অতিমারী ও লকডাউনের ধাক্কায় চাকরি হারিয়েছেন বহু মানুষ। দেশ জুড়ে বেকারত্ব বেড়েছে স্বাভাবিকভাবেই। কবে সব ঠিক হবে, এখনও দিশা দেখা যায়নি। রোজগার হারিয়ে হাহাকার তৈরি হয়েছে দেশের বহু পরিবারে। এবার সেসব পরিবারের কথা মাথায় রেখেই নতুন উদ্যোগ নিল কেন্দ্র।
ইএসআইসি (ESIC) প্রকল্পের মাধ্যমে ৪১ লক্ষ শিল্প শ্রমিককে এবার বিশেষ সুবিধা দেওয়ার জন্য নিয়ম শিথিল করল কেন্দ্রীয় সরকার। বৃহস্পতিবার একথা ঘোষণা করা হয়েছে। জানানো হয়েছে, যারা চাকরি হারিয়েছেন, তাঁরা তিনমাস বেতনের ৫০ শতাংশ করে বেকারভাতা হিসেবে পাবেন।
কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রী সন্তোষ গাঙ্গওয়ারের নেতৃত্বে এম্পলয়ি স্টেট ইনস্যুরেন্স কর্পোরেশন (ESIC) বোর্ড এই প্রস্তাবে অনুমোদন করেছে। এর ফলে প্রায় ৪১ লক্ষ শ্রমিক আর্থিকভাবে উপকৃত হবেন। ESIC শ্রম মন্ত্রকের অধীনে একটি সামাজিক সুরক্ষা প্রতিষ্ঠান।
ইসিআইসি বোর্ডের অমরজিৎ কৌর জানিয়েছেন যে, এর আওতায় ইএসআইসির আওতাভুক্ত শ্রমিকরা তাঁদের বেতনের ৫০% নগদ বেকার ভাতা (ইএসআইসি স্কিম) হিসেবে পেতে পারেন।
এই স্কিমে স্বাভাবিকভাএই স্বস্তির হাওয়া শিল্প শ্রমিকদের। লকডাউনে থেমে গিয়েছে বহু কারখানার কাজ। ফলে, চাকরি গিয়েছে অনেকের। বিভিন্ন সংগঠন থেকে নিয়ম শিথিল করার দাবি উঠেছিল। দু’মাস আগে নীতি আয়োগও নিয়ম শিথিল করার আবেদন জানায়।
লকডাউনের শুরু থেকে অর্থাৎ ২৪ মার্চ থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদকালের মধ্যে তিন মাসের জন্য এই ভাতা পাওয়া যাবে। অন্তত দু’বছর ESIC-র আওতায় থাকতে হবে শ্রমিকদের। এই দু বছর হল ২০১৮-র ১ এপ্রিল থেকে ২০২০-র ৩১ মার্চ পর্যন্ত। গত বছরের ১ অক্টোবর থেকে ২০২০-র ৩১ মার্চের মধ্যে এই শ্রমিকদের অন্তত ৭৮ দিনের কাজের রেকর্ড থাকতে হবে।
শিল্পকর্মীরা যাঁরা প্রতি মাসে ২১হাজার বা তার চেয়ে কম বেতন পান তাঁদের ESIC প্রকল্পের আওতাভুক্ত করা হয়েছে। এই ধরনের কর্মচারীদের প্রতি মাসের বেতনের একটি অংশ কেটে নেওয়া হয়, যা ইএসআইসির মেডিক্যাল বেনিফিট হিসাবে জমা হয়। শ্রমিকদের বেতন থেকে প্রতি মাসে ০.৭৫ শতাংশ এবং নিয়োগকারীর কাছ থেকে প্রতি মাসে ৩.২৫ শতাংশ ইএসআইসি জমা হয়।
বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এখন নতুন নিয়মে শ্রমিকরা নিজেদের টাকার শতাংশ সরাসরি ইএসআইসি-এর শাখা অফিস থেকে তুলে নিতে পারবেন এবং সেটি শাখা অফিস থেকেই নিয়োগকর্তার থেকে যাচাই করা হবে। এর পরে, সব খতিয়ে দেখে সরাসরি শ্রমিকদের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হবে।