সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনের আগে বিরোধী কংগ্রেসের নানাবিধ ইস্যুতে আক্রমণ নরেন্দ্র মোদীর কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। তবে খুব একটা সুখকর অবস্থায় নেই কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। কারণ নিজের কেন্দ্র আমেঠিতেই তীব্র ক্ষোভ জন্মেছে রাহুলের বিরুদ্ধে।
উত্তর প্রদেশের আমেঠি কংগ্রেস তথা গান্ধী পরিবারের বরাবরের শক্ত ঘাঁটি। ওই কেন্দ্র থেকেই সাংসদ হয়েছিলেন রাজীব গান্ধী। পুত্র রাহুলও ওই কেন্দ্র থেকেই লড়াই করছেন ২০০৪ সাল থেকে। তিন বারের সাংসদ হয়েও উন্নয়ন কিছুই করতে পারেননি কংগ্রেস সভাপতি। সাংসদের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ করেছেন আমেঠি কেন্দ্রের জগদীশপুর গ্রামের বাসিন্দারা।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে, ২০১৪ সালে এই গ্রামটুইকেই সংসদ আদর্শ গ্রাম যোজনা প্রকল্প্বের অধীনে দত্তক নিয়েছিলেন। ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসে দত্তক নেওয়ার পরের সাড়ে চার বছরে আর জগদীশপুরে রাহুল গান্ধীকে দেখা যায়নি বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
গ্রামের উন্নয়নের জন্য একগুচ্ছ প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল। সেই সময়ে উন্নয়নে ক্ষেত্রে কতগুলি খামতি ছিল। সেগুলিই পূরণ করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু সেই সব কিছুই হয়নি বলে দাবি করেছেন স্থানীয় বাসিন্দা কেসরি নন্দন। ওই গ্রামেরই বাসিন্দা জীতেন্দ্র যাদবের মতে, “আমাদের এলাকায় দশকের পর দশক ধরে গান্ধী পরিবার শাসন করে গিয়েছে। আমরা তাঁদের ভোটে জিতিয়েছি। কিন্তু সাংসদকে শুধু কমিউনিটি হলেই দেখা যায়। আমাদের সঙ্গে গত পাঁচ বছরে রাহুল গান্ধী ৩০ সেকেন্ডও কথা বলেননি। আমাদের দাবিদাওয়া শুধু ব্যাগে পুরেই নিয়ে গিয়েছেন।”
সাংসদ রাহুল গান্ধীর উপরে ক্ষোভ থেকেই কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপি শিবিরে নাম লিখিয়েছেন জিতেন্দ্র যাদব। তাঁর মতে, “গ্রামের একজনের কথাও সাংসদ শোনেন না, তাহলে সমগ্র লোকসভা কেন্দ্রের কথা তিনি কী করে শুনবেন? তিনি কংগ্রেসের সভাপতি হতে পরেছেন কিন্তু মানুষের সভাপতি হতে পারেননি।” একই সঙ্গে তিনি আরও বলেছেন, “রাহুল গান্ধী নিজেকে সকলের রাজা বলে মনে করতে পারেন। কিন্তু সাধারণ মানুষ তাঁকে পছন্দ করেন না।” দত্তক নিলেও জগদীশপুর গ্রামের জন্য সংসদ তহবিলের অর্থে রাহুল গান্ধী কিছুই করেননি বলে অভিযোগ করেছেন জীতেন্দ্র যাদব।
আমেঠি কেন্দ্রে কংগ্রেস সভাপতির বিরুদ্ধে বিজেপির প্রার্থী স্মৃতি ইরানি। গত পাঁচ বছর ধরে মোদী সরকারের একাধিক মন্ত্রক সামাল দিয়েছেন স্মৃতি। আমেঠি থেকে গত লোকসভা নির্বাচনে লড়াই করেলও পরাস্ত হয়েছিলেন। জিততে না পারলেও স্মৃতি ইরানি আমেঠির পাশে ছিলেন বলে জানিয়েছেন জীতেন্দ্র যাদব। অনেক কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা জগদীশপুর স্মৃতির সৌজন্যে পেয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। কেন্দ্রের নানাবিধ প্রকল্প মন্ত্রী স্মৃতির দৌলতে মিলেছে বলে স্বীকার করে নিয়েছেন গ্রামের বাসিন্দা বৃজ মোহন লাল।