শিলং: যে সুন্দর গ্রামটি এতদিন কোনো রাজনীতিবিদ বা বুদ্ধিজীবীদের নজরে পড়তে পারেনি‚ মনে হচ্ছে অবশেষে সেই “কংথং” গ্রামের ভাগ্য বদলাতে চলেছে।
এখন কংথং গ্রামের একজন তথাকথিত বহিরাগত রক্ষাকর্তা আছেন।
রাজ্যসভার সদস্য রাকেশ সিনহা, স্বাধীনতা দিবসের দিন এই গ্রামটিকে “দত্তক” নেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন। তিনি এই বিষয়ে লিখিত প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
তিনি ঘোষণা করেছিলেন “১৫ ই আগস্ট থেকে কোংথং আমার গ্রাম”। তিনি কথা দিয়েছেন যে গ্রামটিকে “মডেল ভিলেজ এবং ট্যুরিজম সেন্টারে” রূপান্তরিত করবেন।
এর থেকে বোঝা যায় যে, বিজেপি সাংসদ এই অনিন্দ্যসুন্দর খাসি গ্রামটির দ্রুত পরিকাঠামোগত
উন্নয়নের লক্ষ্যে তাঁর এমপিএলএডি তহবিলের অর্থ ব্যবহার করবেন।
দ্য শিলং টাইমসকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে এই সাংসদ তথা দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক বলেছেন যে গ্রামবাসীরা আরো উন্নত জীবনযাত্রার অধিকারী। এছাড়াও তিনি কংথংয়ের সার্বিক উন্নতির লক্ষ্যে দিল্লি ও শিলংয়ের সরকারের থেকে অতিরিক্ত সাহায্য জোগাড় করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
আদতে বিহারের সন্তান ও বর্তমানে দিল্লীর বাসিন্দা এই সাংসদ কোনো রাখঢাক না রেখেই বলেন যে কংথংয়ের মতো গ্রামগুলি রাজ্যের উদাসীনতার কারণেই অন্ধকারে রয়ে গেছে। তিনি জানান‚ “যা আমাকে বিষ্মিত করেছে তা হলো আমাদের মহান সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সম্পর্কে মেঘালয়ের একাডেমিক, বুদ্ধিবৃত্তিক এবং রাজনৈতিক শ্রেণীর সচেতনতার অভাব।”
“মহান ঐতিহ্য” সম্পর্কে কথাবার্তা বলা ভাল” তবে এরই সাথে মানুষের জীবনকে জর্জরিত বিষয়গুলিকেও “অবহেলা” করা উচিত নয়”‚ তিনি বলেছিলেন।
প্রসঙ্গত বলা যেতে পারে যে, সিনহা গত বছর রাজ্যসভায় বক্তৃতা করার সময় স্বল্প পরিচিত একটি “সুন্দর গ্রাম” সম্পর্কে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি বলেন “সাংসদরা যখন কংথংয়ের কথা শুনলেন, তখন তারা স্রেফ “হতবাক” হয়ে গিয়েছিলেন।”
এক বছর আগে কংথংয়ের তাঁর প্রথম সফরের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন যে এটি ছিল “একটি স্মরণীয় ভ্রমণ।” গ্রামবাসীদের “নির্দোষতা, সরলতা এবং সন্তুষ্ট ভাব” দ্বারা প্রভাবিত হয়ে সিনহা জায়গাটির ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য নিজের তরফ থেকে যথাসম্ভব চেষ্টা করার ব্যাপারে মনস্থির করে ফেলেছিলেন। তিনি আশা প্রকাশ করেছিলেন যে “এই গ্রামকে পশ্চাদপদতার চক্র থেকে তুলে আনতে” রাজ্য সরকার তাঁকে সহযোগিতা করবে।
তাঁর ভাবনায় আছে সেই বিষয়গুলো যা বিকাশকে থামিয়ে দেয়। সিনহার মতে এই রাজ্যটি মূলত তিনটি কারণ দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে: “দুর্নীতি, আমলাতন্ত্র এবং দালালী “।
তিনি এই সবকিছুই মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমাকে জানিয়েছেন‚ এই আশায় যে তিনি এগুলোকে নির্মূলের ব্যবস্থা করবেন।
৫৬ বছর বয়সের আরএসএস কর্মকর্তা এই বিধায়ক উদ্বেগের সাথে জানিয়েছেন যে‚ মেঘালয়ের বিকাশ হচ্ছে না উন্নয়নকে বাঁধা দেয় ও অরাজকতা সৃষ্টি করে এমন কিছু কারণের জন্য। সেগুলোকে সঠিক ও কঠোরভাবে মোকাবিলা করা হয়নি।”। তিনি আরো বলেন যে উপজাতি ও অ-উপজাতির মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আপোষের মাধ্যমে মীমাংসা করা উচিৎ।”