাদা ফের বুঝিয়ে দিল রাশিয়া (Russia)। ফ্রোজেন অবতারের পাশাপাশি টিকার ‘ফ্রিজ ড্রায়েড’ অবতারও তৈরি করে ফেলল ভ্লাদিমির পুতিনের (Vladimir Putin) দেশ। এই ‘ফ্রিজ ড্রায়েড’ টিকা দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় পাঠানো যাবে। ‘ফ্রোজেন’ অবতারের মতো মাইনাসে সংরক্ষণ করার হ্যাপা নেই। ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখলেই হবে। অর্থাৎ থার্মোকলের বাক্সে ভরেই বিদ্যুৎবিহীন এলাকায় পাঠানো যাবে স্পুটনিক ভি-র শুকনো টিকা। বৃহত্তর অংশকে জন্য অবশ্য ফ্রোজেন টিকাই দেওয়া হবে। যা ডিপ ফ্রিজে মাইনাস ১৮ ডিগ্রি থেকে মাইনাস কুডি ডিগ্রি সেলসিয়াসে বেশ কয়েকমাস মজুত রাখা যাবে। ক্রায়ো প্রযুক্তির কেরামতিতে তৈরি এই ড্রাই-ভ্যাকসিন ডিসটিলড ওয়াটারের সঙ্গে মিশিয়ে প্রয়োগ করা হবে।
স্পুটনিকের দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের ফল শুক্রবার বিশ্ববন্দিত ল্যানসেট ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয়। তাতে দেখা যায় কোনওরকম পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছাড়াই একশো শতাংশ রক্ষাকবচ দিচ্ছে স্পুটনিক (Sputnik)। সেখানে দু’টো দলে ভাগ করে ৭৬ জনের উপর প্রয়োগ করা হয়েছে টিকা। একটি দলের উপর ফ্রোজেন টিকা। অন্য দলের স্বেচ্ছাসেবকদের উপর ফ্রিজ-ড্রায়েড টিকা। দু’টি ক্ষেত্রেই ভাল ফল মিলেছে বলে দাবি করেছেন রুশ বিজ্ঞানীদের। রাশিয়ার বহু অঞ্চল মূল ভুখণ্ড কার্যত বিচ্ছিন্ন। বিদ্যুৎ-সহ একাধিক নাগরিক সুযোগ-সুবিধা অমিল। ওই দুর্গম অঞ্চলের বাসিন্দাদের কথা ভেবেই এই ফ্রিজ ড্রায়ার যন্ত্রের মাধ্যমে জলীয় অংশ বের করে দিয়ে সেমি-সলিড পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হয় টিকাকে। যাতে অনেক দিন পর্যন্ত সাধারণ ফ্রিজেই মাসাবধিক কাল রাখা যায় এই টিকা।
ভারতেও এখন বহু অঞ্চল আছে সেখানে বিদ্যুতের সুবিধা নেই। ডিপ ফ্রিজের ব্যবস্থা নেই। রাশিয়ার এই ড্রাই-ভ্যাকসিন সেই দুর্গম অঞ্চলের বাসিন্দাদের উপর প্রয়োগ করা যাবে বলে জানালেন অধ্যাপক ডা. সিদ্ধার্থ জোয়ারদার। ব্রিটেনের অক্সফোর্ড থেকে শুরু আমেরিকার মডার্না, জার্মানির ফাইজার, বায়ো এন্ডটেক, চিনের সাইনোভ্যাক-অনেকেই টিকাযুদ্ধে নেমেছে। কিন্তু কেউই দুর্গম অঞ্চলের মানুষের কথা ভাবেনি। রাশিয়াই প্রথম ভাবল।