ভাবুন পঁচাত্তরটি ‘সত্যিকথা’, ভোটদিন তারপর

ভোট দেবেন কাকে?
আপনি অবশ্যই বলবেন, “আমার যাকে ইচ্ছে হবে তাকে।”
একথা বলার হক আপনার আছে। সংবিধান আপনাকে সে অধিকার দিয়েছে। ভারতবাসী হিসেবে আপনার ভোট বিক্রয়যোগ্য নয়। আর ভোটাধিকার একান্তভাবেই আপনার নিজস্ব। কিন্তু তবুও ভোট দেবার আগে একটু তো ভাবনা চিন্তা করে নিতেই হয়, কাকে ভোট দেবেন? অর্থাৎ প্রার্থী হিসেবে কাকে বেছে নেবেন? কোন দলকে ভোট দেবেন? পশ্চিমবঙ্গে আপনার প্রথম পছন্দ কোন দল? আর ভাবতে হবে কেন দেবেন? বা কোনও দল বা প্রার্থীকে কেন দেবেন না?
এই ভাবনাচিন্তাটারই নাম ভোট সচেতনতা। কেউ কেউ বলেন রাজনৈতিক সচেতনতা। এই চেতনাশক্তির সঠিক গুণমানই নির্ধারণ করে, নির্বাচনে সঠিক দল এবং সঠিক প্রার্থী নির্বাচিত হলো কিনা। এই চেতনাই স্থির করে দেয়, দেশের অর্থনীতি, সমাজনীতি, রাজনীতি চলবে কোন পথে। সেই পথ কি কেবলই দলমুখী নাকি জনমুখী?
ভারতবর্ষের লোকসভা নির্বাচন চলছে। এবং এবারের নির্বাচনে কম বেশি সব দলেরই পাখির চোখ পশ্চিমবঙ্গ। কারণ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজ্য এবং কেন্দ্রের বিরোধিতা একমাত্র পশ্চিমবঙ্গেই যতটা তীব্র চেহারা নিয়েছে, অন্য রাজ্যে ততটা হয়নি। অথবা বলা চলে, নেহাতই রাজনৈতিক কারণে রাজ্য সরকার একতরফাভাবে যেভাবে কেন্দ্রের বিরোধিতা করে চলেছে তা নজিরবিহীন। ফলে নির্বাচনী উত্তাপ চরমে। এই উত্তাপ আরও তীব্র কারণ এবারই প্রথম সঠিক বিরোধী শক্তি হিসেবে পশ্চিমবঙ্গে উঠে এসেছে ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপি। গত কয়েক মাস আগের পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্য শাসকদলের পেশিশক্তির ব্যবহারের পাল্টা শক্তি হিসেবেও উঠে এসেছে বিজেপি। ফলে একাধারে রাজনৈতিক মোকাবিলা, অন্যদিকে পেশিশক্তির মোকাবিলায় যুযুধান দু’পক্ষই।
আপনি এ রাজ্যের রাজনৈতিক দলগুলির অবস্থান জানেন। আপনার অভিজ্ঞতা আছে—কোন দল কেমন। তবুও এমন অনেক তথ্যই আপনার কাছে এসে পৌঁছয়নি অথবা আপনি ভেবেই দেখেননি যা শুনলে বা ভাবলে আপনি ভোট দেবার ব্যাপারে সঠিক সিদ্ধান্তটি নিতে পারবেন। ভোটকেন্দ্রে ঢোকার আগে প্রতিটি স্তরের মানুষের সামনে ভেসে ওঠা উচিত সেই প্রশ্নগুলি যা মানুষের সচেতনতার পরিচয় দেবে।
এই প্রবন্ধে আমরা সেরকমই কিছু বাছাই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলে ধরব যেগুলোর উত্তরে আপনার দেওয়া ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’-ই ঠিক করবে আগামী পাঁচ বছর ভারত হাঁটবে কোন পথে?
প্রশ্নগুলি হল : আপনি কি এমন কোনও ব্যক্তি বা ওই ব্যক্তির নেতৃত্বাধীন দলকে ভোট দেবেন?
১। যাঁর নিজের বা তাঁর পরিষদবর্গের মুখের ভাষা কুৎসিত?
২। যিনি চিটফান্ড কাণ্ডে গরিবের টাকা লোটেন। হাজার হাজার কোটি টাকা। আবার সেই লুটের তদন্তেই বাধা দেন সশরীরে ধরনায় বসে।
৩। যাঁর শরীরি ভাষা কদর্য এবং বঙ্গসংস্কৃতির পরিপন্থী।
৪। যাঁর নিম্নরুচির প্রকাশভঙ্গিমা পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে লজ্জিত করে।
৫। যিনি পুরোপুরি মস্তানি ভাষায় প্রকাশ্যে ঘোষণা করেন, তিনি রাজ্যের গুন্ডাদের কন্ট্রোল করেন।
৬। যিনি দেশের প্রধানমন্ত্রীকে কোমরে দড়ি বেঁধে ঘোরাবেন বলে ঘোষণা করেন।
৭। যিনি দেশের প্রধানমন্ত্রীকে ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে বুঝে নিতে চান।
৮। প্রধানমন্ত্রী ‘দিদি’ বলে সম্বোধন করলেও তিনি প্রত্যুত্তরে তাঁকে ‘গব্বর সিং, ‘ডাকাত সর্দার’ বলে গালাগালি দেন।
৯। যিনি প্রকাশ্যে ঘোষণা করেন, রাজ্যে কোনও বিরোধী দল থাকবে না। ৪২ টা আসনই তিনি জিতবেন যেভাবেই হোক।
১০। যাঁর নির্দেশে তার দলীয় কর্মীরা ডায়মন্ড হারবার থেকে কুচবিহার অবাধে ভোট লুট করে, ছাপ্পা ভোট দেয়, বোমা ছোঁড়ে, গুলি ছোঁড়ে, মানুষ মারে।
১১। যাঁর টালির চালের ঘরে চলে দু’খানা এসি মেসিন, যিনি রিবক কোম্পানির হাওয়াই চপ্পল পরেন, যার জন্য ধনিয়াখালিতে তৈরি হয় মসলিন তৈরির কায়দায় সেরা সুতির শাড়ি।
১২। যিনি আপনার ভোটে জয়ী হয়ে নিজের পরিবারকে আর্থিকভাবে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে কলাগাছ করে তুলছেন।
১৩। যিনি নিজে হতে চান প্রধানমন্ত্রী আর দলের সব পুরনো কর্মীদের লাথি মেরে রাজ্যের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে প্রোজেক্ট করেন ভাইপোকে।
১৪। যাঁর ভাইপো বাস করেন এক বিধবার লুট করা সম্পত্তিতে তৈরি প্রাসাদোপম অট্টালিকায়, যেখানে সিঁড়ির বদলে আছে এসকালেটর, আছে সুইমিং পুল, আছে থাইল্যান্ড থেকে পাচার করা নামীদামি বুদ্ধমূর্তিসহ নানারকম ইনটিরিয়র ডেকরশন আইটেম আর এক কোটি টাকার ঝাড়বাতি।
১৫। যাঁর ভাইয়েরাই গোটা রাজ্যে নীল সাদা রঙ সরবরাহ করে।
১৬। যাঁর বড়ো ভাই এখন ভারতসেরা চেইন অব হোটেলের মালিক।
১৭। যাঁর ছোটোভাই কলকাতার ফুটবল ক্লাবগুলির নিয়ামক এবং গোটা কালীঘাট অঞ্চলের মাফিয়া-ত্রাস।
১৯। যার ভাইয়েরা কালীঘাট অঞ্চলের ৬৫টি প্লট কিনেছেন কম দামে। গায়ের জোরে এবং গোটা এলাকাটিই হয়ে উঠেছে ব্যানার্জিপাড়া।
২০। যিনি ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের সাংবিধানিক পরিকাঠামোকে অস্বীকার করেন।
২১। যিনি কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলিকে নিজের রাজ্যের নামে চালিয়ে দাবি করেন প্রকল্পগুলি তাঁর। যেমন স্বচ্ছ ভারত অভিযান প্রকল্প হয়েছে নির্মল বাংলা মিশন। প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার নাম হয়েছে বাংলা সড়ক যোজনা। যিনি আয়ুষ্মন ভারত প্রকল্পের মতো কেন্দ্রীয় প্রকল্পকে অস্বীকার করে রাজ্যের কোটি কোটি মানুষকে প্রাপ্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত করেন।
২২। যিনি পশ্চিমবঙ্গের উন্নতির পথে স্পিডব্রেকার বলে চিহ্নিত হন।
২৩। যাঁর নির্দেশে রাজ্যের ছোট ও প্রান্তিক চাষিদের তালিকা কেন্দ্রের কাছে পাঠানো হয় না যাতে তারা কৃষি সম্মান যোজনার অর্থ থেকে বঞ্চিত হন। মৎস্যজীবীদের নাম পাঠানো হয় না যাতে মৎস্যচাষীরা কেন্দ্রীয় প্রকল্পের আওতাভুক্ত না হতে পারেন এবং প্রচার করতে পারেন, কেন্দ্র রাজ্যের মানুষকে বঞ্চিত করেছে।
২৪। যাঁর নেতৃত্বে সিন্ডিকেট রাজ (প্রোমোটিং, বালি খাদান, মাটি খাদান, কয়লা খাদান, রেলওয়ের স্ক্রাপ) ছাড়া কোনও কাজ করা যায় না।
২৫। যিনি তোলাবাজদের প্রশয় দেন এবং প্রকাশ্য সভায় নির্দেশ দেন সংগৃহীত অর্থের ৭৫ শতাংশ দলকে দিতে হবে।
২৬। যাঁর আমলে একের পর এক সেতু ভেঙে পড়ে।
২৭। যিনি প্রাক্তন রেলমন্ত্রী হয়েও রাজ্যে মেট্রো রেলের কাজ রুখে দেন।
২৮। যাঁর নেতৃত্বাধীন রাজ্যে কলেজে ভর্তি হতে গেলে, চাকরি পেতে গেলে, জমি কিনতে গেলে, বাড়ি কিনতে গেলে তোলাবাজদের খুশি করতে হয় আগে।
২৯। যিনি মিথ্যা বলেন বেশি, সত্য বলেন কদাচিৎ।
৩০। যিনি যে স্কুলে বাংলা শিক্ষক দরকার সেখানে পাঠান উর্দু শিক্ষক। ছাত্ররা প্রতিবাদ করলে, তার পুলিশ তাদের বুকে গুলি চালায়।
৩১। মুসলমানরা তার কাছে প্রধান নাগরিক। তাই তাদের জন্য সব প্রকল্প প্রাধান্য পায়। সামগ্রিকভাবে শিক্ষা বাজেটে যা খরচ হয় তার চেয়ে অনেক বেশি বাজেট ধরা হয় মাদ্রাসা শিক্ষা খাতে।
৩২। যাঁর নেতৃত্বে হিন্দু-শত্রু রোহিঙ্গারা এরাজ্যে আশ্রয় পায়।
৩৩। যাঁর নেতৃত্বে এরাজ্যে মুসলিম অবৈধ অনুপ্রবেশ ঘটে অবাধে এবং মাত্র গত ৮ বছরে রাজ্যের মুসলমান জনসংখ্যা দাঁড়িয়ে যায় সর্বকালীন রেকর্ডে।
৩৩। যাঁর সরকারে শিল্পখাতে বাজেট বরাদ্দ ২১৫৪ কোটি টাকা। অথচ মাদ্রাসা শিক্ষায় বাজেট বরাদ্দ ২০১৫ কোটি টাকা।
৩৪। যিনি শিল্প ধরার নামে পেটোয়া সাংবাদিকদের নিয়ে ঘন ঘন বিদেশে বেড়াতে যান কিন্তু শিল্প আসে না।
৩৪। যিনি প্রতি বছর শিল্প সামিটের নামে জনগণের কোটি কোটি টাকা নয়ছয় করেন।
৩৬। যাঁর আমলে অপরাধী মুসলমানদের বিরুদ্ধে কোনও হিন্দুর দায়ের করা অভিযোগ গ্রহণ করা হয় না।
৩৭। যাঁর আমলে পশ্চিমবঙ্গ ড্রাগ ব্যবসার স্বর্গভূমি হয়ে উঠেছে, পশ্চিমবঙ্গ এখন ড্রাগ হাব হিসেবে চিহ্নিত।
৩৮। অপরাধ প্রবণতায় পশ্চিমবঙ্গ এখন প্রথম দশ রাজ্যের মধ্যে অষ্টম স্থানে। এসবই হয়েছে তাঁর আমলে।
৩৯। যাঁর নেতৃত্বে পশ্চিমবঙ্গ দেশের মধ্যে নারীপাচারকারী রাজ্য হিসেবে সেরা রাজ্যের স্থান দখল করেছে।
৪০। যাঁর আমলে মহিলা নির্যাতনে রাজ্য এখন সেরা।
৪১। যাঁর প্রশাসনে পশ্চিমবঙ্গে অ্যাসিড আক্রমণের ঘটনাতেও সবার ওপরে।
৪২। যাঁর আমলে বেআইনি অস্ত্র কারখানার ঘাঁটি হয়ে উঠেছে পশ্চিমবঙ্গ। রাজারহাটের ছোট গাঁতি গ্রাম তার অন্যতম।
৪৩। কন্যাশ্রী/রূপশ্রী প্রকল্পে যাঁর আমলে মেয়েদের বাল্যবিবাহ রুখতে এবং পড়াশোনার শ্রীবৃদ্ধিতে এখনও পর্যন্ত খরচ হয়েছে ৩৫০০ কোটি টাকা, সেই তার নেতৃত্বাধীন রাজ্যেই বাল্যবিবাহের ঘটনা দেশের মধ্যে সবার ওপরে। টাইমস অব ইন্ডিয়ার তথ্য অনুযায়ী ২০১৭ সালে শুধুমাত্র মালদা জেলায় বাল্যবিবাহ হয়েছে ৪০.৭% নাবালিকার।
৪৪। যাঁর আমলে নারীধর্ষণে সেরা পশ্চিমবঙ্গ।
৪৫। যাঁর আমলে নাবালিকা মায়ের সংখ্যা এরাজ্যেই সবচেয়ে বেশি।
৪৬। যাঁর আমলে জালনোটের স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠেছে পশ্চিমবাঙ্গলা।
৪৭। যাঁর প্রশাসনে বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা কমেছে মাত্রাতিরিক্ত হারে। কারণ বিদেশি টুরিস্টরা পশ্চিমবঙ্গকে নিরাপদ মনে করেন না। বহু মহিলা টুরিস্ট এরাজ্যে নিগৃহীতা/ধর্ষিতা হয়েছেন।
৪৮। এরাজ্যে ডাকাতি এবং ছিনতাই যার আমলে সবচেয়ে বেশি।
৪৯। যার আমলে সরকারি কর্মচারীদের প্রাপ্য মহার্ঘভাতা দেওয়া হয় না। চাইলে তাদের তিনি কুত্তা বলেন।
৫০। রাজ্যে ঋণের পরিমাণ ভারত সেরা। সদ্যোজাত শিশুর ঋণ ৪৫ হাজার টাকা। ঋণের পরিমাণ মোট ৪,৩১, ৯২৮ কোটি টাকা।
৫১। যাঁর আমলে অধ্যক্ষ পেটানো, অধ্যাপক পেটানো, শিক্ষক পেটানো, ছাত্র পেটানো নিত্যদিনের ঘটনা।
৫২। যার আমলে কলেজগুলিতে ৭০% অধ্যাপকের আসন ফাঁকা।
৫৩। যাঁর রাজ্যে কম্পিউটার শিক্ষকদের মাহিনা মাথাপিছু দশহাজার টাকা করে চুরি করে রাজ্য সরকার।
৫৪। যাঁর আমলে ৩০ হাজার টাকা মাইনের শিক্ষক পদে ২০০০ টাকা মাইনের সিভিক টিচার নেওয়া হয়।
৫৫। যাঁর আমলে ৩০ হাজার টাকা মাইনের কনস্টেবল না নিয়ে ৬০০০ টাকার সিভিল পুলিশ নিয়োগ করা হয়।
৫৬। যার আমলে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পকেও চাকরি সংস্থানের হিসেবের অন্তর্ভুক্ত করে বলা হয় ৬ কোটি চাকরি দেওয়া হয়েছে।
৫৭। ধরনা যার মূলধন সেই তিনিই চাকরির দাবিকে এসএসসি পাস যুবক যুবতীদের ২৮ দিনের ধরনা, অনশন বন্ধ করে দিয়ে ১৪৪ ধারা জারি করেন ধরনার ওপর।
৫৮। যিনি সেনাবিদ্রোহে উস্কানি দেন।
৫৯। যিনি রাজ্য পুলিসের সঙ্গে কেন্দ্রীয় পুলিসের মারপিট বাঁধিয়ে দেন।
৬০। যাঁর আমলে হাসপাতাল আছে—যন্ত্র নেই, ডাক্তার নেই, নার্স নেই। নিজেই বলেন—ডাক্তার নেই, হাসপাতালে বেড বাড়বে না।
৬১। কন্যাশ্রী প্রকল্পের সাইকেল যাঁর আমলে হরির লুটের মতো বিলি করা হচ্ছে।
৬২। যাঁর আমলে ক্লাব পিছু ২ লক্ষ টাকা দেওয়া হচ্ছে ঘুষ হিসেবে। এ পর্যন্ত খরচ হয়েছে ৬০০ কোটি টাকা।
৬৩। যার আসলে কন্যাশ্রী প্রকল্প চালু হওয়ার পর স্কুলছুটের সংখ্যা বেড়েছে ৫০ শতাংশ।
৬৪। যাঁর আমলে স্কুলের মিড ডে মিল মাঝে মাঝেই বন্ধ থাকে। প্রতিদিন গড়ে ১০০০ স্কুলে মিড ডে মিলের খাবার দেওয়া হয় না।
৬৫। যাঁর বাড়িতে তাইল্যান্ডের নাগরিক বসবাস করেন।
৬৬। সেই বিদেশি নাগরিকের বিরুদ্ধে তাইল্যান্ড থেকে সোনা পাচারের অভিযোগ ওঠে। মিথ্যা পিতৃপরিচয় ধরা পড়ে।
৬৭। যিনি মাওবাদীদের সাহায্যে ক্ষমতায় এসেছেন। আর ক্ষমতায় এসেই তিনি মাওনেতা কিষানজীকে গুলি করে মারেন। ছত্রধর মাহাতো জেলে পচেন। রহস্যজনক মৃত্যু হয় শশধর মাহাতোর। সুচিত্রা মাহাতো ঘরবন্দি হয়ে থাকেন।
৬৮। গ্রামে গ্রামে চোলাই মদের জোগান বাড়িয়ে দেন যিনি।
৬৯। চোলাই মদ খেয়ে মৃত্যু হলে যিনি দু’লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেন।
৭০। যিনি জিএসটি প্রকল্পে উপকৃত হয়েও মিথ্যা কথা রটান।
৭১। যিনি সব জেনে সব বুঝেও নোটবন্দি নিয়ে মানুষকে ভুল তথ্য জানান।
৭২। যিনি নিজে যে অপরাধ করেন সেগুলিই অন্যদের নামে চাপান।
৭৩। যিনি সবচেয়ে বড়ো দেশদ্রোহী। কারণ তিনি সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করে দেশভাগের চক্রান্ত করেন।
৭৩। যিনি সব চেয়ে বড় অপরাধী, কারণ তার আমলেই পশ্চিমবঙ্গ অপরাধপ্রবণ রাজ্যের তকমা পেয়েছে।
৭৪। যিনি সব থেকে বড়ো বিশ্বাসঘাতক, কারণ তার কাছের মানুষদের কাছ থেকে উপকার নিয়ে তাদের ঠেলে ফেলে দিয়েছেন—যেমন মুকুল রায়, তাপস পাল, কুণাল ঘোষ, মদন মিত্র, সোনালি গুহ, কৃষ্ণা চক্রবর্তী ইত্যাদি।
৭৫। যিনি কালসর্প। যিনি স্বৈরাচারী। বিশ্বের প্রথম নারী হিটলার।
আরও আছে। তার গুণের শেষ নেই। পশ্চিমবঙ্গে সুশিক্ষিত, সচেতন, সংস্কৃতি সম্পন্ন ভোটারবৃন্দ—কথাগুলো একটু ভেবে দেখবেন। ভোট আপনার। অধিকার আপনার। কিন্তু একটু ভেবে ভোট দিন, কারণ নানা সামাজিক কারণের অজুহাতে ওই মহিলা প্রশাসক আপনার ভোটটা কিনতে চাইছেন, যা সংবিধান বিরুদ্ধ। উনি আপনাকে ঘুষ দিয়ে ভিখারি বানাতে চাইছেন। উন্নয়ন তার লক্ষ্য নয়। এটাও সংবিধান বিরুদ্ধ। আপনাকে ভিখারি বানানোর অধিকার তার নেই। ভাবুন, ভাবতে শিখুন। কারণ রাজ্যটা আপনার। এ রাজ্যের ভবিষ্যৎটা আপনার আগামী প্রজন্মেরও ভবিষ্যৎ।
সনাতন রায়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.