প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় চিনের সঙ্গে বিবাদ কিছুতেই যেন মিটছে না। ফের একবার নতুন করে লাদাখে সামরিক পরিকাঠামো গড়ে তুলছে লালচিন। ইতিমধ্যে আকসাই চিন ও দৌলত বেগ ওল্ডির কাছেও চিনা সেনার তৎপরতা লক্ষ্য করা গিয়েছে। আর তাই লাদাখের দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় নিরাপত্তা আরও মজবুত করার জন্য অতিরিক্ত ৩০ হাজার সেনা পাঠিয়েছে ভারত। শুধু তাই নয়, ভারতীয় সেনার শক্তি বাড়াতে ইগলা এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমও মোতায়েন করা হয়েছে সেখানে। এই সিস্টেমে কাঁধে নিয়েই স্থলপথে হোক কী আকাশ পথে শত্রুকে লক্ষ্য করে নিখুঁত নিশানায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করা যাবে।
সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, ‘‘লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার গুরুত্বপূর্ণ কিছু জায়গায় রাশিয়ায় তৈরি ইগলা এস এয়ার ডিফেন্স মিসাইল সিস্টেম সহ সেনা মোতায়েন করেছে ভারত। ভারতের আকাশসীমায় কোনও চিনা বিমান ঢুকে পড়লে তাকে প্রতিহত করবে এই মিসাইল।’’ ইগলা হল রাশিয়ার প্রযুক্তিতে তৈরি এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম। এই অস্ত্র কাঁধে নিয়েই চালাতে পারেন জওয়ানরা। ভারতীয় সেনা ও বায়ুসেনা এই এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ব্যবহার করে। সেনা ঘাঁটির কাছাকাছি শত্রুপক্ষের হেলিকপ্টার বা যুদ্ধবিমান চলে এলে খুব তাড়াতাড়ি প্রতিপক্ষকে ঠেকাতে ইগলা ব্যবহার করেন সেনারা। এই সিস্টেম কাঁধে নিয়েই নিখুঁতভাবে লক্ষ্যভেদ করা যায়। ধ্বংস করা যায় প্রতিপক্ষের ফাইটার জেট বা কপ্টারকে। স্থলপথে আসা শত্রুদেশের সেনার উপর যেমন হামলা চালানো যায়, তেমনই ভূমি থেকে আকাশেও মিসাইল ছোঁড়া যায়।
এছাড়া এর আরেকটি সুবিধা হল, জওয়ানরা কাঁধে করেই বয়ে নিয়ে যেতে পারেন এই এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম। ১৯৮১ সাল থেকে রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে রয়েছে ইগলা এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম। আসলে ইগলা–এস মিসাইল অনেকটাই উন্নত। এমনকী রাতের অন্ধকারেও শত্রুপক্ষের উপরে হামলা চালানো যায়।
সম্প্রতি ভারতের চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়াত চিনকে কড়া ভাষায় হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, লাদাখে যতই সেনা ও সামরিক বহর বাড়াক চিন, ভারতের এলাকায় ঢুকতে এলে যোগ্য জবাব দেবে ভারতীয় সেনা। শুধু মুখে বলা নয়, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ইতিমধ্যে কুইক রিঅ্যাকশন সারফেস টু এয়ার মিসাইল মোতায়েন করেছে ভারত। নামানো হয়েছে রাশিয়ার থেকে কেনা অত্যাধুনিক টি-৯০ ভীষ্ম ট্যাঙ্ক। রয়েছে আলট্রা-লাইট হাউইৎজার কামান। লালফৌজের গতিবিধির উপর নজরে রাখতে টহল দিচ্ছে ভারতের লড়াকু বিমান সুখোই-৩০, মিগ-২৯ ফাইটার জেটের নয়া ভার্সন, মিরাজ-২০০০ ফাইটার এয়ারক্রাফ্ট। ইতিমধ্যে চলে এসেছে রাফালেও। সব মিলিয়ে চিনকে শায়েস্তা করতে পুরোপুরি প্রস্তুত ভারত।