একাধিক বৈঠক ব্যর্থ হয়েছে চিনের সঙ্গে। পূর্ব লাদাখের পুরোনো অবস্থান থেকে সরেনি চিনা সেনা। যথেষ্ট ক্ষুব্ধ এই প্রেক্ষিতেই ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করলেন চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়াত। সোমবার তিনি বলেন যদি বৈঠক ব্যর্থ হয় তবে ভারতের হাতে সামরিক পথ খোলা আছে। সেই পথেই চিনা সেনার আগ্রাসনের উপযুক্ত জবাব দেবে ভারত।
এদিন রাওয়াত দাবি করেন কূটনৈতিক স্তরে ও সামরিক স্তরে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে ভারত। কিন্তু কোনও ক্ষেত্রেই এখনও পর্যন্ত তেমন ফল আসেনি। ষষ্ঠ দফার বৈঠকের পরেও সমাধানসূত্র অধরা ভারতের কাছে। ফলে এবার অন্য পথেও হাঁটতে পারে ভারতীয় সেনা, তেমনই ইঙ্গিত দিলেন প্রাক্তন সেনা প্রধান। এদিন সিডিএস বলেন যদি বৈঠকের ফলই ব্যর্থ হয়, তবে অন্য রাস্তাও খোলা রয়েছে চিনা সেনার আগ্রাসনের জবাব হিসেবে।
তাহলে কি সেই সংঘাতের রাস্তায় হাঁটার কথা বলতে চেয়েছেন বিপিন রাওয়াত, প্রশ্ন ওয়াকিবহাল মহলের। এপ্রিল মে মাস থেকে পূর্ব লাদাখে ভারত ও চিনের টানাপোড়েন লেগে রয়েছে। ফিঙ্গারস এলাকা, গালওয়ান ভ্যালি, হট স্প্রিং ও কোনগ্রুং নালা এলাকার দখলদারি নিয়ে দুই দেশের সংঘাত চলছেই।
এদিকে, দুই দেশের সেনাই সঠিক পরিমাণে পিছনে সরুক. চিনের এই দাবি কার্যত উড়িয়ে দিয়েছে নয়াদিল্লি। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন পূর্ব লাদাখকে কেন্দ্র করে যে সংঘাত শুরু হয়েছে, তার রেশ টেনে নিয়ে যাচ্ছে চিন ইচ্ছাকৃতভাবে। একদিকে ভারতকে বিভিন্ন বৈঠকের নামে ব্যস্ত রাখা, অন্যদিকে সুকৌশলে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় সেনা সাজিয়ে যাওয়া। আপাতত এই খেলাতেই মেতেছে চিন।
অন্যদিকে কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে চিন এখন বৈঠক বৈঠক খেলা খেলছে। অনেকটা পিং পং বলের মতো কখনও সামরিক, কখনও কূটনৈতিক স্তরের বৈঠক করছে তারা। কিন্তু নিজেদের অবস্থান থেকে যে তারা সরবে না, সেকথা আগে থেকেই স্থির করে নিয়েছে বেজিং।
একের পর এক এলাকায় সেনা সাজাচ্ছে চিন।কখনও উত্তরাখন্ড, কখনও অরুণাচল প্রদেশ, আবার কখনও পূর্ব লাদাখ। ভারতীয় সীমান্তে বিভিন্ন জায়গা থেকে অনধিকার প্রবেশে মরিয়া চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে চিনা সেনা।
শনিবার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল, চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়াত, তিন সেনার প্রধান এমএম নারাভানে, অ্যাডমিরাল করমবীর সিং ও এয়ার চিফ মার্শাল বি কে এস বাদুরিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। দু ঘন্টা ধরে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয় এদিন। সূত্রের খবর এই বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
গত সপ্তাহেই সেনা প্রধান নারাভানে সেনাবাহিনীর সাতজন শীর্ষ কমান্ডারদের নিয়ে বৈঠক করেন। খতিয়ে দেখেন নর্দার্ন ও ওয়েস্টার্ন ফ্রন্টের প্রস্তুতি। চিনা বায়ুসেনার সাতটি ঘাঁটির ওপর কড়া নজর রেখেছে ভারতীয় সেনা।