অনেকদিনের প্রতীক্ষিত জাতীয় শিক্ষানীতি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভায় পাশ হলাে। বুধবার ২৯ আগস্ট ২০২০, কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী প্রকাশ জাওড়েকর এবং মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী রমেশ পােখরিয়াল নিশঙ্ক ঘােষণা করেছেন নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০
ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (ইসরাে) প্রাক্তন প্রধান কে কস্তুরীরঙ্গনের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞদের একটি প্যানেল এই খসড়া তৈরি করে। বিদ্যালয় ও উচ্চশিক্ষা উভয়ের জন্য প্রস্তাবিত এই নতুন শিক্ষানীতির খসড়া গত বছর ২০১৯-এর জুন মাসে প্রকাশিত হয়েছে। খসড়া প্রকাশিত হওয়ার পর নানা মহল থেকে মতামত চাওয়া হয়। সেই মতামত দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল ২০১৯ সালের ৩১ জুলাই। ১৯৪৬ সালে প্রথম জাতীয় শিক্ষানীতির খসড়া তৈরি করেছিলেন তৎকালীন ইউজিসি চেয়ারপারসন ডি এস কোঠারীর নেতৃত্বে ১৭ সদস্যের একটি শিক্ষা কমিশন। এই কমিশনের পরামর্শের ভিত্তিতে ১৯৬৮ সালে দেশে প্রথম জাতীয় শিক্ষানীতি পাশ হয়েছিল। দ্বিতীয় জাতীয় শিক্ষানীতি চালু হয়েছিল ১৯৮৬ সালে, যা ১৯৯২ সালে একবার সংশােধিত হয়। উচ্চ শিক্ষা মন্ত্রকের সচিব অমিত খারে জানিয়েছেন, ১৯৮৬ সালের পর দেশে ৩৪ বছর বাদে আবার নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি চাল। হচ্ছে।
নতুন শিক্ষানীতি বিভিন্ন রাজনৈতিক মহলের মানুষের কাছে আনন্দের সঙ্গে গৃহীত ও প্রসংশিত হয়েছে। সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, মূলত ছাত্রের বিষয় নির্বাচনের স্বাধীনতা এবং কলা, বাণিজ্য ও বিজ্ঞান বিভাগের অবলুপ্তির সঙ্গে সেমিস্টার পদ্ধতি চালু অধ্যয়নের বিরতি ও নিজের মাতৃভাষা বা আঞ্চলিক ভাষায় শেখার বৃহত্তর সুযােগের দ্বারা একটি শিশুর জীবনকে আরও সহজ করে তােলার জন্য এটি প্রশংসিত হয়েছে। এত প্রশংসা সত্তেও আমরা গুটিকয়েক মহল থেকে এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখছি। মূলত রাষ্ট্রের চিরকালীন শত্রু বামপন্থী ও তার সহযােগীরা বিরােধিতায় মুখর। এরা কখনও গঠনমূলক মন্তব্য বা সমালােচনা জানে না। তা সে ভারত-পাকিস্তান বা ভারত-চীন বা কাশ্মীর রামমন্দির, যে কোনাে ব্যাপারেই হােক না কেন, তার সমালােচনা বা আন্দোলন সবই রাষ্ট্রবিরােধী। নতুন শিক্ষানীতির ক্ষেত্রেও তাদের একই মানসিকতা দেখা গেল। যেমন সিপিএম প্রধান সীতারাম ইয়েচুরি টুইট করেছেন : “Bypassing Parliament, ignoring opinion of state governments and rubbishing opinions of all stakeholder, Modi government is unilaterally destroying our education system.”সীতারাম ইয়েচুরি এটি একটি সর্বৈব মিথ্যা কথা বলেছেন। যদি জাতীয় শিক্ষানীতির প্রণয়নের প্রক্রিয়াগুলির দিকে চোখ রাখি তবে দেখতে পাই যে—২ জানুয়ারি ২০১৫, মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রণালয় এই নীতি প্রণয়নের কাজ শুরু করে। ৩৩টি বিষয়কে আলােচনার জন্য চিহ্নিত করা হয়েছিল। যেখানে অভিভাবক, শিক্ষার্থী, শিক্ষক, নির্বাচিত কর্মকর্তা, প্রশাসক, নাগরিক সমাজের সদস্য এবং নাগরিকদের সঙ্গে আড়াই লক্ষ গ্রাম পঞ্চায়েত জুড়ে গ্রাম শিক্ষা কমিটি আলােচনায় অংশ নিয়েছিল। ২৬ নভেম্বর, ২০১৫ পর্যন্ত ১ লক্ষ ৪২১টি গ্রাম, ৫১৫৫টি ব্লক, ১২০১ নগর স্থানীয় সংস্থা, ৫৭৩টি জেলা এবং ১১টি রাজ্য কীভাবে তারা দেশে শিক্ষার বিষয়টি দেখতে চান সে বিষয়ে তাদের সুপারিশগুলি নথিভুক্ত করেছিল। এছাড়াও ২৯০০০ এরও বেশি নাগরিক www.MyGov.in ওয়েবসাইটে সুপারিশ জমা দিয়েছেন এবং সিবিএসই-র পাের্টালের মাধ্যমে ১৫,০০০ এরও বেশি শিক্ষার্থী তাদের পরামর্শ জমা দিয়েছেন। দীর্ঘ ৫ বছরের চর্চা এবং পর্যায়ক্রমে তার পরিমার্জন দ্বারা বহুকাঙ্ক্ষিত শিক্ষানীতি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভায় পাশ হয়েছে।
যদি এটা যথেষ্ট গণতান্ত্রিক না হয় তবে কাকে আমরা গণতান্ত্রিক বলবাে? প্রকৃতপক্ষে তার ভয় এই যে শিক্ষাক্ষেত্রে বােধহয় বামেদের কট্টর জাতীয়তা বিরােধী প্রচারের ভাটা পড়বে। ভারতবর্ষের হাজার হাজার বছরের স্বর্ণোজ্জ্বল ইতিহাস ও তার সংস্কৃতি পাঠ্যপুস্তক থেকে ব্রাত্য থেকেছে কয়েক দশক ধরে। এখন মনে হয় এই রকম কোনাে ইতিহাসই ছিল না। যেন আমাদের পূর্বপুরুষরা এক অশিক্ষিত জাতি ছিলেন। কেবল মুসলমান হানাদার ও ব্রিটিশ উপনিবেশ গড়ে উঠাতেই ভারতবর্ষের শিক্ষার উন্নতি ঘটে। বামপন্থীদল, তাদের সহযােগী এবং বামপন্থী শিক্ষাসংস্কারকদের তাই হয়তাে এত গাত্রদাহ।
বাম-ইসলামপন্থীরা দাবি করেন কেন্দ্র জাতীয় শিক্ষানীতির মাধ্যমে সংস্কৃত যা কিনা একটি মৃত ভাষা’, পুনরুজ্জীবিত করতে চাইছে। ও সেই সঙ্গে যােগ’ যা কিনা ‘হিন্দু পৌরাণিক কাহিনিতে গভীরভাবে প্রতিষ্ঠিত একটি অনুশীলন মাত্র’তাকেও অন্তর্ভুক্ত করেছে। এক কথায় সরকার জাতীয় শিক্ষানীতির নামে শিক্ষার গৈরিকীকরণ করছে। এই ভয় খুব একটা ভিত্তিহীন নয়। জাতীয় শিক্ষানীতির খসড়াটি বাম-ইসলামপন্থী নিয়ন্ত্রণের লােহার খাঁচা থেকে প্রাচীন জ্ঞানকে মুক্ত করার অভিপ্রায়টি পুরােপুরি পরিষ্কার করেছে। তা যদি গৈরিকীকরণ হয় তবে তাই হােক। ভারতবর্ষের সঠিক শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করতে হলে সেখানে প্রাচীন গৌরবময় শিক্ষা ব্যবস্থার স্বাদ থাকতেই হবে। যেটা এতদিন ছিল না। স্বাধীনতার ৭৪ বছর পর পর্যন্ত বাম পন্থীরা সর্বত্র ব্রিটিশ উপনিবেশিক শিক্ষাব্যবস্থা চালু রেখেছে। বামপন্থীদের সুচতুর উদ্দেশ্য রবীন্দ্রনাথের লেখা থেকে সহজেই উপলব্ধি করতে পারি। রবীন্দ্রনাথ তাঁর ‘পথের সঞ্চয়’ প্রবন্ধে বলেছেন, “যে শিক্ষা স্বজাতির নানা লােকের নানা চেষ্টার দ্বারা নানা ভাবে চালিত হইতেছে তাহাকেই জাতীয় বলিতে পারি। স্বজাতীয়ের শাসনেই হউক আর বিজাতীয়ের শাসনে হউক, যখন কোনাে একটা বিশেষ শিক্ষাবিধি সমস্ত দেশকে একটা কোনাে ধ্রুব আদর্শে বাঁধিয়া ফেলিতে চায় তখন তাহা জাতীয় বলিতে পারি না— তাহা সাম্প্রদায়িক, অতএব জাতির পক্ষে তাহা সাংঘাতিক।”
শিক্ষানীতি দলিত সম্প্রদায় বা কোনাে গােষ্ঠী বিরােধী হতে পারে কি? শিক্ষানীতি সর্বস্তরে শিক্ষার ব্যাপক প্রসার ও তার মানের সঠিক মূল্যায়ন ঘটাতে পারে। এর অন্যথা অন্য কিছু নয়। কংগ্রেসে নেতা সূর্যেওয়ালা অভিযােগ করছেন যে, প্রস্তাবিত নীতিতে দলিতদের জন্য কিছুই নেই। আবার প্রাক্তন মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী শশী থারুর সন্দেহ করছেন নীতি রূপায়ণ আদতেও হবে কিনা! এছাড়া আরও কত ধরনের অযৌক্তিক যুক্তি বিভিন্ন সামাজিক যােগাযােগ মাধ্যমে বামপন্থীরা প্রচার করছে। যেমন দলিত উৎপীড়ন বাড়বে, অর্থনৈতিক ব্যবধানকে আরও প্রশস্ত করবে, ধনী বাড়ির ছেলে-মেয়েরাই কম্পিউটার ও তার প্রযুক্তিবিদ্যাতে পারদর্শী হয়ে উঠবে। প্রযুক্তি কি ভারতে কেবল ধনী ব্যক্তিরাই ব্যবহার করেন? বােধহয় আজ এটা একটা ভ্রান্ত ধারণায় পরিণত হয়েছে। যদি ডিসেম্বর ২০১৯-এর ট্রাইয়ের তথ্যের দিকে নজর দিই তবে দেখবাে ভারতবর্ষে শতকরা ৫৪.২৯ জন মানুষ ইন্টারনেট পরিষেবা ব্যবহার করেন এবং তার মধ্যে শতকরা ৯৬.৮ জন মানুষ মােবাইলে ইন্টারনেট পরিষেবা ব্যবহার করেন। আবার মােম্যাজিক টেকনােলজিসের ২০২০ মােবাইল ফোন সমীক্ষার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে ৮১ শতাংশ ভারতীয় ৪-জি ফোন ব্যবহার করেন। শুধু তাই নয়, বিশ্বের মধ্যে ভারত ৪-জি মােবাইল ডেটার দাম সর্বনিম্ন। ২০২১ সালের মধ্যে ৬০০ মিলিয়নেরও বেশি ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়তে চলেছে। এর একটি ছােট্ট অংশই ধনী।
বামপন্থীদের অকাট্য যুক্তি, দরিদ্র ঘরের শিশুরা বিদ্যালয়ে ইংরেজি শেখা থেকে বঞ্চিত হবে আর ধনী বাড়ির শিশুরা বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে সব কিছুই শিখবে। ১৯৮০-র দশকে জ্যোতি বসুর বামফ্রন্ট সরকার বিদ্যালয় গুলিতে শিক্ষার মাধ্যম হিসাবে মাতৃভাষাকে সমর্থন ও পরিচালনা করার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করেছিল। তার জন্য ইংরেজিকে চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত স্থগিত করেছিল। তার ফল কী ঘটেছিল তা আমরা জানি। তদুপরি, কেন্দ্র সরকার ইংরেজিকে ছাড়িয়ে বা একদম স্থগিত রাখার প্রস্তাব দিচ্ছে না, বরং পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত সাহিত্য ব্যতীত অন্য বিষয়গুলাে মাতৃভাষায় পড়ানাের প্রস্তাব। আবার বাম প্রচারকরা খুব সহজেই ভুলে যান বা ভুলিয়ে রাখতে চান যে শিক্ষার মাধ্যম হিসাবে ইংরেজি গ্রামীণ বা দারিদ্র্যসীমার নীচের শিশুদের জন্য বেদনাদায়ক এবং তার কারণে অনেক শিশুই অতি অল্প বয়সে বিদ্যালয় যাওয়া বন্ধ করে দেয়। মাতৃভাষাই শিক্ষার জন্য উপযুক্ত এবং ব্রিটিশ আমলের শিক্ষা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, “আমরা নিজের ভাষার রসনা দিয়া খাই না, আমাদের কলে করিয়া খাওয়ানাে হয়, তাতে আমাদের পেট ভর্তি করে, দেহপূর্তি করে
।”অর্থাৎ অন্য ভাষায় শিক্ষা গ্রহণ করার চেষ্টা করলে তা হৃদয়ঙ্গম করা মুশকিল। তাঁর ভাষায়, “বিশল্যকরণীর পরিচয় ঘটে না বলিয়া আস্ত গন্ধমাদন বহিতে হয়, ভাষা আয়ত্ত হয় না বলিয়া গােটা ইংরেজি বইমুখস্থ করা ছাড়া উপায় থাকে না।” বামৈস্লামিকদের বিষাক্ত মাকড়সার জালগুলি আজ শিক্ষাঙ্গনে ভীষণই অস্তিত্ব সংকটের মুখােমুখি। তাই তাদের এত অস্থিরতা এবং হতাশার বহিঃপ্রকাশ। জাতীয় পাঠক্রমের আসন্ন পরিবর্তনগুলি বামপন্থীদের কাছে তাই এত অসূয়ার কারণ। ক্ষয়িষ্ণু বামপন্থীদের এত চিৎকার ঠিক যেন প্রদীপ নিভে যাওয়ার আগে দপ করে জ্বলে ওঠার পরিস্থিতিকে মনে করিয়ে দেয়।।
শিক্ষা নিজের ভাষায় না হলে কী হতে পারে, তার একটি দৃষ্টান্তে রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, তখন ইউরােপের অন্ধকার যুগ, তা সত্ত্বেও আয়ারল্যান্ডেমিটমিট করে হলেও কিছুটা আলাে জ্বলছিল। তার মতে তার অন্যতম কারণ। মাতৃভাষায় শিক্ষা। সেখানে শিক্ষার্থীরা ল্যাটিন, গ্রিক ও হিব্রু শিখত বটে, কিন্তু সব শেখানাের ভাষা ছিল আইরিশ। বিপত্তি ঘটল তখনই, যখন আইরিশের বদলে ইংরেজিকে শিক্ষার বাহন করা হলাে। রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন, “ইহার ফল যেমন হওয়া উচিত, তাহাই হইল। মানসিক জড়তা সমস্ত দেশে ব্যাপ্ত হইয়া গেল। আইরিশভাষী ছেলেরা বুদ্ধি এবং জিজ্ঞাসা লইয়া বিদ্যালয়ে প্রবেশ করিল, আর বাহির হইল পঙ্গ মন এবং জ্ঞানের প্রতি বিতৃষ্ণা লইয়া। ইহার কারণ এ শিক্ষাপ্রণালী কলের প্রণালী, ইহাতে মন খাটে না, ছেলেরা তােতাপাখি বনিয়া যায়।” রবীন্দ্রনাথ লক্ষ্য করলেন একই কারণে ভারতবাসীদের অবস্থাও তথৈবচ। ভারতবর্ষে বিদ্যা বিস্তারের প্রধান বাধা হচ্ছে তার বাহন ইংরেজি।
জাতীয় শিক্ষানীতিতে প্রাচীন শিক্ষা পদ্ধতিতে কী ছিল তার একটি বর্ণনা আছে। হয়তাে অনেকেই জানি যে ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থায় চরক, সুশ্রত, আর্যভট্ট, বরাহমিহির, ভাস্করাচার্য, ব্রহ্মগুপ্ত, চাণক্য, চক্রপাণি দত্ত, মাধব, পাণিনি, পতঞ্জলি, নাগার্জুন, গৌতম, পিঙ্গলাচার্য, শঙ্করদেব, মৈত্রেয়, গার্গী বিদ্বানদের মতাে কত বিদ্বানই না জন্মেছিলেন। যাঁরা গণিত, জ্যোতির্বিজ্ঞান, ধাতুবিদ্যা, চিকিৎসা বিজ্ঞান এবং সার্জারি, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, আর্কিটেকচার, শিপ বিল্ডিং এবং নেভিগেশন, যােগ, চারুকলা, দাবা এবং আরও অনেক ক্ষেত্রে বিশ্ব জ্ঞানভাণ্ডারে চূড়ান্ত অবদান রেখেছিলেন। যার দরুন বিশ্বব্যাপী ভারতীয় সংস্কৃতি ও দর্শনের গভীর প্রভাব রয়েছে। বিশ্ব ঐতিহ্যের এই সমৃদ্ধ ভাণ্ডারগুলি কেবল শুধুই উত্তরসূরিদের জন্য লালিত ও সংরক্ষিত নয়, তবে তা গবেষণার দ্বারা আরও উন্নত এবং আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে নতুনভাবে ব্যবহার করতে হবে। পৃথিবীর অনেক দেশেই যেমন শুধু জার্মানিতেই ১৪টির বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে সংস্কৃত ভাষা পড়ানাে হচ্ছে। যা আমাদের অনেকের কাছে। বিস্ময় সৃষ্টি করে। বেদ, উপনিষদ নিয়ে কত দেশ আজ গবেষণা করছে। আমাদের প্রাচীন সাহিত্য যা আজ আমাদের কাছেই ব্রাত্য হয়ে আছে। এর সম্পূর্ণ শ্রেয় বামপন্থীদের । আমরা যাই করি না কেন চাকুরিজীবী হয়ে থাকতে হবে যদি না সময়মতাে সঠিক শিক্ষাপদ্ধতি চালু না হয়। এ প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ‘শিক্ষার হেরফের শীর্ষক প্রবন্ধে বলেছেন, “আমরা যে শিক্ষা আজন্মকাল যাপন করি, সে শিক্ষা কেবল যে আমাদিগকে কেরনিগিরি অথবা কোনাে একটি ব্যবসায়ের উপযােগী করে মাত্র।”
বামপন্থীরা সর্বক্ষেত্রে শুধুই বিরােধিতাই করতে জানে; বােধহয় ওদের এটা জন্মগত অধিকার, তা না করলে ভারতের মতাে এত বড়াে বাজার কী করে চীনের মতাে দেশ আয়ত্তে রাখবে। মিথ্যে মায়াকান্না চিরকালই ওদের ধর্ম। দিনে শিক্ষা বা চাষিবা শ্রমিকের জন্য হাহাকারের মায়াজাল আর রাতে বিদেশি পয়সাতে ফুর্তি। আজ পর্যন্ত সৃষ্টিশীল কোনাে কর্ম তাদের নেই। আজ আর সে ভারত নেই যে ভাম(বাম) পন্থীদের মায়াকান্নায় পা মিলিয়ে চলবে। এটা সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাসের নতুন ভারত। হে চিরশত্রু! তােমরা যতই কুম্বীরাশ্রু ঝরাও তােমাদের দেশবাসী আর ক্ষমা করবে না।।
অনুপম বেরা
(লেখক সহকারী অধ্যাপক, নেতাজী সুভাষ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ)