করোনা রোগীদের বিলে দেদার কারচুপি, মহামারীতেও ২ কোটি বাড়তি মুনাফা ১৭ হাসপাতালের!

মহামারী আবহেও বাড়তি মুনাফার লক্ষ্য থেকে বিন্দুমাত্র সরে আসেনি বেসরকারি হাসপাতালগুলিকরোনা (Coronavirus) চিকিৎসায় কোনও বাড়তি টাকা নেওয়া যাবে না, প্রশাসনের এই নির্দেশ থাকলেও, তা নামমাত্র। বাস্তব চিত্রটা আলাদা। চিকিৎসার নামে বহু রোগীর উপর মোটা অঙ্কের বিল চাপিয়ে প্রায় ২ কোটি টাকা বাড়তি লাভ করে কাঠগড়ায় মহারাষ্ট্রের ১৭টি বেসরকারি হাসপাতাল। অডিট রিপোর্টে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে আসার পরই থানে পুরনিগমের তরফে হাসপাতালগুলিকে বাড়তি টাকা ফেরতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মহারাষ্ট্রের (Maharashtra) করোনা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হওয়ায় গত মে মাসে উদ্ধব ঠাকরে প্রশাসন চিকিৎসায় বাড়তি উদ্যোগ নেয়। সেখানকার বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে ৮০ শতাংশ বেড কোভিড রোগীদের জন্য সংরক্ষিত রাখার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। বেঁধে দেওয়া হয় খরচের উর্ধ্বসীমাও। আইসোলেশনে দিনে ৪ হাজার টাকা, ICU-তে ৭৫০০ এবং ভেন্টিলেশনে কোনও রোগীকে রাখলে দিনে ৯ হাজার টাকার বেশি নেওয়া যাবে না, এই মর্মে নির্দেশিকাও জারি হয়। কিন্তু প্রশাসনিক সেই নির্দেশ স্রেফ নির্দেশের স্তরেই রয়েছে, প্রয়োগ কিছু হয়নি, তারই প্রমাণ ১৭টি বেসরকারি হাসপাতালে কোটি কোটি টাকার মুনাফার অঙ্ক।


জুন মাস থেকে এ নিয়ে ভুরি ভুরি অভিযোগ পড়ছিল প্রশাসনের কাছে। তা খতিয়ে দেখতে গত জুলাই-আগস্ট মাসে ৮টি অডিট টিম তৈরি হয়। তারাই বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালের আয়-ব্যয়ের হদিশ নিতে গিয়ে বুঝেত পারেন, করোনা চিকিৎসার নামে কারচুপি করে বহু রোগীর উপরেই চাপানো হয়েছে মোটা অঙ্কের বিল। অডিটের হিসেব বলছে, ওই ১৭টি হাসপাতালে মোট ৪১০৬ জন করোনা রোগীর চিকিৎসা হয়েছে। তার মধ্যে অর্ধেকেরও কম অর্থাৎ ১৩৬২টি বিলেই কারচুপি করে বাড়তি টাকা নেওয়া হয়েছে। সেই অঙ্ক ১.৮২ কোটি টাকা!


এই রিপোর্ট সামনে আসায় স্বাভাবিকভাবেই রোগীরা ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন
। এমন কঠিন পরিস্থিতিতেও মানুষের প্রাণ বাঁচানোর বিনিময়ে বাড়তি মুনাফার হিসেব কষেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, এই অভিযোগ তুলে হাসপাতালের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তাঁরা। তবে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে থানে মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন। ১৭টি বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকেই কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যার থেকে যত বাড়তি টাকা নেওয়া হয়েছে, কড়ায়-গন্ডায় তা ফেরৎ দিতে হবে অবিলম্বে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.